শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:৪৫:৫২

কাশ্মীরে সাংবাদিকরা যেভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করছেন!

কাশ্মীরে সাংবাদিকরা যেভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করছেন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা বাতিলের পর থেকে ভারত সরকার সেখানকার রাস্তায় সাংবাদিকরা হে'ন'স্থার শিকার করছে। তাছাড়া বিভিন্নভাবে মানবাধিকার কর্মী থেকে শুরু করে সাংবাদিক ও পত্রিকার সম্পাদকদের হেনস্থা করা হচ্ছে। 

সাংবাদিকদের অভিযোগ, কাশ্মীরের কোনো সংবাদ যেন বহির্বিশ্বে যেতে না পারে, সেজন্য সাংবাদিকদের কোণঠাসা করে রেখেছে ভারত সরকার। চলতি সপ্তাহে দিল্লির সুপ্রিম কোর্ট ভারত সরকারকে কাশ্মীর টাইমস পত্রিকার সম্পাদকের পিটিশনের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। 

জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট থেকে কাশ্মীরে যে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়েছে, তার সমাপ্তি ঘটানোর আবেদন করেছেন তিনি। কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে সাংবাদিকরা অভিযোগ করে বলেন, ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে রাস্তাঘাটে কিছুদূর পর পর কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে রেখেছে ভারতের সেনাবাহিনী।

মোটর সাইকেল নিয়ে মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করলে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়। ফলে বাধ্য হয়ে বিকল্প পথ দিয়ে নানা রকম ঝক্কি-ঝামেলা পার করে সংবাদ সংগ্রহ করছেন সাংবাদিকরা। কাশ্মীরে কোনো ধরনের ইন্টারনেট সংযোগ নেই। এমনকি মোবাইলের নেটওয়ার্কও নেই সেখানে।

ফলে ঝক্কি-ঝামেলা পেরিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করার পরেও সেই সংবাদ বহির্বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে পারছেন না সেখানকার সাংবাদিকরা। চলমান পরিস্থিতিতে কাশ্মীরের সাংবাদিকদের সংবাদ পাঠানোর জন্য ভারত সরকারের ব্যবস্থা করা কেবল পাঁচটি কম্পিউটার রয়েছে।

তার মধ্যে আবার দু'টি কম্পিউটার নারীদের জন্য সংরক্ষিত। কাশ্মীরের কোনো সাংবাদিক সংবাদ পাঠাতে চাইলে এবং ইন্টারনেট পরিষেবা পেতে চাইলে ওই কম্পিউটারের দ্বারস্থ হতে হবে। তবে সেই জায়গা পর্যন্ত পৌঁছাতে সাংবাদিকদের অকথ্য পরিশ্রম এবং ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।

গত ২৩ আগস্ট শ্রীনগরের আঁচার শৌরা এলাকায় বি'ক্ষো'ভ সমাবেশের ডাক দেন কাশ্মীরের নেতারা। তবে সেখানে সময় মতো বেশিরভাগ সাংবাদিকই পৌঁছাতে পারেননি। যারা সেখানে উপস্থিত হতে পেরেছেন, তারাও জানিয়েছেন নিজেদের ভোগান্তির কথা। 

তাদেরকে বিভিন্ন চেক পয়েন্টে থামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে এবং অনেকেই বলছেন তাদের পরিচয়পত্র কেড়ে নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রাখা হয়েছে। ফটোসাংবাদিক শুহাইব মকবুল বলেন, গত সাত বছর ধরে কাশ্মীরে কাজ করছি। তবে এখন কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের জীবনের প্রতি পদে পদে শ'ঙ্কা দেখছি। তবে এখানকার বি'প'দজনক পরিস্থিতি অবশ্য একেবারেই নতুন নয়।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে ভারতের পুলিশের এক সদস্য সরাসরি গুলি চালিয়ে তার বাম চোখ কানা করে দিয়েছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সেখানে সরাসরি গু'লি চালানোর ঘটনা ঘটেছিল বলে জানান তিনি। ওই ঘটনায় বহু মানুষ হ'তাহ'ত হয়েছিল।

তবে তিনি পরিষ্কারভাবে বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমানে কাশ্মীরে সাংবাদিকদের জীবন হু'ম'কির মুখে। যে কোনো মুহূর্তে সাংবাদিকদের যে কেউ খু'ন হয়ে যাওয়ার শ'ঙ্কা রয়েছে। খবর সংগ্রহের জন্য বেরিয়ে আর ফিরে আসার কোনো রকম নিশ্চয়তা নেই সেখানে।

গত ১৭ আগস্ট ভারতের সেনাবাহিনী শুহাইবকে রাস্তায় আ'ট'কে দেয়। ওইদিন আইয়ুব খান নামের এক স্থানীয় নাগরিক কাঁদানে গ্যাসের শেলের আ'ঘা'তে প্রা'ণ হারানোর পর বিক্ষোভ হয়। সেই নিউজ সংগ্রহ করার জন্য গিয়েছিলেন এই ফটোসাংবাদিক।

তবে তার দাবি, আলোকচিত্রীদের কোনোভাবেই বি'ক্ষো'ভস্থলে যেতে দিচ্ছিল না ভারতের সেনাবাহিনী। রাস্তায় তাদের আ'টকে রেখে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা হয়। ঘণ্টাখানেক আ'ট'কে রাখার পর অলোকচিত্রীরা নিজেদের ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে সেনাবাহিনীর একজন বলেন, ফিরে যা, নাহলে তোদের মেরে মেরুদণ্ড ভেঙে দেবো। সূত্র : ইনডিপেনডেন্ট

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে