শনিবার, ১২ মে, ২০১৮, ০৫:০৬:৫৩

যে বিপদে পড়তে যাচ্ছে ইরান

যে বিপদে পড়তে যাচ্ছে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসলামিক রেভ্যুলশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ছয় ইরানি ও তিন কোম্পানির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার দুই দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ নতুন এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল। ফ্রান্স ইরানের ফের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে।

মার্কিন ডলারে আইআরজিসির প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে সহায়তা করায় ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংককেও এ নিষেধাজ্ঞায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। যেসব ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে, ট্রেজারি বিভাগ তাদের নাম প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, এই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোই আইআরজিসির জন্য লাখ লাখ ডলার সংগ্রহ করছে, যা দিয়ে ইরান মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে প্রভাব বিস্তার ও ‘ক্ষতিকর কার্যক্রম’ চালাচ্ছে; ওই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতেই যুক্তরাষ্ট্রের এ শাস্তি, জানিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন ম্নুচিন।

পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানের ওপর নতুন করে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিতে ৯০ থেকে ১৮০ বা এর চেয়েও বেশি দিন লাগতে পারে বলে ধারণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তার আগেই আইআরজিসির সঙ্গে সম্পর্কের অজুহাতে ছয় ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানের ওপর এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা তেহরানের ওপর চাপ বাড়াবে বলে ধারণা করছেন পর্যবেক্ষকেরা।

নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত ইরানি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবেন না মার্কিন নাগরিকরা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি ও কোম্পানির সঙ্গে বাণিজ্যে বাধা দেয়া হবে।
এক বিবৃতিতে ম্নুচিন বলেন, ‘আঞ্চলিক বিভিন্ন গোষ্ঠীকে অর্থ ও অস্ত্র দেয়াসহ আইআরজিসির নানা ধরনের ক্ষতিকর কার্যক্রমে সহায়তা করতে ইরানের শাসকগোষ্ঠী ও এর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে মার্কিন ডলার সংগ্রহ করছিল। আইআরজিসির রাজস্বের উৎস ও গন্তব্যের প্রবাহ বন্ধ করাই আমাদের উদ্দেশ্যে।’

এদিকে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের সাথে বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানির বাণিজ্যের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পুনরায় অবরোধ আরোপের নিন্দা জানিয়েছেন। এটিকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার তিনি এ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এই ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও তাদের ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে। 
বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের শীর্ষ কূটনীতিক জিয়ান ইয়েভস লি ড্রিয়ান যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত কোনো দেশের কোম্পানিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এমন কোনো অবরোধ আরোপের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের তাদের ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলোর সাথে আলোচনা করা প্রয়োজন।

তিনি ফরাসি দৈনিক লা পারিসিয়েনকে বলেন, ‘আমরা মনে করি যে তাদের অবরোধ পদক্ষেপের অতিরাষ্ট্রিকতা অগ্রহণযোগ্য।’তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো তাদের দেশের কোনো ক্ষতি মেনে নেবে না।’ ইরানে ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর নতুন শাসনব্যবস্থার প্রতিরক্ষায় আইআরজিসি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ইরানের অন্যতম বৃহৎ সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাহিনী। 

বৃহস্পতিবার আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সুনির্দিষ্টভাবে আইআরজিসির বিদেশী শাখা কুদস ফোর্সকেই লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। ট্রাম্প এই কুদস ফোর্সকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত সন্ত্রাসী বাহিনী ও মিলিশিয়া’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। গত বছরের অক্টোবরেও তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজ থেকে দেয়া এক বক্তব্যে ট্রাম্প ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে তেহরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার ঘোষণা দেন। -বিবিসি ও এএফপি
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে