রবিবার, ০১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০১:২৯:৪৫

সেলসম্যান থেকে লন্ডন পুলিশের স'ন্ত্রা'স দ'ম'ন শাখার প্রধান বাঙালি অফিসার!

সেলসম্যান থেকে লন্ডন পুলিশের স'ন্ত্রা'স দ'ম'ন শাখার প্রধান বাঙালি অফিসার!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গায়ে রং বাদামি বলে বর্ণ বি'দ্বে'ষের শি'কা'র হয়েছেন ছোট থেকেই। বাঙালি বংশোদ্ভূত সেই নীল বসুই এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন লন্ডনে। শহরের অলিগলিতে থেকে স'ন্ত্রা'স ছেঁ'টে ফেলাই তার প্রধান কাজ।

গতকাল লন্ডন ব্রিজের উপর স'ন্ত্রা'স হা'ম'লার তদন্তের ভারেও গিয়ে পড়ে গিয়েছে তার কাঁধেই। এই মুহূর্তে জন সাধারণের নি'রা'প'ত্তা নিশ্চিত করাই তার প্রধান কাজ বলে জানিয়েছেন তিনি।

৫০ বছর বয়সী নীলের বাবার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা কলকাতায়। পেশায় শল্য চিকিৎসক তিনি। পরে ইংল্যান্ড চলে যান। কর্মসূত্রে আলাপ হওয়া ওয়েলসের এক মহিলাকে বিয়ে করেন। তাদেরই সন্তান নীল। সাতের দশকে স্ট্যাফোর্ডে বেড়ে ওঠেন তিনি। গায়ের রঙের জন্য ছোট থেকেই হেনস্থা হতে হয়েছে তাকে। তবে তা কখনওই মা'ন'সি'ক ভাবে তাকে দু্র্বল করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে মা-বাবা দু'জনেই চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত হলেও, তিনি নিজে সেই পেশায় ঢুকতে চাননি বলে জানিয়েছেন নীল। বাবা চেয়েছিলেন ছেলে আইনজীবী হোক, তবে পড়াশোনার জন্য অর্থনীতিকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। সেইমতো নটিংহ্যাম ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতি নিয়ে পাশ করেন। 

এর পর বার্কলেজ ব্যাঙ্কে শিক্ষানবিশ হিসাবেও কাজ করেন কিছু দিন। সেখান থেকে কেক-পেস্ট্রির সংস্থা ‘মার্স কনফেকশনারি কোম্পানি’-তে সেলসম্যান হিসাবেও কাজ করেন। কিন্তু সেখান মনে বসেনি তার।

এর পরই ১৯৯২ সালে, ২৪ বছর বয়সে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগ দেন তিনি। দক্ষিণ লন্ডনের ব্যাটারসি-তে সাইকেলে চেপে এবং পায়ে হেঁটে নজরদারি চালানোই সেই সময় প্রধান কাজ ছিল তার। টানা চার বছর ওই ভাবে কাজ করার পর, ব্রিক্সটনে সার্জেন্ট হিসাবে নিযোগ করা হয় তাকে। ১৯৯৭ সালে সিআইডির সার্জেন্ট হিসাবে বদলি করা হয় তাকে এবং তার দু'বছর পর ইনস্পেক্টর পদে উন্নীত হন। 

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের দু'র্নী'তি দ'ম'ন বিভাগেও কাজের সুযোগ পান নীল। ২০০৩ সালে লন্ডন পুলিশের হো'মিসা'ইড শাখার ডিটে'কটি'ভ চিফ ইনস্পেক্টর নিযুক্ত হন। টানা তিন বছর ওই পদে থাকার পর সংগঠিত অ'পরা'ধ বিভাগের ডিটে'ক'টিভ সুপারইন্টেন্ডেন্ট পদে উন্নীত হন তিনি। তবে এরপরেই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে তার জীবনে। 

হাতে কলমে কখনও অ'স্ত্র প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে না গেলেও, ২০১৩-১৪ সালে স'শ'স্ত্র পুলিশের কম্যান্ডার ইন চার্জ নি'যু'ক্ত হন তিনি। সেই নিয়ে প্রশ্ন করলে একটি সংবাদমাধ্যমে নীল বলেন, ‘জীবনে কখনও ব'ন্দু'ক হাতে নেওয়ার ইচ্ছাই হয়নি আমার। পুলিশের চাকরি অ'স্ত্রস'র্ব'স্ব হলে হয়ত এই পেশাতেই আসতাম না আমি।’

২০১৫ সালে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার নিযুক্ত হন নীল। সেইসময় স'ন্ত্রা'সদ'ম'ন শাখার তৎকালীন প্রধান স্যর মার্ক রাওলির সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান। গত কয়েক বছরে লন্ডন এবং ব্রিটেন জুড়ে একাধিক স'ন্ত্রা'স হা'ম'লা ঘটলে, সে দেশের গু'প্তচ'র সংস্থা এমআই-৫-এর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কাজ করার সুযোগ মেলে। তারপরেই গত বছর মার্চে মার্ক রাউলি অবসর নিলে, স'ন্ত্রা'সদ'ম'ন শাখার প্রধান নিযুক্ত করা হয় নীল বসুকে।

দীর্ঘ কেরিয়ারে কখনও নিজেকে জাহির করেননি বলে সুনাম রয়েছে নীলের। কোনও মামলায় বিরাট সাফল্য পেলেও, কখনও সংবাদমাধ্যমের সামনে তা নিয়ে বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি তাকে। তার জন্য সহকর্মীদের মধ্যে তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয়ও। নীলের স্ত্রী নিনা কোপ বসু সে দেশের জাতীয় অ'পরা'ধ সংস্থা (ন্যাশনাল ক্রা'ই'ম এজেন্সি)-র ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল। তাদের তিন সন্তান রয়েছে। সূত্র : আনন্দবাজার

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে