‘কয়েকশ’ প্রাণ বাঁচিয়ে শহীদ হলেন আমার বাবা’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিজের চোখের সামনে প্রথম বিস্ফোরণটি হতে দেখেন আদেল টার্মোস। দেখেন আইএসের দ্বিতীয় আত্মঘাতী বিস্ফোরক তৈরি পরের আঘাতের জন্য। সেই মুহূর্তটায় স্ত্রী, ছোট ছোট ছেলেমেয়ে, পরিবার-পরিজন কারো কথা মাথায় আসেনি টার্মোসের। কয়েকশ’ প্রাণ বাঁচিয়ে শহীদ হলেন আমার বাবা। বাবাহীন শিশুদের এমনই আক্ষেপ।
সেকেন্ড পেরোতে না পেরোতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। একবার শেষ চেষ্টা করবেন, তাতে আর যা হয় হোক। যেই ভাবা সেই কাজ। আত্মঘাতী বিস্ফোরকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন টার্মোস।
মৃত্যুদূতকে মাটিতে ফেলে একা লড়াইয়ে থাকেন দুই সন্তানের বাবা। তাতে নিঃসন্দেহে বেঁচে যায় কয়েকশ প্রাণ। রুখে দেয়া গেছে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ। তবে মৃত্যুদূত ছেড়ে দেয়নি নিরীহ এআ বাবাকে। ঝাঁঝরা শরীরটা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।
প্যারিসে আঘাত হানার ঠিক আগেই বেইরুটে হামলা চালায় ইসলামিক স্টেট। আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ যায় ৩৭ জনের। গুরুতর আহত হন ২০০ জন। হতাহতের সংখ্যাটা আরো ভয়াবহ হতে দেননি আদেল টার্মোস। নিজের জীবন দিয়ে রক্ষা করেছেন অগুনতি প্রাণ।
এই বাবার আত্মত্যাগে অনাথ হয়নি বহু কচিকাঁচা। কিন্তু টার্মোসের সন্তানদের চোখ আজ খুঁজে বেড়াচ্ছে তাদের বাবাকে। তারা হয়তো বুঝতেও পারছে না, বাবা আর ফিরবেন না।
এলি ফেয়ারস নামে এক স্থানীয় ব্লগার পাবলিক রেডিও ইন্টারন্যাশনালে তুলে ধরেছেন টার্মোসের কথা। তার এই আত্মত্যাগে এলাকার মানুষ কৃতজ্ঞ। টালুসার রাস্তা দিয়ে বীর মর্যাদায় স্থানীয়রা শেষযাত্রায় সম্মান জানালেন টার্মোসকে।
প্যারিসে হামলার ঘটনায় যখন বিশ্বজুড়ে তত্পরতা শুরু হয়েছে, তখনই বেইরুটের এ ঘটনা অন্তরালে থেকে যাওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় বৈষম্যের অভিযোগে ঝড় উঠেছে।
লেবাননে গত ৩০ মাসে ১৮টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া
১৬ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম
�