বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২০, ০৭:২৭:৩১

ইরানের ভ'য়াব'হ ক্ষে'পণা'স্ত্র হাম'লার বর্ণনা দিলেন মার্কিন সেনা

ইরানের ভ'য়াব'হ ক্ষে'পণা'স্ত্র হাম'লার বর্ণনা দিলেন মার্কিন সেনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হ'ত্যার প্র'তি'শো'ধ হিসেবে গত ৮ জানুয়ারি ভোরে ইরাকে অবস্থিত দু’টি মার্কিন সাম'রিক ঘাঁ'টিতে ১৩টি ক্ষে'পণা'স্ত্র ছো'ড়ে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান। কিন্তু মার্কিন বাহিনীর আকাশে শ'ক্তিশা'লী চো'খ থাকার পরও একটি ক্ষে'পণা'স্ত্রও ঠে'কাতে পারেনি। কী ঘ'টেছিল সেদিন সেই প'রি'স্থি'তির কিছুটা বর্ণনা উঠে এসেছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র প্রতিবে'দনে।

সেদিন ইরানের ক্ষে'পণা'স্ত্রের হা'ম'লায় কয়েক ঘণ্টা পু'রো বিচ্ছি'ন্ন হয়ে পড়েছিল ইরাকে অবস্থিত মার্কিন বিমান ঘাঁ'টি। উ'চ্চক্ষম'তাস'ম্পন্ন যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছি'ন্ন হয়ে সেনারা আ'কাশে তাদের শ'ক্তিশা'লী নজ'রদা'রির নিয়ন্ত্র'ণ হা'রায়। যেন কয়েক ঘণ্টার জন্য অ'ন্ধ হয়ে যায় তারা।

ইরাকের আইন আল-আসাদ মার্কিন বিমান ঘাঁ'টিটি যখন ইরানের একের পর এক ক্ষে'পণা'স্ত্রের আ'ঘা'তে প'র্যুদ'স্ত, তখন মুহূ'র্তের মধ্যে চোখে ধাঁ'ধা লা'গে মার্কিন সেনাদের। আকাশে মার্কিন সেনাদের অতি শ'ক্তি'শা'লী ও ব্যয়বহুল নজ'রদা'রি ব্যবস্থা অকা'র্যকর হয়ে পড়ে।

সেদিনের হাম'লায় যুক্তরাষ্ট্রের অসহা'য়ত্বের চি'ত্রই ফুটে উঠেছে মার্কিন সেনাদের বক্তব্যে। আইন আল আসাদ ঘাঁ'টিতে যৌথ বাহিনী আয়োজিত গণমাধ্যমের পরিদর্শন অনুষ্ঠানে এএফপির সঙ্গে কথা হয় সেদিন ঘ'টনাস্থলে থাকা মার্কিন সেনাদের।এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় ৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ৩৫ মিনিটে ইরানি ক্ষে'পণা'স্ত্র বিমান ঘাঁ'টিতে আ'ঘা'ত করে। ঘাঁ'টিতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী মোতা'য়েন ছিল। ঘাঁ'টিতে নজ'রদারি রাখার জন্য ওই সময় মার্কিন সেনাদের সাতটি ড্রো'ন মানবশূ'ন্য যান আন'ম্যান্ড এরিয়াল ভেহি'কেলস (ইউএভিএস) ইরাকের আকাশজু'ড়ে উ'ড়ছিল। এতে যু'ক্ত ছিল এমকিউ-১ সি গ্রে ঈগলস নামের অত্যা'ধুনিক নজ'রদারি ড্রো'ন যেগুলো ২৭ ঘণ্টা পর্যন্ত উ'ড়তে পারে এবং চারটি পর্যন্ত ক্ষে'পণা'স্ত্র বহ'ন করতে পারে। এর একজন পাইলট ২৬ বছর বয়সী স্টাফ সার্জেন্ট কসটিন হেরউইগ বলেন, ‘সং'ঘা'ত হতে পারে ভেবে আমরা এয়ারক্রাফটগুলো (ড্রো'ন) চালু রেখেছিলাম।’

৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদে ইরানি জেনারেল কাশেম সোলাইমানিকে যুক্তরাষ্ট্র ড্রো'ন হা'মলা চা'লিয়ে হ'ত্যার পর প্র'তিশো'ধ হিসেবে ইরান ক্ষে'পণা'স্ত্র হা'ম'লা চা'লায়। ইরান যখন মার্কিন ঘাঁ'টিতে প্রথম ক্ষে'পণা'স্ত্র ছো'ড়ে, তখন হেরউইগ গ্রে ঈগল চা'লাচ্ছিলেন। হাম'লার আগা'ম সত'র্কতার নির্দেশ পেয়ে ঘাঁ'টির দেড় হাজার সেনার বেশির ভাগই দুই ঘণ্টা ধ'রে বা'ঙ্কারে অবস্থান করছিল। তবে ১৪ জন পাইলটকে ঘো'র কালো ভা'র্চ্যুয়াল ককপিটে বসে যানগুলোকে রি'মোট কন্ট্রো'লে উ'ড়াতে হচ্ছিল। উচ্চ ক্ষম'তা'সম্পন্ন ক্যামেরায় চোখ রেখে চারপাশের পরিস্থি'তি দেখছিলেন তারা।

হেরউইগ বলেন, প্রথম ক্ষে'পণা'স্ত্রটি তাদের শে'ল্টারে আ'ঘা'ত হা'নে। তবে পাইলটদের আগের অবস্থানেই থাকতে হয়। এরপর একের পর এক আ'ঘা'ত হতে থাকে। তিনি ভাগ্যকে বরণ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। সেনারা জানান, তিন ঘণ্টা পর্যন্ত ক্ষে'পণা'স্ত্র ছো'ড়া হয়। পাইলটদের অপা'রেশন কক্ষ লা'গোয়া ঘু'মানোর কোয়ার্টারে ক্ষে'পণা'স্ত্রের আঘা'ত লাগে। ফার্স্ট সার্জেন্ট ওয়েসলে কিলপ্যাট্রিক বলেন, শেষ ক্ষে'পণা'স্ত্র ছো'ড়ার এক মিনিটেরও কম সময়ে আমি বেশ কিছুটা পেছন দিকে দিয়ে ঘু'রে বা'ঙ্কারের দিকে যাচ্ছিলাম। দেখলাম, আমাদের ফাইবার লাইনগুলো আগু'নে পু'ড়ছে। ওই লাইনগুলো ভা'র্চ্যুয়াল ককপিট থেকে এন্টেনা এবং স্যাটে'লাইটের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। এর মাধ্যমে গ্রে ঈ'গলসে সি'গন্যা'ল পাঠানো হতো এবং ক্যামেরা থেকে পাওয়া ফিডব্যাক আইন আল-আসাদ ঘাঁ'টির স্ক্রি'নে চলে যেত।

কিলপ্যাট্রিক বলেন, ফাইবার সং'যোগ বিচ্ছি'ন্ন হয়ে যাওয়ায় সেখানে আর কোনো নিয়'ন্ত্রণ ছিল না। ফলে সেনারা ড্রো'নগুলোর অবস্থান আর খুঁ'জে পাচ্ছিল না এবং আকাশে-মাটিতে কী ঘ'টছে, সে সম্পর্কে কিছু জানতে পারছিল না। তারা ঘটনা সম্পর্কে পু'রো অ'ন্ধকারে চলে যায়। ওই সময় কোনো ড্রো'নকে ভূপা'তিত করা হলেও আইন আল-আসাদে অবরু'দ্ধ হয়ে পড়া বাহিনী খবর পেত না। হেরউইগ বলেন, ‘এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার। একে তো এটা অনেক ব্যয়বহুল। তা ছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যে, আমরা চাই না তা অন্যের হাতে প'ড়ুক বা শ'ত্রুপ'ক্ষ পেয়ে যাক।’

২০১৯ সালে মার্কিন সামরিক বাজেট অনুসারে, একটি গ্রে ঈগলের দাম ৭০ লাখ মার্কিন ডলার (৫৯ কোটি ২৯ লাখ টাকার বেশি)। ইরাকে মোতায়েনরত মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী ২০১৭ সাল থেকে এটি ব্যবহার করছে।

ইরাকের আকাশে ড্রো'ন ও উড়োজাহাজ ও'ড়ানোর জন্য যৌথ বাহিনী ইরাকি সরকারের কাছে সবুজ সংকেত পেয়েছে। তবে ইরান হা'মলা চা'লানোর কয়েক দিন আগে ওই অনুমো'দনের সময়সীমা পেরিয়ে গেছে। এরপরও ইরাকের আকাশে ড্রো'ন চালানো অব্যাহ'ত রেখেছে মার্কিন বাহিনী।

৮ জানুয়ারি ক্ষে'পণা'স্ত্র হা'মলার এক পর্যায়ে পাইলটরা বা'ঙ্কারে আশ্র'য় নিতে বা'ধ্য হন। তবে হাম'লা বন্ধ হওয়া মাত্র তার ফে'র ছু'টে গিয়ে গ্রে ঈ'গলসের সঙ্গে সং'যোগ পাওয়ার চেষ্টা করেন। ভোর হলে সেনারা পু'ড়ে যাওয়া ফাইবারের ৫০০ মিটার পর্যন্ত প্রতিস্থা'পন করতে পারেন। ইরানি ক্ষে'পণা'স্ত্রের আ'ঘা'তে আইন আল-আসাদ ঘাঁ'টিতে গ'র্ত তৈরি হয় এবং নিয়ন্ত্র'ণ টাওয়ার ফাঁ'কা পড়ে থাকে। হেরউইগ বলেন, ‘এয়ার ক্র্যা'ফট অব'তরণের জায়গা ব'ন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই কারও সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই আমাদের অন্যত্র অবত'রণ করাতে হয়। বাকি এয়া'রক্রাফট কোথায় আছে আমরা জানতাম না। ওই সময়টা বেশ উ'দ্বে'গজনক ছিল।’

ক্ষে'পণা'স্ত্র হা'মলার পর মার্কিন সেনাদের জন্য অগ্রা'ধিকারের মধ্যে ছিল গ্রে ঈগ'লকে অবতরণ করানো। উদ্বে'গজনক পর্যায়ে জ্বালানি কমে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেগুলোকে আকাশে উ'ড়তে হয়েছিল। পাইলটদের কয়েক ঘণ্টা লে'গেছে এক এক করে ড্রোন অবতরণ করাতে। সকাল নয়টায় শেষ ড্রো'নটিকে অবতরণ করানো হয়। সূত্র: রেডিও তেহরান

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে