আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন বিমানবাহিনীর প্রথম নারী পাইলট তিনি। যুদ্ধক্ষেত্রে বিমান ওড়ানোর যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। ২৬ বছর সেনাবাহিনীতে কাটিয়ে এতদিন পর অ্যারিজোনার রিপাবলিকান সিনেটর মার্থা ম্যাকস্যালি ফাঁস করলেন, বিমানবাহিনীয় থাকাকালীন সময়ে একজন ঊর্ধ্বতন অফিসারের তাকে ধর্ষণ করেছিলেন! গত বুধবার মার্কিন সিনেটের এক শুনানিতে এমন তথ্য দিয়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন মার্থা।
সেনাবাহিনীতে যৌন নিপীড়ন রুখতে এবং এমন অভিযোগ উঠলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে- এসব নিয়েই শুনানি চলছিল সিনেটে। ম্যাকস্যালি বলেন, এর আগে যৌন নিগ্রহের কথা প্রকাশ্যে আনেননি, কারণ তার সেনাবাহিনীর উপরে কোনো বিশ্বাস ছিল না। তাছাড়া তার নিজের কিছু দ্বিধাও ছিল। ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করলেও অভিযুক্ত অফিসারের নাম জানাননি মার্থা।
নিজের বক্তৃতায় তিনি বলেন, 'বহু বছর নীরব ছিলাম। কিন্তু আমার ক্যারিয়ারের শেষের দিকে দেখছিলাম, বাহিনীতে বিভিন্ন কেলেঙ্কারি হয়েই চলেছে। আর সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে না। তাই মনে হলো, কিছু মানুষকে জানানো উচিত আমিও যৌন নিপীড়নের শিকার। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছিল।'
এসময় চোখ দিয়ে জল পড়ছিল মার্থার। সিনেটে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, 'আমার অভিজ্ঞতার কথা বলতে চেষ্টা করার সময়েই বুঝেছিলাম কতটা ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে। ১৮ বছর কাজের পর কিছুটা গুটিয়ে নিয়েছিলাম নিজেকে। অন্যান্য নির্যাতিতার মতো আমারও মনে হতো, পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রই আমাকে বারবার ধর্ষণ করছে।'
ম্যাকস্যালি বলছেন, সেনাবাহিনীর মধ্যে যে সব পদ্ধতিগত ব্যর্থতা রয়েছে, তা তিনি জীবন দিয়ে বুঝেছেন। যৌন হেনস্থার সমস্যাটা বুঝতেই পারেননি অনেক কমান্ডার। এরপর মার্কিন বিমানবাহিনীর মুখপাত্র ক্যাপ্টেন কেরি ভোলপে এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'সিনেটর ম্যাকস্যালি যে অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন, তার জন্য আমরা ব্যথিত এবং দুঃখিত। আমরা তার পাশে আছি। বাহিনী থেকে এই ধরনের আচরণ নির্মূল করতে আমরা বদ্ধপরিকর।'