বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫, ০১:০৬:৩২

অনেককে বাঁচাতে নিজের জীবন দিলেন সেই আদেল

অনেককে বাঁচাতে নিজের জীবন দিলেন সেই আদেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এ পৃথিবীতে সবাই বাঁচতে চায়। এ জন্য মানুষ যা কিছু করার তাই করে। কিন্তু এর ব্যতিক্রম কিছু করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেলেন ৩২ বছর বয়স্ক আদেল টেরমস। প্যারিস আক্রমণের এক দিন আগে, গত বৃহস্পতিবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীতে দুটি আত্মঘাতী হামলায় ৪১ জন নিহত এবং ২০০ জন আহত হন। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ বাঁচিয়ে দেন অনেক জীবন। আদেল টেরমস তার বাচ্চা মেয়েকে নিয়ে বাজার করতে বের হয়েছিলেন। তখন তিনি একটি বিস্ফোরণের আওয়াজ পান। হঠাৎ দেখতে পান একজন লোক আত্মঘাতী বোমারুদের মত বিস্ফোরক বেল্ট পরে তাদের দিকে এগিয়ে আসছেন। আদেল টেরমস লোকটির উপর ঝাঁপিয়ে পরে তাকে মাটিতে ফেলে দেন। কিন্তু তখন আত্মঘাতী বোমারুর বেল্ট বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে ৩২ বছর বয়স্ক আদেল টেরমস মারা যান। কিন্তু, তিনি বাঁচিয়ে দেন তার মেয়েসহ আরো অনেক পথচারীর জীবন। ইরাক এবং সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠি ইসলামিক স্টেট হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে বিবৃতি দেয়। বৈরুতের যে এলাকায় আক্রমণটি হয়, সেই বুর্জ আল-বারাজনেহকে লেবানিস রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে ধারণা করা হয়। হিজবুল্লাহর সামরিক বিভাগ প্রতিবেশী দেশ সিরিয়াতে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আদেল টেরমসের আত্মত্যাগের খবর স্থানীয় পত্রপত্রিকায় পরের দিনই প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু বহির্বিশ্বের গণমাধ্যম প্যারিস হামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আদেল টেরমসের খবর কয়েক দিন পরে প্রকাশ পায়। লেবানিস ডাক্তার এবং ব্লগার এলি ফারেস আমেরিকার রেডিও স্টেশন পিআরআইকে বলেন, ‘অনেক পরিবার, শত শত মানুষ জীবিত আছেন তার আত্মত্যাগের কারণে’। ফারেস তার ব্লগে আদেল টেরমস সম্পর্কে লেখেন, যেটা দিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্যারিস এবং বৈরুতে হামালার ঘটনা নিয়ে ভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়ার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘যখন আমার দেশের মানুষ মারা যান, তখন অন্য কোনো দেশ তাদের স্থাপনাগুলো আমার দেশের পতাকার রংয়ে সাজায় না’। আদেল টেরমসের মরদেহ গত শুক্রবার সম্মানের সঙ্গে দক্ষিণ লেবাননে তার গ্রাম তালুসায় দাফন দেওয়া হয়। টেরমসের কফিন হিজবুল্লাহর পতাকায় মুড়ে দেওয়া হয়। জানাজার আগে কফিন গ্রামের রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারী লোকজন স্লোগান দেয়। সূত্র: বিবিসি ১৯ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে