আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মায়ের কাছে দুই বোন বায়না করেছিল মাংস খাবার। দুই মেয়েকে ঘরে রেখে তাই বাজারে মাংস কিনতে গিয়েছিলেন মা। ঘরে ছিলেন তাদের বাবাও। বাজার থেকে বাড়িতে ফিরে ঘরের চৌকাঠ পেরোতেই মা দেখলেন, রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেল তাঁর। বিছানার ওপর পড়ে রয়েছে বড় মেয়ে। গলার নলি কাটা, মাথায় গভীর ক্ষত। বিছানার চাদর রক্তেমাখা। পাশের ঘরে যেতেই দেখেন মেঝেতে পড়ে রয়েছে তাঁর ছোটো মেয়ে। তারও কান ও মাথায় গভীর ক্ষত। ঘরে কোত্থাও নেই তাঁর স্বামী। কিছুক্ষণের মধ্যেই গোটা বিষয়টি পরিস্কার হয়ে গেল তাঁর কাছে। তাহলে স্বামীই...
হলদিয়ার ভবানীপুর থানা এলাকার বড়বাড়ি গ্রামে রবিবার রাতে ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা। নিজেরই দুই মেয়েকে গলার নলি কেটে খুনের অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অন্তত তেমনটাই অভিযোগ ওই ব্যক্তির স্ত্রী।
বিপ্লব দাস তেমন কোনও কাজ করতেন না। মাঝেমধ্যে ঠোঙা বানিয়ে কিছু দোকানে দিতেন। স্ত্রী সাগরিকাই নানা কাজ করে সাংসারের হাল ধরে রেখেছিলেন। দুই মেয়ে সীমা(১৪) ও পুজা(১০) বেশিরভাগ সময়ে তাদের মামাবাড়িতেই থাকত। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে অশান্তি ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। বিপ্লবের সঙ্গে সাগরিকার ঝগড়া হত না, এমন কোনও দিন ছিল না বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। তবে রবিবার তাঁদের মধ্যে কোনও অশান্তি হয়নি।
রবিবার বাড়িতেই ছিল দুই মেয়ে। সাগরিকা জানান, সীমা ও পূজা তাঁর কাছে মাংস খাওয়ার জন্য বায়না করেছিল। তাই বাজারে মাংস কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসে এই ঘটনা দেখেন। তাঁর অভিযোগ, স্বামীই খুন করেছে দুই মেয়েকে।
কিন্তু কেন? এই প্রশ্ন নিয়েই ধোঁয়াশা বেঁধেছে। মনে করা হয়েছে, আর্থিক অনটনের কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন বিপ্লব। পারিবারিক অশান্তির কারণেই দুই মেয়েকে খুন করেছেন তিনি। প্রতিবেশীরা জানান, সাগরিকা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বিপ্লবকে রাস্তায় বেশকিছুক্ষণ ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন তাঁরা। বিপ্লবকে দেখে খুব অস্থির মনে হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু এত বড় যে কাণ্ড ঘটে গিয়েছে, তা আঁচও করতে পারেননি কেউ।
সাগরিকা যখন বাজার থেকে ফিরে আসেন, তখন আর বিপ্লবকে এলাকায় দেখা যায়নি। তবে সাগরিকার অভিযোগের ভিত্তিতে রাতভর এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে বিপ্লবকে গ্রেফতার করে পুলিস। তদন্ত শুরু হয়েছে।-জিনিউজ