বিয়ের আগেই বরের কাছে কনের প্রস্তাব
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাইরে থেকে দেখলে বিয়েতে হরিয়ানার আর পাঁচটা বিয়ের থেকে আলাদা কিছুই চোখে পড়বে না। সেই একই রকম ব্যান্ডপার্টি, বারাতি, আলো-রোশনাই সব প্রায় একরকম। কিন্তু বিয়ের আসরের ভেতরে গেলে জানা যায়, বিয়েটা কীভাবে সমাজ সচেতনতার ক্ষেত্রে আদর্শ হয়ে উঠতে পারে।
হবু স্বামীর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়ার আগেই তাকে দিয়ে আরো একটি শপথ করিয়ে নিলেন পুনম। স্বামী সন্দীপ কুমারকে দিয়ে ১১টি গরিব মেয়ের পড়াশোনার ভার নেয়ার শপথ করিয়ে নেন তিনি। শপথের সাক্ষী থাকেন উপস্থিত নিমন্ত্রিতরা।
সোমবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমন খবর জানা গেছে।
নারী-পুরুষের সংখ্যার অনুপাতের নিরিখে দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া রাজ্য হরিয়ানা। ২০১১-এর জনসংখ্যা গণনার বিচারে প্রতি ১০০০ পুরুষে এ রাজ্যে মহিলার সংখ্যা ৮৭৭। আর ছয় বছর পর্যন্ত শিশুদের ক্ষেত্রে ছেলেমেয়ের অনুপাত ১০০০:৮৩০।
কন্যাভ্রুণ হত্যায় দেশের সবচেয়ে এগিয়ে থাকা এই রাজ্যের পানিপথেই চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও ক্যাম্পেন শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই হরিয়ানায় পুনমের উদ্যোগ চমকে দেয়ার মতো।
হরিয়ানার ভিওয়ানি জেলার বিলাওয়াল গ্রামে স্থানীয় এক শিক্ষকের মেয়ে পুনমের সঙ্গে বিয়ের আসর বসেছিল ঝাঝরের সন্দীপ কুমারের। বর-কনে অগ্নিসাক্ষী করে সাত পাক ঘোরার ঠিক আগে হবু স্বামী সন্দীপকে একটা শপথ করতে বলেন পুনম।
না হলে এ বিয়ে তিনি করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। চমকে যায় দুই বাড়ির লোকজনসহ নিমন্ত্রিতরা। ১১ জন গরিব মেয়ের পড়াশোনার সব খরচ সন্দীপকে দিতে হবে বলে জানান পুনম। সিদ্ধান্ত নিতে বেশি সময় নেননি সন্দীপ। হবু বউয়ের প্রস্তাবে সহজেই রাজি হয়ে যজ্ঞের আগুনের শিখার ওপর হাত রেখে শপথ নেন তিনি।
স্থানীয় এক সমাজকর্মীর সঙ্গে কাজ করেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পুনম। বিয়ের মতো জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সমাজের কাজে কিছু একটা করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই এ উদ্যোগ।
তার স্বামী সন্দীপ কোচিং সেন্টার চালান। তাই গরিব মেয়েদের পড়াশোনার ভার নেয়াটাই তার পক্ষে উপযুক্ত হবে বলে মনে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন পুনম। বিয়ের আসরে উপস্থিত ছিলেন দাদরির বিধায়ক রাজদীপ ফোগট। এ উদ্যোগ উদীহরণস্বরূপ বলে জানিয়েছেন তিনি।
১৪ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম
�