যে কারণে ড্রোনে হাত দিতে চান না সেই ব্যক্তি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বন্ধুর বাড়িতে ড্রোন দেখে, নেশায় পড়ে যান সিমন ইভানস। তার অনভ্যস্ত হাতের ছোঁয়ায় এদিক ওদিক উড়ছিল ড্রোন। তখনও জানতেন না কী বিপত্তি অপেক্ষা করছে তার জন্য। সামনে দাঁড়িয়ে ছিল তার এক বন্ধুর ছেলে দেড় বছরের অস্কার ওয়েব। তারও কৌতূহলি চোখ তখন ড্রোনে। হঠাত্ই ড্রোন বাঁক নিয়ে, ছোঁ-মারা চিলের মতো ধেয়ে এল অস্কারের দিকে। নড়বড়ে কচি পায়ে সরার সুযোগ হয়নি অস্কারের। ছেলের আর্তচিত্কারে কাজ ফেলে ছুটে আসেন মা। মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন ইভানসও। টাইমস অপ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এখবর দিয়েছে।
তার পরে যা দেখলেন, তার জন্য মানসিক প্রস্তুতি ছিল না কারও। রক্তমাখা চোখের ভেতর থেকে ড্রোনের পাখা খুলতেই শিউরে ওঠেন মা। নিজের চোখজোড়াকে যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না। অস্কারের অর্ধেক চোখ নেই। ড্রোনের পাখায় চোখ দু-ফালা হয়ে যায়। অ্যাম্বলেন্সে করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও লাভ হয়নি। সারাজীবনের জন্যই একচোখ হারাতে হয়েছে দুধের শিশুটিকে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, এখন ওই চোখটিতে ক্ষীণ দৃষ্টি থাকলেও, সেটি বাদ দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। এ জন্য বেশ কয়েকবার অস্ত্রোপচার করতে হবে। এর পর বসানো হবে প্রস্থেটিক চোখ।
ঘটনাটি ঘটেছে ইউরোপের স্টুরপোর্ট-অন-সেভার্নে। ইভানস জানান, ড্রোনটি ওড়াচ্ছিলেন বড়জোর মিনিটখানেক হয়েছিল। নামাতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে যায়। অনভ্যস্ত হাতে ড্রোনের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। 'অপ্রস্তুত আমি দেখছিলাম, বাচ্চাটি কাঁদছে। চোখ গড়িয়ে অনর্গল রক্ত।'
ততক্ষণে বাচ্চাটির মা অ্যামি রবার্টসও চলে এসেছেন ঘটনাস্থলে। ছেলে দিকে তাকেতেই শিউরে ওঠেন মা। 'এ কী দেখছি আমি! ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বিশ্বাস হচ্ছিল না। নীচ থেকে চেখের অর্ধেকটা নেই। এমন বীভত্স্য দৃশ্য আগে কখনও দেখিনি।'
স্যান্ডওয়েলের একটি হাসপাতালে চিকিত্সা চলছে বাচ্চাটির। কর্তব্যরত এক ডাক্তার জানান, একটা ড্রোনেও যে এত বড় বিপদ হতে পারে, ধারণাতেই ছিল না।
ইভানসকে যদিও এর পরেও ক্ষমা করে দিয়েছে বাচ্চাটির পরিবার। তাদের কথায়, এটা অনিচ্ছাকৃত, নেহাতই দুর্ঘটনা। এর জন্য ইভানসকে দোষারোপ করা ঠিক হবে না।
আর ইভানস? নিজেকে দোষারপ করে যাচ্ছেন। তার আক্ষেপ, ড্রোন ওড়ানোর চেষ্টা না করলেই ভালো করতেন। ভবিষ্যতে আর কখনও, কোনও দিন ড্রোনে হাত দিতে চান না তিনি।
২৮ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�