আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানে পাকিস্তানের হয়ে মাঠে নেমেছে চীন। এই জল্পনা বহুদিনের। এবার তাতেই সিলমোহর দিয়ে তালিবানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করলো বেজিং।
এবার কোনও রাখঢাক না করে তালিবান নেতা মোল্লা আবদুল গনি বারদারকে ডেকে বৈঠক করার কথা জানিয়েছে কমিউনিস্ট দেশটি। তালিবানের চার প্রতিষ্ঠাতার এক জন মোল্লা আবদুল গনি বারদার।
মোল্লা ওমরের পরে দু’নম্বর ক্ষমতাধর হিসাবে পরিচিত এই মোল্লা বারদারকে সম্প্রতি জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে পাকিস্তান। সূত্রের খবর, আফগানিস্তানে আইএসআই-র হয়ে কাজ করার জন্যই তাকে নির্দেশ দিয়েছে পাক সেনা। ইতিমধ্যে মার্কিন প্রতিনিধি জালমে খলিলজাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বারদার। আরও এক দফা বৈঠকের তোড়জোড় হচ্ছে।
এদিকে, মোল্লা বারদারের মুক্তি ও আলোচনা নিয়ে তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছে ভারত। জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরুদ্দিন জানিয়ে দিয়েছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে আফগানিস্তানে লস্কর-ই-তইবা ও জইশ-ই-মোহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলির ‘অভয়ারণ্য’ তৈরি মেনে নেওয়া হবে না।
চীনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘দোহায় তালিবানের রাজনৈতিক দপ্তরের প্রধান মোল্লা বারদার চিনে এসেছিলেন। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় চিনও যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে চায়, তাঁকে সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
লু আরও জানান, চীনের সরকারি কর্তারা মোল্লা বারদারের সঙ্গে কথা বলেছেন। বেজিং এবং তালিবান এ বার থেকে যোগাযোগ রেখে চলবে। আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য মে মাসে চিনের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ দূত দেং সিজুন দিল্লি এসেছিলেন। আফগান আমলাদের প্রশিক্ষণের জন্য ভারত ও চীন একটি যৌথ কর্মসূচিও নিয়েছে।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে তালিবানের উৎখাতের পর নয়াদিল্লি ও কাবুলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যথেষ্ট মজবুত হয়েছে। দেশের মাটিতে ভারত বিরোধী কার্যকলাপ কোনঅভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলে আগেই সাফ জানিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই।
প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে হাক্কানি নেটওয়ার্কের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ ও করেছেন তিনি।পাশপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পরিকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নের স্বার্থে পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। সব মিলিয়ে বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে পাকিস্তান।
এদিকে পাহাড়ি দেশটিতে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাবে উদ্বিগ্ন চিনও। তাই তালিবানের সঙ্গে যোগসাজশ করে, ভারতকে বেকায়দায় ফেলতে পাকিস্তানের হয়ে মাঠে নেমেছে লাল চীন।