বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০, ১২:২৫:৫৬

শাহিনবাগসহ যে ৫ কারণে দিল্লিতে বিজেপির ভরাডুবি

শাহিনবাগসহ যে ৫ কারণে দিল্লিতে বিজেপির ভরাডুবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আম আদমী পার্টির (আপ) অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ধাক্কায় ধরাশয়ী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি। 'মাফলার ম্যান' থেকে টানা তিন বার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসতে যাচ্ছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

২০১২ সালের নভেম্বরে যখন জনসমক্ষে এল আম আদমি পার্টি, তখনও কি কেউ ভেবেছিল নতুন এই দলটা আগামী আট বছরে ইতিহাস গড়বে? শুধু কি ইতিহাস গড়া, উল্টে দেবে সব হিসাব? কোনো রাজনৈতিক পরিচিতি ছাড়াই একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করাই শুধু নয় কংগ্রেস, বিজেপির মতো বর্ধিষ্ণু দলকে পিছনে ফেলে পর পর তিন বার আসবেন দিল্লির ক্ষমতায়।

টানা ২০ বছর ধরে বিজেপির দিল্লি দ'খলের লড়াই এবারও শেষ হল না। আপের দাবি, কাজের জন্যই ভোট পেয়েছে তারা। কিন্তু কেন দিল্লিতে বিজেপির এই ভরাডুবি? আপের এই বিপুল সাফল্য ভারতের রাজনীতিতেই বা কী তাৎপর্য বহন করছে? ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ আপের এই সাফল্যের পেছনে ৫ টি কারণ উল্লেখ করেছে।

সুশাসন: কেজরিওয়ালের এই সাফল্যের পেছনে প্রধান কারণ সুশাসন। এবার আপের প্রচারই ছিল, কাজ করলে ভোট দিন। তা নইলে নয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানি, বিদ্যুতের ক্ষেত্রে কাজ করে মানুষের নজর কাড়তে পেরেছে আপ। ফ্রিতে বিদ্যুত, ঘরে ঘরে পানি সরবারহ, মহল্লা ক্লিনিক মন জয় করেছে মানুষের। গত পাঁচ বছরে সাধারণ মানুষের জন্য অনেক উন্নয়নমুখী প্রকল্প তৈরি এবং তার বাস্তব রূপায়ণের উপরেই আস্থা রেখেছেন দিল্লিবাসী।

প্রচারে সং'য'ম: বিজেপির ধর্মীয় মে'রুক'রণের উস্কা'নিতে পা না দিয়ে প্রচার করে গিয়েছেন শুধু নিজের সরকারের এই সব জনমুখী প্রকল্পের সাফল্য। শাহিনবাগের আঁচ কার্যত গায়ে মাখেননি, জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ে হা'ম'লার ঘটনায় সেভাবে মুখ খোলেননি। নির্বাচনের প্রচারে বিশাল বাহিনী নামিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। ২৫০ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, নেতাকে নামানো হয়েছিল ময়দানে। 

কিন্তু তাদের অধিকাংশই যেভাবে অশা'লীন মন্তব্য করে গিয়েছেন তা চোখে ঠেকেছে মানুষের। কখনও বলা হয়েছে দিল্লির নির্বাচন ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ। এমনকি, বিজেপি নেতা এটাও বলেছেন, শাহিনবাগের লোকজন ঘরে ঢুকে মহিলাদের স'ম্ভ্র'ম ন'ষ্ট করবে। অন্যদিকে, অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিজেপি আ'ক্র'মণের মুখে রে'গেছেন বটে তবে নিজের সবসময় 'আপনাদের বেটা' বলে তুলে ধরেছেন। এসব ছোট ছোট ব্যাপার ন'জ'র কে'ড়েছে।

হিন্দুত্ব কার্ড ব্য'র্থ: গত কয়েক বছরে বিজেপির পক্ষে হিন্দুত্ব কাজ করলেও এবার তা হয়নি। অথচ হাতে ছিল এনআরসির মতো ইস্যু। কংগ্রেসও হালকা হিন্দুত্বের দিকে ঝুঁ'কেছিল। কিন্তু তারাও ব্য'র্থ। এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সফল হয়েছেন কেজরি। গত বিধানসভা নির্বাচনে জামা মসজিদের শাহি ইমামের সমর্থন সরাসরি প্রত্যা'ক্ষান করেছিলেন কেজরি। এবারও তার কোনও ছোঁয়া রাখেননি। বরং সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে কিছুটা হিন্দু বলেই তুলে ধরার চেষ্টা করেন কেজরি।

দিল্লির মধ্যবিত্ত: দিল্লির মধ্যবিত্ত ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে ফেলতে পেরেছে আপ। বিভিন্ন রকম ফ্রি দিয়ে তাদের দরজায় পৌঁছতে পরেছিলেন আপ প্রধান। পাশাপাশি প্রকাশ্যে তিনি এমনও বলেছেন, কেন্দ্রে মোদি ও দিল্লিতে কেজরি-এমনটাই ঠিক করে ফেলেছে মানুষ। খুব কা'য়দা করেন কেজরী মানুষের মনে ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন, অ'সু'স্থ হলে বিজেপি চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে না, বিদ্যুত ফ্রি দেবে না। এনআরসি নিয়ে কী হবে!

কংগ্রেস ফ্যাক্টর: গত নির্বাচনে বিজেপির খা'রাপ ফল করলেও কেজরিওয়াল সম্ভবত বোঝাতে পেরেছিলেন দিল্লিতে আপের প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি। আঞ্চলিক সম'স্যা তুলে ধরার পাশাপাশি সর্বভারতীয় পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি যে ক্র'ম'শ কো'ণঠা'সা হচ্ছে তা তার প্রচার করেছিল আপ। প্রচারে কংগ্রেসকে প্রায় মুছে ফেলেছিল কেজরিওয়ালের দল। এর ফলে কিছু ফ্লোটিং ভোটও এসেছে আপের বাক্সে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে