ভারতে এসেছিল ক্যালিফোর্নিয়ায় হামলাকারী!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০১৩ সালে ভারতে এসেছিল ক্যালিফোর্নিয়ায় হামলাকারী তাশফিন মালিক। মার্কিন গোয়েন্দাদের জানালেন সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কর্ম কর্তারা। ২০১৩–এর ৬ অক্টোবর সৌদি আরব থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল সে। তবে শেষ পর্যন্ত ভারতে এসেছিল কিনা, জানা যায়নি। এসে থাকলেও কতদিন ছিল, কোথায়ই বা ছিল, সেসব নিয়েও ধন্দে গোয়েন্দারা। ক্যালিফোর্নিয়ার সান বার্নারদিনোতে গুলি করে ১৪ জনকে খুন করে তাশফিন মালিক (২৭) এবং তার পাকিস্তান–মার্কিনি স্বামী সৈয়দ রিজওয়ান ফারুক (২৮)। তদন্তে নেমে এফ বি আই জানতে পারে, তাশফিনের জন্ম পাকিস্তানে হলেও ছোট বেলায় পেশায় ইঞ্জিনিয়ার বাবার সঙ্গে সৌদি আরবের জেদ্দায় চলে যায় সে। সেখানেই স্বামী ফারুকের সঙ্গে দেখা হয়েছিল তার। এই তত্ত্বও খারিজ করল সৌদি আরব প্রশাসন। তাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র মনসুর তুর্কি জানালেন, মাত্র দু’বার কয়েক দিনের জন্য সৌদি আরব গেছিল তাশফিন। প্রথমবার ২০০৮ সালের জুনে বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্য পাকিস্তান থেকে সৌদি আরব গেছিল সে। ছিল নয় সপ্তাহ। এর পর ২০১৩–এর ৯ জুন ফের পাকিস্তান থেকে সৌদি আরব যায় তাশফিন। ৬ অক্টোবর সেখান থেকেই রওনা দেয় ভারতে। তবে আদৌ ভারতে এসেছিল কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় সৌদি প্রশাসন বা গোয়েন্দাদের কেউই। মনসুর তুর্কি আরও জানালেন, সৌদি আরবেই যে ফারুকের সঙ্গে তাশফিনের দেখা হয়েছিল, সেই প্রমাণও নেই। জীবৎকালে দু’বার সৌদি আরব গেছিল ফারুক। প্রথমবার ২০১৩–এর অক্টোবরে হজ করতে যায় সে। দ্বিতীয়বার ২০১৪–এর জুলাই উমরাহ্ পালনের জন্য গেছিল। ২০১৩–এর অক্টোবরে পাঁচ দিন দু’জনেই সৌদি আরবে ছিল। তখনই তাদের দেখা হয়েছিল কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় সৌদি প্রশাসন। যদিও এফ বি আই সন্দেহ প্রকাশ করে, সৌদিতেই মগজধোলাই হয়েছিল তাশফিনের। এর পর জেদ্দা থেকে ২০১৪ সালের জুলাইতে ফারুকের সঙ্গে আমেরিকা রওনা দিয়েছিল সে। তাঁরা আরও জেনেছেন, ২০০৭ থেকে ২০১২ পর্যন্ত পাকিস্তানের মুলতানে পড়াশোনা করে সে। শিক্ষকরা তাকে গোঁড়া ‘সৌদির মেয়ে’ বলেই চিনত। একবছর একটি কট্টর ধর্মীয় স্কুলেও পড়েছে সে। ফারুকের সম্পর্কেও বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে গোয়েন্দাদের। ক্যালিফোর্নিয়ায় বন্দুকবাজির আগে ফারুকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল ২৮ হাজার ৫০০ ডলার। গোয়েন্দারা জেনেছেন সন্দেহভাজন সৈয়দ রিজওয়ান ফারুক এবং তার দাদা সৈয়দ রাহিল ফারুকের বিপরীতধর্মী স্বভাব–চরিত্রের কথা। রিজওয়ান বরাবরই ধর্মপ্রাণ ছিল। সেখানে রাহিল ছিল হুল্লোড়বাজ। মাঝেমধ্যেই বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করতেন। কিশোর বয়সে ভিন ধর্মী বান্ধবীও ছিল তার। পড়াশোনা শেষে করে মার্কিন নৌসেনায় যোগ দিয়েছেন তিনি। একই বাড়িতে থেকে, একই স্কুলে পড়ে কীভাবে দুই ভাইয়ের স্বভাব এত আলাদা হল, ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের।
৯, ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমইউ