আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে টানা বৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর অবস্থা অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বের রাজ্য কুইনসল্যান্ডের উত্তরাংশের। বিশেষত টাউন্সভিল-এ কোনটা রাস্তা আর কোনটা নদী তা আলাদা করাই যাচ্ছে না। এতটুকু জমিও শুকনো নেই। আর তাই জলের প্রাণীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে রাস্তায়। বিপদের ভয়ে ইতিমধ্যেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ১১০০ বাসিন্দাকে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস আগামী কয়েকদিনে বৃষ্টি আরও বাড়বে। সেক্ষেত্রে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হতে পারে টাউনসভিলকে। বন্যায় আক্রান্ত টাউনসভিল বাসিন্দারা এই বিপর্যয়ের মুখে পড়ে রীতিমতো আতঙ্কিত। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, গত এক শতকে এমন ভয়াবহ বন্যা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার কুইনসল্যান্ডে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ায় এই অতি বৃষ্টির জেরে রস নদীর উপরের একটি বাঁধের জল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। মোট ১৯০০ কিউবিক মিটার জল ছাড়া হয় বাঁধ থেকে। আর তার জেরেই ভেসে যায় টাউনসভিল। নদী থেকে সাপ, কুমির ঢুকে পড়ে জনবসতি এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের তোলা বেশ কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে দেখা গিয়েছে, কোথাও জলে ভেসে রাস্তা পার হচ্ছে কুমির। আবার কোথাও একটি বাড়ির প্রায় ডুবে যাওয়া গ্যারাজের পাশের গাছে আশ্রয় নিয়েছে কুমির। কোথাও আবার একটি গাছের কাণ্ড বেয়ে ওঠার চেষ্টা করছে কুমির।
কুইনসল্যান্ডের এই এলাকাটি মূলত গ্রীষ্মপ্রধান। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত বর্ষাকাল এখানে। তবে উত্তর কুইনসল্যান্ডে বৃষ্টি হলেও অন্যান্য এলাকায় বৃষ্টির এতটা দাপট নেই বলে জানিয়েছে অস্ট্রলিয়া প্রশাসন। বরং বেশ কিছু এলাকা আজও খরা কবলিত। অন্যদিকে উত্তর কুইন্সল্যান্ডে আগামী কয়েকদিনের আরও বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়াবিদরা। তেমনটা হলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ২০হাজার বসতবাড়ি জলমগ্ন হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে প্রশাসন।
এই ঘটনায় কুইনসল্যান্ডের পুলিশ সতর্কতা জারি করেছে যে, বৃষ্টির জল নামলে এইসব কুমির আশ্রয় নিতে পারে বাড়ির আশপাশে খোলা এলাকায়। সাপও ঢুকতে পারে বাড়ির ভিতর। তবে আগামী দিনে আরও বেশি বৃষ্টি হলে সেই সমস্যা সামাল দিতেও প্রশাসন তৎপর হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।