‘কারবালামুখি কোটি মানুষের ঢল খোদায়ী নিদর্শন’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কারবালার সেই করুণ ঘটনার কথা মুসলমান জাতি আজও ভুলতে পারে না। আমাদের প্রিয় নবী হরযত মোহাম্মদ (সা)’র কনিষ্ঠ দৈহিত্র হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)’কে হত্যা করা হয়েছিল এই কারবালার ময়দানে। সেই দিন কার হৃদয় বিদারক ঘটনার সৃতি চারন করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী বলেছেন, হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)’র শাহাদতের বার্ষিকী পালনের জন্য ইরাকের পবিত্র কারবালা শহরের দিকে নজিরবিহীন সংখ্যক মানুষের পদযাত্রা একটি চিরস্থায়ী কল্যাণ এবং তা ঈমান ও ভালবাসা আর বুদ্ধিবৃত্তি ও অনুরাগের সমন্বিত রূপ।
তিনি ঈমান ও ভালবাসা এবং বুদ্ধিবৃত্তি ও অনুরাগের সমন্বয়কে বিশ্বনবী (সা)’র পবিত্র আহলে বাইতের অনন্য বৈশিষ্ট্য বা আদর্শ এবং গভীর অর্থ ও তাৎপর্যে ভরপুর এই মহান অনুষ্ঠানকে সন্দেহাতীতভাবে খোদায়ী নিদর্শন বলে উল্লেখ করেছেন।
উচ্চতর ইসলামী আইন বিষয়ক শিক্ষা কোর্স সমাপনী অনুষ্ঠানে সমবেত ইসলামী বিশেষজ্ঞদের এক সমাবেশে সম্পর্কে এইসব মন্তব্য করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা কারবালা জিয়ারতকারী ইরানিদের আপ্যায়নের ক্ষেত্রে ইরাকি মুসলমানদের মহানুভবতা ও গভীর ভালবাসার কথা তুলে ধরে বলেছেন, ‘বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দেয়া উচিত এবং জিয়ারতকারীদের সৌভাগ্য দেখে আমরাও শিহরণ অনুভব করছি ও আফসোস করছি যে, হায়! আমরাও যদি তাদের সঙ্গী হতে পারতাম!’
ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ হযরত ইমাম হুসাইন (আ)’র শাহাদতের চল্লিশতম দিবসের বার্ষিকী পালনের জন্য কারবালার দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। কেবল ইরান থেকেই প্রায় ৫০ লাখ মুসলমান ইরাকে সফর করছেন। ইরান ছাড়াও বাহরাইন, ভারত, পাকিস্তান, লেবানন ও তুরস্কের বিপুল সংখ্যক শিয়া ও সুন্নি মুসলমান এই বরকতময় ও আলোকিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন।
তাকফিরি-ওয়াহাবি সন্ত্রাসীদের নানা হুমকি উপেক্ষা করে এক কোটিরও বেশি ইরাকি ইমাম হুসাইন (আ)’র বার্ষিকী পালন করতে পদযাত্রা ও শোক-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন গত বেশ কয়েক বছর ধরে। পবিত্র নাজাফসহ দূর দূরান্তের ইরাকি শহরগুলো থেকে পায়ে হেটে কারবালায় হাজির হচ্ছেন ইরাকি মুসলমানরা।
দুই থেকে আড়াই কোটি মুসলমান এই সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন বলে তা বিশ্বের বৃহত্তম সমাবেশে পরিণত হয়েছে।
ইমাম হুসাইন (আ) ও তাঁর পরিকারের ৭২ জন সঙ্গী ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় উমাইয়া শাসক ইয়াজিদের পাপপূর্ণ শাসন-ব্যবস্থাকে মেনে না নেয়ার কারণে বিশ থেকে ত্রিশ হাজার সরকারি সেনার হাতে কারবালা প্রান্তরে অবরূদ্ধ হন এবং অসাধারণ বীরত্ব দেখানো সত্ত্বেও বর্বর শত্রুদের সম্মিলিত ও কাপুরুষোচিত হামলায় চরম পিপাসার্ত অবস্থায় শহীদ হন। কুফার বিপুল সংখ্যক মুসলমান মহাপাপিষ্ঠ ইয়াজিদের নাগ-পাশ থেকে তদেরকে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে বিশ্বনবীর (সা) প্রিয় নাতির কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল। কিন্তু তাদের বেশিরভাগই ইমামকে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেনি।-রেডিও তেহরান
২, ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমইউ
�