মঙ্গলবার, ০৬ আগস্ট, ২০১৯, ১২:৩৫:৪৪

ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরকে দুই টুকরো করে ছাড়লেন নরেন্দ্র মোদি!

ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরকে দুই টুকরো করে ছাড়লেন নরেন্দ্র মোদি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাষ্ট্রপতির নির্দেশ জারির মধ্য দিয়ে মোদির সরকার বাতিল করে দিল ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা, যা জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুই টুকরোও করে ছাড়লো। 

রাজ্য থেকে লাদাখকে বের করে তৈরি করা হলো নতুন এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, যার কোনো বিধানসভা থাকবে না। জম্মু-কাশ্মীরের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদাও কেড়ে নেওয়া হলো। এখন থেকে তার পরিচিতি হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে। তবে তার বিধানসভা থাকবে। দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পরিচালিত করবেন দুই লেফটেন্যান্ট গভর্নর।

এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সংবিধানের ৩৫ (ক) ধারাও বাতিল হয়ে গেল কি না, তা নিয়ে সাংবিধানিক বিতর্ক দেখা দিয়েছে। যদিও কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদ সাংবাদিকদের বলেছেন, বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৩৫ (ক) ধারাও বিলোপ করে দেওয়া হলো। এর মধ্য দিয়ে সরকার জম্মু-কাশ্মীরের জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল। এর পরিণাম ভালো হতে পারে না।

সংবিধানের ৩৭০ ধারায় জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। পররাষ্ট্র, যোগাযোগ ও প্রতিরক্ষা ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ওই রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল। তাদের আলাদা পতাকা ছিল। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ছিল সংবিধান। কালে কালে সব হারিয়ে অবশিষ্ট ছিল সাংবিধানিক ধারা ও কিছু বিশেষ ক্ষমতা। এবার তাও গেল।

সরকারি প্রস্তাব বিল আকারে পেশও করা হয়েছে। এই মুহূর্তে চলছে তা নিয়ে আলোচনা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ সোমবার প্রথমে রাজ্যসভা ও পরে লোকসভায় এই ঘোষণা দেন। বিরোধীদের প্রবল প্রতিরোধের মধ্যে এ-সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির নির্দেশনামা তিনি পড়ে শোনান।

বিজেপির শরিক সংযুক্ত জনতা দল এই সিদ্ধান্তে শরিক হয়নি। দলের নেতা কে সি ত্যাগী বলেছেন, তাঁরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধী। এটা এনডিএরও অ্যাজেন্ডা নয়। অন্য রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপি নিজেদের আলাদা দাবি করে এসেছে বরাবর। 

তিনটি বিষয়ে তারা কখনো তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি থেকে সরেনি। ৩৭০ ধারা বাতিল, সারা দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রচলন ও অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার বাতিল করে দিয়ে তিন লক্ষ্যের একটি বিজেপি পূরণ করল। 

আজ মঙ্গলবার থেকে অযোধ্যা মামলার দৈনন্দিন শুনানি শুরু হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে। বিজেপির বিশ্বাস, অতি দ্রুত সেই শুনানি শেষ হবে এবং অযোধ্যায় মন্দির প্রতিষ্ঠা করার সব বাধা দূর হবে। বাকি থাকল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। তা করার আগে তিন তালাক বিল সরকার পাস করেছে।

কাশ্মীর এই মুহূর্তে থমথমে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হওয়ার কথা ভাবছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে