শনিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৯, ০৯:৫৯:২২

যে কোনো মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা ঘোষণা

যে কোনো মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ এখন মুখোমুখি। দেশটিতে ফেডারেল সরকারের কর্মবন্ধ বা শাট ডাউন নিরসন প্রশ্নে কংগ্রেস ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে এক ধরনের লড়াই চলছে। এ অবস্থা চলছে প্রায় ৩৫ দিন। 

এ সময় দেশটির প্রায় আট লাখ কর্মচারী কর্মকর্তা কোনো বেতন পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় দেশে যে কোনো মুহূর্তে জরুরি অবস্থা জারির কথা ভাবছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ জন্য প্রেসিডেন্টের আদেশের খসড়া তৈরি করছে হোয়াইট হাউস। অভ্যন্তরীণ নথিপত্রের তথ্য পর্যালোচনা করে এই খবর জানিয়েছে সিএনএন। 

খবরে বলা হয়, দক্ষিণ সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের লক্ষ্যে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্ভাব্য তহবিল তার সইয়ের জন্য শনাক্ত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল সরকারের কর্মবন্ধ বা শাট ডাউন নিরসন প্রশ্নে কংগ্রেস ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে এক ধরনের লড়াই চলছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প তার ক্ষমতা ব্যবহার করে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি এবং সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে প্রতিরক্ষা দফতরকে নির্দেশ দেওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দেননি। তবে এ ব্যাপারে ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। 

তাই বিকল্প পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে হোয়াইট হাউস। এতে কংগ্রেসকে এড়ানো যাবে। প্রেসিডেন্টের ঘোষণাপত্রের খসড়ায় লেখা রয়েছে, বিপুল পরিমাণ ভিনদেশি, যারা প্রতিদিন অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে, তারা দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি। এ কারণে প্রেসিডেন্টকে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করতে হচ্ছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও আইন প্রেসিডেন্টকে যে কর্তৃত্ব দিয়েছে, সে অনুযায়ী তিনি জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করছেন। মার্কিন সরকারের এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, এই খসড়া গত সপ্তাহে হালনাগাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন খাত থেকে জোড়াতালি দিয়ে অর্থ সংগ্রহের কথা ভাবছে প্রশাসন। ট্রেজারি তহবিল, সামরিক নির্মাণ, পেন্টাগনের গণপূর্ত তহবিল, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতরের তহবিল থেকে অর্থ টান দেওয়া হতে পারে। সম্প্রতি ট্রাম্প বলেছেন, তার হাতে বিকল্প আছে, প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা হবে। অনেক মানুষ ও সেনাবাহিনী সেটা চায়।

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে বাজেট বরাদ্দ ইস্যুতে মতবিরোধের জের ধরে গত ২২ ডিসেম্বর থেকে ফেডারেল সরকারের একাংশের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আট লাখ ফেডারেল কর্মী কোনো বেতন পাচ্ছেন না। মেক্সিকোর সঙ্গে নিরাপত্তা ‘দেয়াল’ নির্মাণের    জন্য ট্রাম্পের দাবি অনুসারে অর্থ দিতে ডেমোক্র্যাটদের আপত্তি রয়েছে।

দুই প্রস্তাব মার্কিন সিনেটে খারিজ : মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকারের আংশিক অচলাবস্থা নিরসনের দুটি প্রস্তাব কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রয়োজনীয় ৬০ ভোট না পাওয়ায় খারিজ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা পৃথকভাবে ওই দুটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। 

রিপাবলিকানদের প্রস্তাব ৫০-৪৭ এবং ডেমোক্র্যাটদের ৫২-৪৪ ভোট পেলেও বাজেট সংক্রান্ত নতুন বিল পাসে উচ্চকক্ষে ন্যূনতম ৬০ জনের সমর্থন লাগে। প্রস্তাব দুটির একটিও অনুমোদিত না হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের রেকর্ড ৩৫ দিনের আংশিক অচলাবস্থা আরও দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে অর্থায়ন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধে ডিসেম্বরের ২৩ তারিখ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় এক চতুর্থাংশ সংস্থা ও বিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। 

সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের শুরু থেকেই ওই দেয়াল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেয়ালের অর্থ মেক্সিকোর কাছ থেকে নেওয়া হবে বললেও, মেক্সিকান সরকার তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সুর বদলে যায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের। 

দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করতে এ বছরই ৫৭০ কোটি ডলার বরাদ্দ চেয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে জনগণের করের টাকায় প্রেসিডেন্টের এ অযৌক্তিক দাবি পূরণে আপত্তি জানিয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। ট্রাম্প বলেছেন, দেয়াল নির্মাণের বরাদ্দ ছাড়া কোনো বাজেট বিলেই স্বাক্ষর করবেন না তিনি। এএফপি, বিবিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে