আন্তর্জতিক ডেস্ক : ভারতের রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পর তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ-ও বদলে যেতে চলেছে। বিজেপি’র সঙ্গে ১৮ মাসের সম্পর্কে দাঁড়ি টেনে আবারো দল ছাড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন সাবেক মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর।
শক্তিপুরের বাড়িতে বসে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, যে দলেই থেকেছি মুর্শিদাবাদের মানুষ আমাকে ভালোবেসে পাশে থেকেছেন। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সেইসব মানুষের স্বার্থে খাঁড়ার মতো নেমে আসছে। তাই বিজেপিতে আর থাকব না।
রাজ্য জুড়ে এনআরসির প্রতিবাদের ছায়ায় বুধবার দোসর হিসেবে জুড়ে গেছে সিএবি বা নাগরিকত্ব বিলের আতঙ্ক। তারই প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন বিরোধীরা। সেই বিরুদ্ধাচারণের তালিকায় যে বিজেপি’র কোনো নেতা থাকতে পারেন, বিজেপির শীর্ষ নেতারা তা ভাবতেও পারেননি।
বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় সে কারণে খবরটা শুনে হুমায়ুনকে পরামর্শ দেন, জলদবাজি মত দিখাও যারা শোচ কে তো দেখো (তাড়াহুড়ো করো না, ভেবে দেখ)! বিজেপি’র মুর্শিদাবাদ (দক্ষিণ) জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলছেন, আমাকে এখনো দলত্যাগের ব্যাপারে কিছু তো জানাননি। আসলে হুমায়ুন বিজেপিকে বুঝতে পারেননি।
হুমায়ুন অবশ্য বলেন, না বোঝার কিছু নেই। রাজনীতিতে থাকতে হলে ‘মানুষের স্বার্থ’ নিয়ে ছেলেখেলা করতে পারব না। এবার কোথায় যাবেন সে ব্যাপারে না বললেও রেজিনগর এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর দাপট যে অনস্বীকার্য, তা মেনে নিয়েছেন স্থানীয় কংগ্রেস কিংবা তৃণমূল— দু’পক্ষই। হুমায়ুন বলছেন, একটু ভেবে দেখি।
কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে পা বাড়িয়েছিলেন হুমায়ুন। যোগ দিয়েই পেয়েছিলেন মন্ত্রিত্ব। তবে ঠোঁটকাটা হুমায়ুন দলের তদানীন্তন জেলা পর্যবেক্ষকের সম্পর্কে ‘বিরূপ’ মন্তব্য করায় দল তাকে ছেঁটে ফেলেছিল।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নির্দলীয় হিসেবে দাঁড়িয়ে সামান্য ভোটে হেরে গিয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে। পরের বছরে পুরনো দল কংগ্রেসে ফিরলেও ২০১৮ সালে আবারো দল বদলে পা বাড়িয়েছিলেন বিজেপিতে। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’র প্রার্থীও হয়েছিলেন এবং সব হিসেব উল্টে দিয়ে সংখ্যালঘু ভোটের সিংহভাগই নিজের ভোট বাক্সে টেনে এনেছিলেন বলে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি।