আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তান সরকার ঘোষণা দিয়েছেন, এখন থেকে পাকিস্তানে আর কোনো ভারতীয় চলচ্চিত্র মুক্তি পাবে না। পাকিস্তানের ভূমিতে ভারতের হামলার প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেয়া হয়।
পাকিস্তানের তথ্য ও প্রচারমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী মঙ্গলবার এক ঘোষণায় জানান, এখন থেকে দেশে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’র বিজ্ঞাপনের মতো ভারতীয় চলচ্চিত্রও বয়কট করা হবে।
ফাওয়াদ চৌধুরী এক টুইটে জানান, চলচ্চিত্র প্রদর্শন সংস্থা ভারতীয় যে কোনো বিষয়কে বয়কট করেছে। ফলে পাকিস্তানে এখন আর ভারতীয় কোনো ছবি মুক্তি পাবে না। একই সাথে পাকিস্তানের ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকেও নির্দেশনা দেয়া হয়ছে, যাতে তারা ভারতের কোনো বিজ্ঞাপনও প্রচার না করে।
ভারতের বিমানবাহিনী কর্তৃক গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে হামলার চালানোর প্রেক্ষিতে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দেয়। ভারত দাবি করছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় যে আত্মঘাতী হামলা পরিচালিত হয়েছিল, তাতে পাকিস্তানের হাত রয়েছে। আর তার জবাবেই তারা এ হামলা চালিয়েছে।
অল পাকিস্তান এক্সিবিশন অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান যোরাইজ লাশারি এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এবং পাকিস্তান সরকারের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে এ অবস্থার নিরসন না হওয়া পর্যন্ত তারা স্থানীয়ভাবে নির্মিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানই প্রচার করবেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, শিল্প ও চলচ্চিত্রের একটি বৈশ্বিক ভাষা রয়েছে, যা সীমান্ত পেরিয়ে লোকজনকে আরো কাছে নিয়ে আসে। আমরা আশা করবে, বর্তমান এ উত্তেজনা হ্রাসে সবাই মিলে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে, যাতে পুরো অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধির পরিবেশ ফিরে আসে।
বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দুই দেশের সংস্কৃতি বিষয়ক সমঝোতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে তথ্য ও প্রচারমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীই ভারতীয় চলচ্চিত্রনির্মাতা নন্দিতা দাসকে পাকিস্তানে তার ‘মান্টো’ ছবির মুক্তিতে সহায়তা করেছিলেন।
কাশ্মিরের পুলওলামা হামলার পর ভারতের চলচ্চিত্র সংস্থা চলচ্চিত্রনির্মাতাদের পাকিস্তানি শিল্পী ও কর্মীদেরকে বাদ দিতে এবং পাকিস্তানে তাদের চলচ্চিত্র মুক্তি দিতে নিষেধ করে। এর ফল পূর্ব প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানে ‘টোটাল ধামাল’ মুক্তি পায়নি। এছাড়া কার্তিক আরিয়ানের ‘লুকাচুপি’, দিলজিৎ দোসাঞ্জের ‘অর্জুন পাতিয়ালা’ এবং টিগমাঙ্গসু ঢুলিয়ার ‘মিলান টকিজ’ও পাকিস্তানে মুক্তি পায়নি।
প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে বিবাদ থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানে বলিউডি চলচ্চিত্র বেশ জনপ্রিয়। সে জন্য সেখানে ব্যাপকহারে ভারতের চলচ্চিত্রগুলো মুক্তি পায়। বলিউডি অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও সেখানে বেশ জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তাকে আরো বাড়াতে বলিউডের অনেক ছবিতেই পাকিস্তানের শিল্পীদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
কারণ পাকিস্তানের বাজার বলিউডের জন্য অনেক বড় একটি বাজার। তারা কোনো চলচ্চিত্রের লাভ-লসের হিসাব করার সময় পাকিস্তানের সেই বাজারটিকেও হিসাব করে থাকে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ থাকলেও ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়টিকে দেখেও না দেখার ভান করা হয়।
সূত্র : সিয়াসাত ডেইলি