শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৯, ০৩:৪৯:২২

১৭ মিনিট ধরে গুলি, ভিডিও করেছেন হামলাকারী নিজেই

১৭ মিনিট ধরে গুলি, ভিডিও করেছেন হামলাকারী নিজেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মসজিদ হামলার ঘটনায় থমকে গেছে নিউজিল্যান্ড। দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে এমন ভয়াবহ হামলার ঘটনা দেখা যায়নি। আর সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা হচ্ছে হামলাকারী নিজেই মসজিদে নূরে হামলার ঘটনাটি ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছেন।

শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে ক্রাইস্টচার্চ শহরের হেজলে পার্ক ডিস্ট্রিকের ডিন অ্যাভিনিউতে অবস্থিত আল নূর মসজিদে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। এসময় লিনউড এলাকার এক মসজিদেও হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে দ্বিতীয় হামলায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এ হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ইতিমধ্যে তিন পুরুষ ও এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম নিউজিল্যান্ড হ্যারাল্ড বলছে, হামলার সময় ধারণকৃত ওই ভিডিওতে দেখা হামলাকারী মসজিদের এক পাশে গাড়িটি রেখে নেমে আসছেন। এরপর মসজিদের নামাজরত মুসল্লিদের লক্ষ্য করে রাইফেল থেকে গুলি করতে শুরু করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, দীর্ঘ ১৭ মিনিট ধরে রাইফেল থেকে গুলি চালাতে থাকেন বন্দুকধারী।

ওই দুর্ধর্ষ খুনী গুলি করার দৃশ্যটি নিজেই ভিডিও করেন এবং ‘মেনিফেস্টো’ শিরোনামে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেন। ওই ভিডিও ফুটেজটি সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

২৮ বছর বয়সী ওই হামলাকারীর নাম ব্রেটন টারান্ট। অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেয়া ওই ব্যক্তি এই নামেই নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। তবে পুলিশের ধারণা, এটি তার আসল নাম নয়।

হামলা সম্পর্কে নিউজিল্যান্ডের পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেন, ‘এই বন্দুক হামলার পর ক্রিস্টচার্চ মসজিদে একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে পুলিশ। তবে এখনও ঝুঁকি কাটেনি।’

এর আগে এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স জানায়, সামরিক সেনাদের ছদ্মবেশে দুই ব্যক্তি শুক্রবার মসজিদে ঢুকে পড়ে। এরপর তারা নিজেদের হাতে থাকা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল থেকে নামাজরত মুসল্লিদের লক্ষ্য করে এলাপাতাড়ি গুলি করতে শুরু করে। এসময় ওই মসজিদটিতে কমপক্ষে ২শ জন মুসল্লি জুমার নামাজ পড়ছিলেন। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছে। হতাহতদের অধিকাংশই মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লি। এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে আল নূর মসজিদে।

হামলার পর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে গোটা এলাকা। মসজিদের চারপাশে মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ। এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে থাকারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে ওই শহরের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে আল নূর মসজিদে এখনও বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা জানতে না পেরে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তাদের পরিবারের লোকজন।

তাদের শান্ত করার কোনো চেষ্টাই করছে না সরকার। উল্টো পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ মুসলিমদের কোনো মসজিদে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত নিউজিল্যান্ডের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

সূত্র: নিউজিল্যান্ড হ্যারাল্ড

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে