ফ্রান্সে মুসলিমরা রোষানলে পড়তে পারে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের ছয়টি এলাকায় একযোগে সন্ত্রাসী হামলার পর ফরাসি জনগণ এবং বিশ্বব্যাপী তাদের সমর্থকরা শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছেন।
শুক্রবার দৃশ্যত ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের বিস্ফোরণ ও বন্দুকযুদ্ধে প্যারিসে ১২৯ জনের মৃত্যু এবং দুই শতাধিক লোক হয়েছে।
অনেক ফরাসি নাগরিক নিহতদের সম্মান জানাতে আক্রান্ত স্থানগুলোতে ছুটে যাচ্ছেন। শোকাহত অনেকে আবার উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে এ ঘটনার জের ধরে ফ্রান্সের মুসলিমদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
ক্যানেল সেন্ট মার্টিনের পাশের এলাকায় বন্দুকধারীরা শুক্রবার রাতে ভীড়ে ঠাসা কয়েকটি রেস্তোঁরা ও বারে গুলি চালায়। পরদিন শনিবার এখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সমবেত হন বহু তরুণ ফরাসি।
এখানে বহু লোক ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এদের একজন ১৮ বছর বয়সী ফরাসি মুসলিম রায়ান আবিচৌ। তারা দাদা-দাদি এসেছিলেন তিউনিসিয়া থেকে।
তথ্যবিজ্ঞানের ছাত্র রায়ান বলেন, সর্বশেষ এই হামলার পর ফরাসি সমাজের একাংশ মুসলিমদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। এদের মধ্যে তার মত সেক্যুলাররাও থাকবে। অথচ যা ঘটেছে তাতে মুসলিমরাও আতঙ্কিত এবং মর্মাহত।
‘মুসলমানদের জন্য ফ্রান্স এখন জটিল হয়ে উঠবে কারণ কিছু লোক বলবে যে এটা তাদের দোষ। কিন্তু আমি মনে করি এটাকে এভাবে জটিল করা ঠিক হবে না কারণ এভাবে সংযোগস্থাপন ভুল।’
তার ১৭ বছর বয়সী বান্ধবী ম্যাথিলডে বলেন, ‘তারা যেভাবে মুসলিমদের সন্ত্রাসী বলছে তা লজ্জাজনক।’
এখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন জেভিয়ার ভঁদেপেরেজ।
তারা বাবা মা এসেছেন স্পেন থেকে।
তিনি বলছিলেন, গত জানুয়ারিতে শার্লি এবদোতে হামলার সময় একটি ইহুদি সুপারমার্কেটেও হামলা হয়। কিন্তু এবারের হামলা ছিল নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষের ওপর।
তিনি বলেন, ‘তারা শুক্রবার ফরাসি তরুণদের টার্গের করেছিল। তারা এভাবে মানুষ মেরে বিশ্বকে শঙ্কিত করতে চায়। কাজেই এ ধরনের হামলা এড়ানো কঠিন।’
তিনিও আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে এ হামলার ফলে ইউরোপজুড়ে অভিবাসন বিরোধী মনোভাব বাড়বে এবং ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থী দলগুলো এই হামলাকে কাজে লাগাতে চাইবে।
ভঁদেপেরেজ বলেন, ‘এই ধরনের কাজের ফলে সিরিয়া থেকে আসা লোকদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ বাড়বে। উগ্র ডানপন্থী দলগুলো বলবে যে এভাবে এসব দেশের লোকদের আশ্রয় দেয়া যাবে না। এখন বিদ্বেষের মাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে।’
‘আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। এটা ইসলাম অথবা মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব করে না। এটা হচ্ছে নেহায়েতই বিপথগামিতা।’
সূত্র; এনপিআর
১৫ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ