আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে কনকদুর্গা। তাকে উদ্ধার করে মালাপপুরাম শহরের কাছে এক হাসপাতালে ভর্তি করেন এক সরকারি কর্মকর্তা৷ কনকদূর্গার নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়ে অভিযুক্ত শাশুড়ির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে কেরালা পুলিশ৷
গত ২ জানুয়ারি শত বছরের প্রথা ভেঙে কেরালার শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করে ইতিহাস গড়েছিলেন তিনি ও তার সহযাত্রী বিন্দু আমিনি।
মন্দিরটিতে এতদিন ঋতুমতি (১০-৫০ বছর বয়সী) নারীদের প্রবেশাধিকার ছিল না। এনডিটিভি জানায়, মন্দিরে প্রবেশের সাহস দেখাতে পারলেও বাড়ি ফিরেই শাশুড়ির হাতে মার খেয়েছেন ছেলের বউ।
শুধু তাই নয়, এ ঘটনার পর স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পালিয়ে থাকতে হয়েছে এই দুই নারীকে৷ এর আগে কনক এক সাক্ষাৎকারে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, মন্দিরে প্রবেশের কারণে পরিবারসহ পুরো গ্রামবাসী তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন৷
মন্দিরে প্রবেশের সিদ্ধান্ত কাউকে আগে থেকে জানিয়ে রাখেন নি জানিয়ে কনক বলেন, পরিবার যদি আমাদের মন্দিরে প্রবেশের কথা জানত, তাহলে আর শবরীমালায় ঢোকা সম্ভব হত না৷
প্রসঙ্গত, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪১৩৩ ফুট উচ্চতায় আটশ বছরের পুরনো শবরীমালা মন্দিরে শত শত বছর ধরে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে এক ঐতিহাসিক রায় দিয়ে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট জানান, সব বয়সের নারীই প্রবেশ করতে পারবেন সবরিমালা মন্দিরে।
সেই নির্দেশ আসার পর থেকেই বারবার নারীরা ওপরে ওঠার চেষ্টা করেন। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে কনক ও বিন্দুও চেষ্টা করলে তারা ব্যর্থ হন।
এরপর কড়া পুলিশ পাহারার মধ্যে গত ২ জানুয়ারি ভগবান আয়াপ্পার মন্দিরে প্রবেশ করেন তারা।
সেদিন পুলিশি সহযোগিতায় কালো পোশাক পরে মন্দিরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন দুই নারী এমন ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয়রা। আদালত নারীদের অধিকারের পক্ষে রায় দিলেও তা মানতে রাজি হয়নি শবরীমালা কর্তৃপক্ষ এবং ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীরা।
মন্দিরে প্রবেশের দিন সংঘর্ষে বিজেপির এক কর্মী নিহত হন৷ ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে দুই হাজারের বেশি মানুষকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
কনকরা মন্দিরে প্রবেশের পর প্রধান পুরোহিত ‘শুদ্ধিকরণের জন্য’ মন্দির বন্ধ করে দেন৷