মঙ্গলবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, ০৯:৪২:২৩

পাকিস্তানে আক্রমণ করতে পারে ভারত

পাকিস্তানে আক্রমণ করতে পারে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার জেরে পাকিস্তানের ওপর ভারত আক্রমণ চালাতে পারে, এমন আশঙ্কায় জাতিসঙ্ঘের দ্বারস্থ হয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ভারত আক্রমণ করতে পারে, আপনারা থামান’। ভারতীয় উপমহাদেশে শান্তি ফেরাতে চাইল জাতিসঙ্ঘের মধ্যস্থতা।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি চিঠি দিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের সেক্রেটারি-জেনারেল আন্তোনিও গুয়েতেরেসকে। তিনি ওই চিঠি জাতিসঙ্ঘের সাধারণ ও নিরাপত্তা পরিষদের সবক’টি দেশের হাতে তুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তা নিয়ে আলোচনা করতে ও দ্রুত ব্যবস্থা নিতেও বলেছেন তিনি।

তবে ভারত বরাবরই কাশ্মীর নিয়ে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার বিরোধিতা করে এসেছে। এখনো তার বিরোধী।

জাতিসঙ্ঘ সেক্রেটারি-জেনারেলকে চিঠিতে মঙ্গলবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি লিখেছেন, ‘‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহারের যে হুমকি দিয়েছে ভারত, তার প্রেক্ষাপটে এই অঞ্চলে (পড়ুন, ভারতীয় উপমহাদেশে) শান্তি পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ফলে, আমরা জরুরি ভিত্তিতে আপনাদের (জাতিসঙ্ঘ) হস্তক্ষেপের প্রয়োজন বোধ করছি। তাই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’’

জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আত্মঘাতী হামলার আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪০ জনের মতো সৈন্য নিহত হয়। এই হামলার জন্য ভারত দায়ী করে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জৈশ-ই-মোহাম্মদকে।

এই হামলার পর সর্বদলীয় বৈঠকের পর সেনাবাহিনীকে তার পূর্ণ ক্ষমতা প্রয়োগের অনুমতি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জাতিসঙ্ঘ সেক্রেটারি-জেনারেলকে লেখা পাকিস্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি তারই প্রেক্ষাপটে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি তার চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘যতই ঢাকা-চাপা দেয়ার চেষ্টা হোক, পুলওয়ামায় ভারতের সিআরপিএফ জওয়ানদের উপর হামলা চালিয়েছে কাশ্মীরের এক বাসিন্দাই। ওই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না করে পাকিস্তানকে আক্রমণ করাটা আদৌ উচিত নয়।’’

ওই ঘটনায় উগ্রবাদীদের পিছনে পাকিস্তানের মদত রয়েছে বলে ভারতের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হয়েছে, জাতিসঙ্ঘ সেক্রেটারি-জেনারেলকে লেখা চিঠিতে তাকে ‘অবাস্তব’ বলে উল্লেখ করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মোদি সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্বেষকে যে ঘরোয়া রাজনীতিতে ব্যবহার করছেন, আগামী দিনেও সেটা করে যেতে চাইছেন, চিঠিতে তারও উল্লেখ করেছেন কুরেশি। পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘ভারত ইচ্ছাকৃতভাবেই পাক-বিদ্বেষকে জিইয়ে রেখে ঘরোয়া রাজনীতিতে তার ফসল তুলতে চাইছে। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে শত্রুতা করছে। এই অঞ্চলে অশান্তির পরিবেশ, উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।’’

দিল্লি ইতিমধ্যেই সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার ইঙ্গিত দিয়েছে, জাতিসঙ্ঘ সেক্রেটারি-জেনারেলকে সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘দ্রুত শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন দেখা গিয়েছে। এ ব্যাপারে জাতিসঙ্ঘের আশু পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।’’

কুরেশির আরো জানান, জাতিসঙ্ঘ প্রয়োজনে এ ব্যাপারে ভারতকে অনুরোধ করতে পারে। পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসে ভারতকে বিরোধ মিটিয়ে নিতে বলতে পারে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে