গোশতবাহী ট্রাকে হামলা, পুলিশ-জনতা ব্যাপক সংঘর্ষ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের হরিয়ানায় গোশতভর্তি ট্রাককে কেন্দ্র করে পুলিশ এবং জনতার মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ শুরুহয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাধারণ জনতার উপর লাঠিচার্জ করে এবং শূন্যে গুলি ছুঁড়েতে থাকে। এসময় ক্ষুব্ধ জনতা ইট-পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে এবং পুলিশের লাঠিতে দু’পক্ষের মোট ৪৮ জন আহত হয়েছে বলে খাবর জানা যায়। আহতদের মধ্যে ২৪ জন পুলিশ কর্মী রয়েছেন। তার মধ্যে ৫ পুলিশকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। রেডিও তেহরানের এক প্রতিবেদনে এখবর দিয়েছে।
প্রতিবেদনে জানা যায়, বৃহস্পতিবার গোশত বোঝাই একটি ট্রাককে কেন্দ্র হরিয়ানার পালওয়ালে উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে ক্ষুব্ধ মানুষজন। এরপরেই পুলিশের পক্ষ থেকে পাল্টা জবাব দেয়া হয়। উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তুমুল সংঘর্ষ চলে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পশু পাচারকারীদের সঙ্গে পুলিশের আঁতাত রয়েছে।
এদিন, সকালে স্থানীয় মানুষজন কিঠবাডি সেতুর কাছে একটি ট্রাকের কন্টেনার থেকে রক্ত পড়তে দেখলে তাদের সন্দেহ হয় এতে গরুর গোশত পাচার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর আগেও একই স্থান দিয়ে আরো দুটি ট্রাক গেছে বলে তারা জানায়। সংশ্লিষ্ট ট্রাকটি থামিয়ে তাতে গোশত থাকতে দেখে মানুষজন আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় ট্রাক চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সমর্থ হলেও এর সহকারীকে বেদম মারধর করার পাশাপাশি ট্রাকটিতে ভাঙচুর করে এবং পথ অবরোধ করে ক্ষুব্ধ মানুষজন। কিছুক্ষণের মধ্যে মোহন নগর, চিরবাডি, রোনিজা, লোহাগড়, রাজীব নগর, শামসাবাদ এবং কিঠবাডিসহ আশেপাশের অনেক গ্রাম থেকে মানুষজন সেখানে এসে জড়ো হয়।
এ ঘটনার খবর পেয়ে জেলা পুলিশ কর্মকর্তা রাজেশ দুগগল এবং এসডিএম সতবীর সিং মান ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ক্ষুব্ধ মানুষজন পুলিশের বিরুদ্ধে গরু পাচারকারীদের মদদ দেয়ার অভিযোগে স্লোগান দেয়া শুরু করে। পুলিশ সুপার লোকদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে পুলিশের পক্ষ থেকে লাঠিচার্জ করা হয়। ক্ষুব্ধ মানুষজন এসময় পুলিশের উদ্দেশ্যে পাথর ছোঁড়া শুরু করে। জনতার ছোঁড়া পাথরের আঘাতে পুলিশকর্মীরা আহত হলে পুলিশকে শূন্যে ২৫ রাউন্ড গুলি চালাতে হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার উপক্রম হলে সেখানে র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স বা ‘র্যাফ’ নামাতে হয়েছে।
ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক অশোক কুমার মিনা এবং এলাকার বিধায়ক করণ সিং দালাল ছুটে যান। উত্তেজিত মানুষজন অবৈধভাবে গোশত কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি এদের মদদকারী পুলিশ কর্মীদের বরখাস্ত করার দাবি জানায়। জেলা প্রশাসন কর্মকর্তারা তাদের দাবি মানার কথা জানানোর পরেই অবরোধ তুলে নেয়া হয়। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, কন্টেনারে একটি রেজিস্টার্ড কোম্পানির উদ্বৃত্ত গোশত ছিল। এ নিয়ে অপপ্রচার বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। যদিও কন্টেনারটিতে কিসের গোশত ছিল তা স্পষ্ট নয়।
৪ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�