যে কারণে নিবন্ধনের পরেও বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে যায়নি ১১টি পরিবার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিরতে চেয়ে নিবন্ধন করেও কুচবিহারে ফেরত যেতে রাজি হয়নি বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত ভারতীয় ছিটমহল নাজিরগঞ্জ আর দইখাতার ১১টি পরিবার। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। গত ৩০ নভেম্বর নাগাদ বাংলাদেশ-ভারতের বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দা বিনিময়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
ওই ১১টি পরিবারের না ফেরার জন্য ভারতের আশ্রয় শিবিরে অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এবং জমির মালিকানা নিয়ে অনিশ্চয়তাকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানায়, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে স্থলসীমা চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে সমঝোতা হওয়ার পর ভারতে থাকা ৪,৮৬৩ ছিটবাসীর কেউই বাংলাদেশে ফিরতে আগ্রহী হয়নি। আর বাংলাদেশে থাকা ৩৮,৫২১ জন ছিটবাসীর মধ্যে ৯৮৯ জন ভারতে ফেরার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তাদের ধাপে ধাপে ভারতে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার পর দেখা গেছে, বাংলাদেশ থেকে ভারতের আশ্রয় শিবিরে গেছেন ৯২০ জন। যে ৬৯ জন ভারতে ফেরত যাননি তাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত ভারতীয় ছিটমহল নাজিরগঞ্জ আর দইখাতার বাসিন্দা।
এ দুই ছিটমহল থেকে এরইমধ্যে যারা ভারতে ফেরত গেছেন তাদের দাবি, ভূমি হারানোর শঙ্কা থেকেই অন্যরা বাংলাদেশ ছাড়েননি। নাজিরগঞ্জের সাবেক এক বাসিন্দা বলেন,`চাইলেই তো আর সমূলে গোটা পরিবার চলে আসা যায় না। আমাদের জটিলতা পোহাতে হয়েছে। বিলুপ্ত ছিটমহলের নিরাপত্তার প্রশ্ন নিয়ে ভাবতে হয়েছে। আমাদের নামে যেসব জমির মালিকানা ছিল তা বিক্রি কিংবা তার জন্য ক্ষতিপূরণ না নিয়ে তো আর ফেরা যায় না। এ ব্যাপারে আমি হাই কমিশনার বরাবর লিখিত দিয়েছি।’
সিটিজেন রাইটস কোঅর্ডিনেশন কমিটির আহ্বায়ক দীপ্তিমান সেনগুপ্তও জানান, বাংলাদেশে থাকা জমির মালিকানা নিয়ে সুরাহা না হওয়ার কারণেই বিলুপ্ত ছিটমহলের বাকি বাসিন্দারা ভারতে ফেরেননি। তিনি বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহলের অনেক বাসিন্দাই তাদের জমি বিক্রি নিয়ে জটিলতায় পড়েছিলেন। ৩০ নভেম্বরের আগে তাদের জমি বিক্রি হয়নি কিংবা বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এমনকি সেই সময় পার হওয়ার পরও ভূমি রাজস্ব সংক্রান্ত বিভাগ তাদের জরিপ শুরু করেনি। আর সেকারণে তুফানগঞ্জ সাব ডিভিশনে বিলুপ্ত কৃষ্ণপুর ছিটমহলের কিছু জমি অবৈধ দখলে চলে গেছে। সেনগুপ্তের মতে, যেসব পরিবার ভারতে ফেরেনি তাদের বেশিরভাগেরই বাংলাদেশে ২০ বিঘা করে জমি আছে। আর এতো বিপুল পরিমাণ জমি ফেলে ভারতীয় আশ্রয় শিবিরে অপর্যাপ্ততার মধ্যে তারা বাস করতে চায় না বলেই শেষ পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্ত। সূত্র:ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
২৭ ডিসেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস
�