তাজমহল নিয়ে নতুন বিতর্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আগ্রার তাজমহল নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত স্মৃতি সৌধ ভারতের আগ্রার তাজমহলকে নিষ্ঠুরতার প্রতীক বলে আখ্যা দিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। অন্যদিকে, শিবসেনার পক্ষ থেকে তাজমহলকে তেজোমালয় বলে দাবি করা হয়েছে। ৩০ নভেম্বর কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা বলেছেন, তাজমহল হিন্দু মন্দির ছিল সরকার এরকম কোনো প্রমাণ পায়নি। ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় এ কথা জানান মহেশ শর্মা।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বলছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্যের সঙ্গে তারা একমত নয়। তারা এ ব্যাপারে গভীরভাবে তদন্ত করে দেখার দাবি জানিয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি, তাজমহলের যে দরজা রয়েছে, তা শাহজাহানের আমলের অনেক আগেকার। অযোধ্যার রাম মন্দিরের মতো এটিও তদন্ত করে দেখতে হবে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সুরেন্দ্র জৈন তাজমহলকে প্রেমের নয় বরং লালসা, অসহিষ্ণুতা এবং নিষ্ঠুরতার প্রতীক বলে মন্তব্য করেছেন। তার দাবি, শাহজাহান মমতাজের প্রতি ভালবাসার জন্য এটি তৈরি করেছিলেন একথাটি স্রেফ বিভ্রান্তি। তাজমহলের মন্দির হওয়া প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগের মাধ্যমে এ নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত করতে হবে।
অন্যদিকে, আগ্রার শিবসেনা প্রধান বিনু লাওয়ানিয়ার বক্তব্য, তাজমহল আসলে তেজোমালয়। এ সংক্রান্ত সমস্ত প্রমাণ আদালতে পেশ করা হবে।
এ নিয়ে তিনি ২০০৮ সালে আদালতে পিটিশন দায়ের করেছেন। গত ২৫ মার্চ আগ্রা সিটি সিভিল কোর্টে তাজমহলকে ‘শিব মন্দির’ বলে দাবি করে আরএসএসপন্থী ৬ জন আইনজীবী মামলা দায়ের করেন। তাদের দাবি, তাজমহলকে হিন্দু মন্দির ঘোষণা করতে হবে এবং সেখানে হিন্দুদের পুজো করার অনুমতি দিতে হবে।
আগ্রার শিবসেনা প্রধান বিনু লাওয়ানিয়ার যুক্তি, তাজমহল তৈরির আকৃতিতেই প্রমাণ এখানে মন্দির আছে। হিন্দুদের মন্দির গঙ্গা এবং যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত বলেও যুক্তি সাজিয়েছেন লাওয়ানিয়া।
ভারতের মুঘল বাদশাহ শাহজাহান তার স্ত্রী আরজুমান্দ বানু যিনি মমতাজ মহল নামে পরিচিত ছিলেন, তার মৃত্যুর পর স্মৃতির উদ্দেশ্যে এটি তৈরি করেন। বিশ্বখ্যাত স্মৃতি সৌধটি ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ শুরু হয় এবং ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে তা শেষ হয়। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থার পক্ষ থেকে ১৯৮৩ সালে তাজমহলকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। (টাইমস ওয়ার্ল্ড)
৪ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ