‘ওপরে কুস্তি, নিচে দোস্তি’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্রিগেডের ময়দান থেকেই তৃণমূল সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ডাক দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই এ কথা শোনা গেল। রাজ্যে মমতা ও কেন্দ্রে মোদি সরকারের মধ্যে গোপন আঁতাতের দাবিই এদিন ব্রিগেড মঞ্চের মূল সুর ছিল। বিমান বসু থেকে বৃন্দা কারাট, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য থেকে সীতারাম ইয়েচুরি-তৃণমূল ও বিজেপির গোপন সখ্যতার অভিযোগ উঠে আসে সবার গলাতেই। টাইমস অপ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।
ব্রিগেড থেকে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতেই জোর দিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, 'তৃণমূল হঠাও, দেশ বাঁচাও, বাংলা বাঁচাও। এ রাজ্যে ভয়াবহ অবস্থা চলছে। সমাজবিরোধীদের সরকার চালাচ্ছে রাজ্য। বিজেপি এ রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছে। দেউলিয়া রাজ্য সর্বনাশের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে। কৃষক আত্মহত্যার মিছিল চলছে। আর সরকার আত্মহত্যা নিয়ে উত্সব করছে।' প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, 'গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াই এসেছে সামনে। অপশক্তির পরাজয় ঘটাতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে আপোস করছে কেন্দ্র-রাজ্য দুই পক্ষই। এই সরকারকে উত্খাত করতে বামদের শক্তিবৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে।'
সাম্প্রদায়িকতা ইস্যুতে মোদি-মমতাকে একসঙ্গে বিঁধলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি বলেন, 'দাদাভাই-দিদিভাই একসঙ্গে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছেন। এবার আর ভোট লুঠ করে জেতা যাবে না।' 'গণতন্ত্রকে বিপন্ন করছে গণতন্ত্রের বিজ্ঞাপনের সরকার। এই সন্ত্রাসের রাজত্ব ধ্বংস করতে হবে।' রবিবার ব্রিগেড সমাবেশে এই ভাষাতেই তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করলেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। পাশাপাশি, রাজ্যে নারী নির্যাতনের ছবিও তুলে দরেন তিনি। বিমান বসু বলেন, 'নির্যাতিতারা বিচার পান না। মুখ খুললেই মামলা হয়।'
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তৃণমূল সরকারকে দোষ দিলেন সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাটও। তার মন্তব্য, পালাবদলের পর নারী নির্যাতনে রাজ্যের স্থান এক নম্বরে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে মহিলা হয়েও রাজ্যের মহিলাদের দিকে নজর দেন না বলে অভিযোগ করেছেন বৃন্দা কারাট। এই আন্দোলনে মহিলাদেরও এগিয়ে আসার আবেদন জানান তিনি। সারদা মামলার প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। চিটফান্ড থেকে সাম্প্রদায়িকতা সব ইস্যুতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন সিপিএম নেতা মুহাম্মদ সেলিম। রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরলে সিঙ্গুরে আবার কারখানা গড়ার আশা প্রকাশ করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র।
ব্রিগেড সমাবেশ ঘিরে এদিন সকাল থেকে যানজটের মুখে পড়ে শহর। শিয়ালদহ, হাওড়া দু-দিক থেকেই কলকাতায় ঢোকার রাস্তা ছিল ভিড়ে ঠাসা। ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়ে যানজটে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়।
২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�