বুধবার, ০৮ মে, ২০১৯, ০৬:৫৭:০৮

যাকাত বণ্টনের অনন্য নজির আমিরাতে, অর্থ পাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের দরিদ্ররা

যাকাত বণ্টনের অনন্য নজির আমিরাতে, অর্থ পাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের দরিদ্ররা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসলামে পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম হলো যাকাত। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতো আরব আমিরাতের মুসলিমরাও যাকাত দিয়ে থাকেন। আরব আমিরাতের মুসলিমদের দেওয়া যাকাতের একটি অংশ ভারত ও পাকিস্তানের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। 

অনলাইন ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে এ যাকাতের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এই ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয় কী পরিমাণ যাকাত দিতে হবে, যা মোট সঞ্চয়ের ২ দশমিক ৫ শতাংশের সমান। 

মুজাম্মিল শেখ। পাকিস্তানি বংশ্দ্ভূত একজন আমিরাতি তিনি। প্রতি বছর রমজান মাসে মুজাম্মিল শেখ ও তার ভাই কী পরিমাণ যাকাত দিতে হবে তা হিসাব করেন। এরপর কাদেরকে ওই যাকাত দেবেন তা নির্ধারণ করেন। 

তারা যাকাতের একটা অংশ তাদের মায়ের বন্ধবীকে দান করেন। এই নারীর স্বামী কর্মহীন। যাকাতের একটা অংশ তারা পাকিস্তানে কাজিনদের কাছে পাঠিয়ে দেন। করাচির কয়েকটি পরিবারের মধ্যে পাঠানো রুপিগুলো ভাগ করে দেওয়া হয়। 

যাকাতের আরেকটা অংশ শ্রীলঙ্কাতে তাদের সাবেক গৃহকর্মীকে পাঠানো হয়। যাকাতের ওই অর্থ দিয়ে গ্রহীতারা তাদের বকেয়া মুদির বিল, চিকিৎসা ব্যয়, বাচ্চাদের স্কুলের খরচ মিটিয়ে থাকে। 

মুজাম্মিল শেখ জানান, যাকাতের পুরো বিষয়টি এমনভাবে সম্পাদন করা হয় যাতে তা সঠিকস্থানে অভাবগ্রস্তদের হাতে পৌঁছে যায়। ৩৫ বছর বয়সী মোজাম্মেল শেখ একজন প্রকৌশলী। তিনি তার জীবনে প্রায় পুরোভাগই আমিরাতে কাটিয়েছেন। 

তিনি জানান, এই  যাকাত যাকেতাকে 'অন্ধভাবে' দেওয়া উচিত নয়। এই যাকাত কার সবচেয়ে বেশি দরকার তা বিবেচনায় নিয়ে বন্টন করা উচিত। 

তিনি বলেন,  যাকাত বাইরের লোকদেরকেই দিতে হবে তা নয়। পরিবারের কেউ যদি অভাবী থাকে তবে তাকে দিয়েই এ যাকাত শুরু করা যায়। যাকাত তাকেই দেয়া উচিত যার প্রকৃতই অর্থের অভাব রয়েছে। 

মাথিলি লোজায়নে। ৩৫ বছর বয়সী এই ফরাসী নারী ওমানে বড় হয়েছেন। ১৭ বছর বয়সে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ২০০৭ সাল থেকে তিনি দুবাইতে বসবাস করছেন।

তিনি সম্প্রতি ভারতে গিয়ে তার যাকাত দিয়েছেন। তিনি পথের ভিক্ষুকদের অর্থ সাহায্য করেছেন। আগ্রার একটি পশু সংরক্ষণ সংস্থাকে তিনি যাকাতের অর্থ দান দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি যাকাত আল ফিতর নামের একটি সংস্থাকে যাকাতের অর্থ প্রদান করেন। 

এদিকে মোজাম্মিল জানান, তিনি পাকিস্তানে যাকাতের অর্থ দরিদ্র আত্মীয়দের পাঠিয়ে থাকেন যাতে তারা ঈদ-উল ফিতরে জামাকাপড় ও খাবার কিনতে পারে। এ ছাড়া তিনি কুরবানি দেওয়ার জন্য ঈদ উল আজহায় টাকা পাঠিয়ে থাকেন। 

অন্যদিকে লোজায়নে জানান, যদিও তিনি এ বছর ভারতে তার জাকাত দিয়েছেন কিন্তু তিনি ভারতকে 'খুব বেশি দূরের স্থান' মনে করেন না। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে নিজের প্রতিবেশীকেই যাকাত দেওয়া হলো বলে মনে করি। কারণ, যাদের অভাব রয়েছে শুধু তাদেরকেই যাকাত প্রদান করতে হয়। সূত্র : দ্য ন্যাশনাল 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে