শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০, ০৩:০৫:২৭

পশ্চিমবঙ্গে শহীদ বরকতের গ্রাম হতে যাচ্ছে ইতিহাস

পশ্চিমবঙ্গে শহীদ বরকতের গ্রাম হতে যাচ্ছে ইতিহাস

অনিতা চৌধুরী, কলকাতা প্রতিনিধি: কলকাতা থেকে ১৭৫ কিলোমিটার দূরে। মুর্শিদাবাদ জেলার একটি গ্রাম সালার। গ্রামটি হতে চলেছে ইতিহাসের সাক্ষী। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন আজ শুক্রবার সেখানে উন্মোচিত হতে যাচ্ছে ভাষা শহীদ আবুল বরকতের প্রতিকৃতি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এটি উন্মোচন করবেন।

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের বেশ খানিকটা জড়িত এই সালার।  শহীদ বরকতের জন্ম এই গ্রামে। পশ্চিমবঙ্গে মেট্রিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়তে যান বরকত। জড়িয়ে পড়েন ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে। একুশে ফেব্রুয়ারি সেই রক্তমাখা দিনে পুলিশের গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বরকত। সেইসঙ্গে সালাম, রফিক, জব্বার এবং শফিউর রহমান।

স্থানীয় তৃণমূল নেতা গৌতম রায় বলেন, 'সালারে বরকতের নামে একটি গ্রন্থাগার এবং ক্লাব আছে। এবার আমরা ওনার প্রতিকৃতি বসাচ্ছি।'

বরকতের প্রতিকৃতি উন্মোচন নিয়ে গ্রামে এখন খুশির হাওয়া। গ্রামের অনেক বাসিন্দা কালের কণ্ঠকে বলেছেন, গ্রামে বরকতের প্রতিকৃতি যখন বসানো হচ্ছে, এর সঙ্গে যেন ভাষা আন্দোলন ও  ভাষা শহীদদের ওপর একটি সংগ্রহশালা নির্মাণ করা হয়।

গ্রামের কয়েকজন পুরনো বাসিন্দা এখনো বলতে পারেন বরকতের কথা। তাঁরা জানান, মেধাবী ছাত্র বরকত ১৯৪৮ সালে ঢাকায় যান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা   বাংলাদেশে চলে যান। যাওয়ার আগে বাড়ি এবং সংলগ্ন জমি দান করে যান।

সেই বাড়িতে এখন থাকেন গ্রামেরই এক পরিবার। পরিবারটির সদস্য গোলাম মোর্শেদ জানান, তিনি বাড়িটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বোঝেন। তিনি বলেন, 'তবে আমাকে কোনদিন সরকারের তরফ থেকে বলা হয়নি এখানে ভাষা শহীদের নিয়ে সংগ্রহশালা হবে। যদি তেমন কোনো প্রস্তাব থাকে আমি বিবেচনা করব।'

গ্রামবাসী জানান, তারা চান সালারকে ঘিরে গড়ে উঠুক ভাষা আন্দোলন এবং ভাষা শহীদদের সংগ্রহশালা এবং স্মৃতিসৌধ। একজন বলেন, 'আন্দোলনটি ছিল বাংলাভাষার জন্য। বাংলাদেশ যেভাবে সে আন্দোলনের কথা মনে রেখেছে, আমাদেরও মনে রাখতে হবে। আগামী প্রজন্মের জন্য বরকতের জন্মস্থান সালারকে সেই মর্যাদা দিতে হবে।'

স্থানীয় তৃণমূল নেতারা জানান, তাঁরা গ্রামের মানুষের আবেগের কথা জানেন। মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে সেই আবেগের কথা  জানাবেন বরকতের প্রতিকৃতি উন্মোচনের সময়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে