আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চার বছর আগে ইরাকের মসুলে অপহৃত ৩৯ ভারতীয় আর বেঁচে নেই। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় এ কথা জানালেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। মসুলের একটি গণকবর থেকে উদ্ধার হয়েছে ওই ভারতীয়দের দেহাবশেষ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই ৩৮ জনের দেহের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছে। বাকি মরদেহটির ডিএনএ-র সঙ্গে ৭০ শতাংশ মিল পাওয়া গিয়েছে।
সুষমা জানিয়েছেন, সোমবারই এই খবর জানতে পেরেছে ভারত। এ দিন তিনি বলেন, ‘নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়ার পরেই মৃতদের পরিবারকে এ কথা জানাতে চেয়েছি আমরা।’
ওই ৩৯ জনের বেশির ভাগই পাঞ্জাবের বাসিন্দা। এ ছাড়া রয়েছেন হরিয়ানা, বিহার, হিমাচল প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাও। ২০১৪ সালে মসুলের দখল নেয়ার পর থেকেই প্রায় ১০ হাজার ভারতীয় ইরাক ছাড়তে শুরু করেন।
সে সময়ই অগণিত মানুষদের বন্দি করে আইএস জঙ্গিরা। তার মধ্যে ৪০ জন ভারতীয়ও ছিল। কাজের খোঁজেই ইরাকে গিয়েছিলেন তারা। মসুলের দখল নেয়ার পর তাদের অপহরণ করে জঙ্গিরা। তাদের মধ্যেই থেকেই নাম-পরিচয় গোপন করে একজন ভারতীয় পালিয়ে আসতে পারেন।
গত বছরের জুলাইয়ে সংসদে সুষমা জানিয়েছিলেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই যে যাতে বোঝা যায় ওই ভারতীয়দের খুন করেছে আইএস জঙ্গিরা। সুষমার ঘোষণার পরই সরকার পক্ষের বিরুদ্ধে সরব হন বিরোধী নেতারা।
মৃতদের পরিবারকে মিথ্যে আশা দেয়া ছাড়াও দেশকে ভুল পথে চালিত করেছে সরকার, এমন অভিযোগ করে কংগ্রেস। সেই প্রসঙ্গ তুলেই কংগ্রেসের গোলাম নবি আজাদের মন্তব্য, ‘গত বছরই সংসদে সুষমা জানিয়েছিলেন ওই ভারতীয়রা বেঁচে আছেন।’
তবে সুষমার দাবি, ‘আমরা কাউকেই ভুল পথে চালিত করিনি। আমরা এটাই বলেছিলাম, প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত কাউকেই মৃত বলে ঘোষণা করা যায় না।’
শুধুমাত্র কংগ্রেসই নয়, এ দিনের ঘোষণায় মুখ খুলেছে মনজিন্দর সিং-এর বোন গুরপিন্দর কউর। ওই ৩৯ জনের মধ্যে রয়েছে মনজিন্দরের দেহাবশেষও। সুষমার সঙ্গে এ নিয়ে কথাও বলতে চেয়েছিলেন গুরপিন্দর। তবে এ দিন টেলিভিশনের পর্দায় সুষমার ঘোষণা শুনে তাতে শোকে ভেঙে পড়েছেন তিনি। গুরপিন্দর বলেন, ‘চার বছর ধরে আমাকে বলা হয়েছে, তারা বেঁচে রয়েছেন। আমি জানি না, আর কী বিশ্বাস করব।’
এমটিনিউজ/এসএস