মঙ্গলবার, ০৬ আগস্ট, ২০১৯, ০২:৩৮:২০

কাশ্মীরের সব মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিজেপি সরকার!

কাশ্মীরের সব মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিজেপি সরকার!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা-সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ সোমবার বাতিল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন নরেন্দ্র মোদির সরকার। কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করার এই সিদ্ধান্ত পার্লামেন্টে পাস হয়ে যাওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে অনেকেই দাবি করছেন, বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অবরুদ্ধ কাশ্মীরের সব মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

এসব ছবির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধান চালানোর পর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য কুইন্ট।
প্রথম ছবিতে কয়েকজন পাঞ্জাবি টুপি পরিহিত ব্যক্তিকে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশকে দেখা যায়। দ্য কুইন্ট বলছে, আমরা এই ছবিটি নিয়ে গুগলে সার্চ করেছি এবং গত ১১ জুলাই এই ছবি ব্যবহার করে একটি সংবাদ প্রকাশ করে নবভারত টাইমস।

এই সংবাদে বলা হয়েছে, উত্তর প্রদেশের বিজনর জেলা পুলিশ একটি বাড়ি ও মাদরাসায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্র জব্দ করেছে। জব্দকৃত অস্ত্রের সঙ্গে অন্তত ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নবভারত টাইমসের প্রতিবেদনে ওই ছবি ব্যবহার করা হয়নি। তবে টুইটারে সার্চে দেখা যায়, এই ছবি একইদিনে টুইট করেছে বিজনর পুলিশ।

দ্বিতীয় ছবিতে টুপি পাঞ্জাবি পরিহিত সাত মুসলিমকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে দেখা যায় পুলিশকে। গত ২৯ জুলাই ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্টেটসম্যান এই ছবি ব্যবহার করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, উত্তর প্রদেশের শামলি জেলা পুলিশ অবৈধভাবে শামলিতে অবস্থানের কারণে মিয়ানমারের চার রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করেছে।

দ্য কুইন্ট বলছে, একই দিনে এই ছবি টুইটারে টুইট করেছে শামলি জেলা পুলিশ। টুইটে পুলিশ জানায়, মিয়ানমারের চার নাগরিকের পাশাপাশি তিনটি মাদরাসার তত্ত্বাবধায়ককেও গ্রেফতার করা হয়।

অপর একটি ছবিতে কয়েকটি সোফার ওপর বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায়। ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইট এএলটি নিউজ বলছে, এই ছবি জনপ্রিয় ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম টাম্বলারে আপলোড করা হয় গত ৩ মার্চ।

ছবিটি নিয়ে অনুসন্ধান চালায় দ্য কুইন্ট। একটি টুইটে ওই ছবিটি পাতিয়ালার কিরান ফ্যাক্টরির বলে জানা যায়। ইন্ডিয়া ট্যুডে এই ছবি ব্যবহার করেছিল।

দ্য কুইন্ট এই ছবির ব্যাপারে জানতে পাতিয়ালার কিরপান কারখানায় অনুসন্ধান চালায়। খালসা কিরপান কারখানার মালিক বচ্চন সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিশ্চিত করেন যে, আগ্নেয়াস্ত্রের ছবিটি তার কারখানার গুদাম থেকে তোলা হয়েছিল; যেখানে এগুলো প্যাকেট করা হয়। বচ্চন সিং জানান, ছবিতে যেসব তরবারি দেখা যায়, সেসব তার কারখানায় তৈরি হয় এবং এই অস্ত্র পুরো পাঞ্জাবে সরবরাহ করা হয়।

সোমবার এসব ছবি বিভিন্নভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে অনেকেই দাবি করেছেন, কাশ্মীর উপত্যকার সব মসজিদ এখন ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। দ্য কুইন্ট দীর্ঘ অনুসন্ধান চালানোর পর বলছে, আসলে এসব ছবি ছড়িয়ে গুজব রটানো হচ্ছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে