মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩১:৫১

যেসব কারণে পাঁচ মাস আগে লোকসভায় মোদিকে 'হ্যাঁ' বলেও রাজ্যে 'না' বলল ঝাড়খণ্ডবাসী!

যেসব কারণে পাঁচ মাস আগে লোকসভায় মোদিকে 'হ্যাঁ' বলেও রাজ্যে 'না' বলল ঝাড়খণ্ডবাসী!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ঝাড়খণ্ডের রাঁচি শহরের প্রাণকেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী আবাসের সদর দরজা হাট করে খোলা। গুটিকয়েক নিরাপত্তা র’ক্ষী ছাড়া কেউ নেই বাড়িতে। বাড়িটা কিছুক্ষণের জন্য যেন মালিকহীন। কাক পক্ষীর দেখাও নেই। 

আর ঠিক পাশের বাড়িতে, রাজ্যের বি'রো'ধী দলনেতার বরাদ্দ সরকারি আবাসে তখন দুপুর বেলায় তুবড়ি জ্বালাচ্ছে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার সমর্থকরা। তাদের কাঁধে রাখা সবুজ রঙের ঝান্ডায় দিশম গুরু শিবু সোরেনের মুখ।

বেলা গড়ালে রাঁচির এই দু'টি বাড়ির দুই বিপরীত চিত্রের মতোই গড়ালো ফলাফল। আড়াআড়ি ভাবেই বিপরীত এবং বেশ দূরত্ব রেখেই জয়। কাছাকাছি কিম্বা ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলার প্রশ্নই নেই। রায়ের চরিত্রই বলে দিচ্ছে প্রতিষ্ঠান বিরো’ধী হাওয়ায় জনতা স্রেফ না করে দিয়েছে। 

ঠিক যেমন কয়েক মাস আগেই লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদিতেই 'হ্যাঁ' বলেছিল ঝাড়খন্ডবাসী। ঝাড়খন্ডের চ'র'ম আবহাওয়ার মতই মানুষের মন। 'আড় ইয়া পাড়'। মাঝামাঝি কিছু নেই। কিন্তু কেন এইভাবে মুখ ফিরেয়ে নিলো?

কিন্তু লোকসভার ১৪ আসনের মধ্যে একক ভাবে ১২ পাওয়া বিজেপি বিধানসভায় ডাহা ফেল। ব্যাখ্যা পাওয়ার জন্য বিশ্লেষকের প্রয়োজন নেই। উত্তর পাবেন রাঁচির পথেঘাটে। "ওহ তো কেন্দ্র মে মোদিকো ভোট দিয়া থা, ওউর ইহা রঘুবর কো ইনকার কর দিয়া লোগোনে" এমন কথা হামেশাই শুনতে পাবেন রাঁচির রাস্তায়। বিধানসভা ভোটের আগে রঘুবর ডাক দিয়েছিলেন "অব কি বার ৬৫ পাড়"। আর ঝাড়খন্ডবাসী মনে মনে বলেছিলো "অব কি বার আড় ইয়া পাড়"।

প্রসঙ্গ পাড়তেই মাটির হাঁড়িতে জ্বাল দেওয়া ঘন দুধ চায়ে চুমুক দিয়ে নীতিন সিনহা বলেন "প্রথম কথা রঘুবরের (বিজেপি নেতা/মুখ্যমন্ত্রী) ব্যবহার, মানুষ কু’ত্তা মনে করতো" এই ব্যবহার নিয়ে ক্ষু'ব্ধ দলের নেতা থেকে প্রশাসনের আমলারা সবাই। আদিবাসীদের সমর্থন তো আগেই খুইয়ে ছিলেন ছোটনাগপুর টেনেন্সি অ্যাক্ট-এ সংশো'ধন আনতে গিয়ে এবার বড় শহরের লোকেদেরও সমর্থন হারালেন। 

কারণ খুব সহজ, কিছু রাস্তা বাদ দিলে খোদ রাঁচি শহরের রাস্তা বেহাল। পানীয় জলের সং'ক'ট রয়েছে কমবেশী গ্রাম-শহর সব মিলিয়েই। জামশেদপুর শহরে ছিয়াশি কলোনীর জমি সমস্যা কথা দিয়েও মেটাননি রঘুবর। ভোটের ফলে তার প্র'ভা'ব পড়েছে মা'রা'ত্ম'ক ভাবে। অন্যান্য উন্নত নগর পরিষেবার কথা তো রীতিমতো অমিল। 

সেই সঙ্গে ঝাড়খন্ড বিজেপিতে র'ঘুব'র বিরো'ধী হাওয়া দলকে ঘু'ণ পো'কার মতো খেয়েছে বলেই মত রাজনীতিকদের। অন্যদিকে মোদীর কেন্দ্রীয় প্রকল্প গুলি পেয়েছে রাজ্যবাসী। রঘুবরও হয়তো ভেবেছিলেন মোদির সঙ্গে নিজের ছবি আর কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জো'রেই উ'তরে যাবেন ভোট। ততক্ষনে মানুষ যে মন স্থির করে ফেলেছেন শুধু তাই বোঝেননি রঘুবর। মানুষের মন বোঝার তার সময় কোথায়!

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে