আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহরের সৈয়দ-সাজিয়া। মাত্র ৪ মাস হলো তাদের বিয়ে হয়েছে। তাইতো রুটি-রুজির টানে নববধূ সাজিয়াকে নিয়ে স্বপ্নের সংসার গড়তে তারা চলে আসেন দিল্লিতে। কে জানতো এখানেই স্বামীকে হা'রাবে ২ মাসের অ'ন্তঃস'ত্ত্বা স্ত্রী ২০ বছরের সাজিয়া।
মা হতে চলা ২০ বছরের তরুণী সাজিয়ার আবেগঘন আক্ষেপ, ''অনাগত বাচ্চাটা কোনো দিনও তার বাবাকে দেখতে পাবে না!'' দিল্লিতে এসেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে সাজিয়ার স্বপ্নের সংসার। চার মাস আগে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন সৈয়দ (২২) ও সাজিয়া (২০)। দুই মাস হলো সাজিয়া অন্তঃসত্ত্বা। সাজিয়ার করুণ আক্ষে'প, তার গর্ভের শিশু দেখতে পাবে না তার বাবাকে।
বিয়ের পর বুলন্দশহর থেকে সাজিয়াকে নিয়ে দিল্লিতে চলে আসেন তরুণ সৈয়দ। উত্তর-পূর্ব দিল্লির চাঁদবাগ বাজারের পাশে একটি ভাড়া বাড়িতে সংসার পাতেন তারা। প্রতিদিন কিছু না খেয়েই সকাল সকাল অটো নিয়ে বেরিয়ে পরতেন সৈয়দ। গত সোমবারও এর ব্য'তিক্র'ম হয়নি। দুপুরে বাসায় এসে সৈয়দ-সাজিয়ে দুপুরের খাবার খাবেন। কেননা সৈয়দ প্রতিদিন দুপুরে বাসায় এসে সাজিয়ার সঙ্গে খাবার খান।
এদিনও স্বামীর জন্য রান্না করে অপে'ক্ষা করতে থাকেন সাজিয়া। দিল্লির দা'ঙ্গা সৈয়দকে ফিরতে দেয়নি। সোমবার দা'ঙ্গায় জ'খম হয়ে না ফেরার দেশে চলে যান সৈয়দ। সাজিয়া আহ'ত সৈয়দ খবর পাওয়ার আগেই খবর পৌছে যায় বুলন্দশহরের সৈয়দের বাড়িতে। পরিবারের লোকেরা এসে সাজিয়াকে নিয়ে যান বুলন্দশহরে। দা'ঙ্গায় আ'হ'ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর নিজ শহরে ফেরার আগে সাজিয়া গিয়েছিল দিল্লির জিটিবি হাসপাতালে।
কিন্তু পুলিশ তাকে স্বামীর লা'শ দেখতে দেয়নি। হাসপাতালে ভর্তি আছে অধিকাংশ আহ'তরা। গোটা হাসপাতাল জুড়ে চলছিল হা'হা'কার। কিছুক্ষণ পরপরই জ্ঞান হা'রাচ্ছে তরুণী সাজিয়া। পরিবারের লোকজন তাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করেও খাবার খাওয়াতে পারছে না।
স্বামীর জন্য বি'লা'প করতে করতে সাজিয়া বলেন, ''গেলো রবিবার রাতেও আমরা ঘুরতে বেড়িয়েছিলাম। ও সে সময় আমাকে সবুজ চুড়ি কিনে দিয়েছিল। যে চুড়ি এখনও সাজিয়ার হাতে। স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে সাজিয়া জ্ঞা'ন হা'রিয়ে ফেলে। সাজিয়া আরও জানায়, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর অটোতে ভাড়া থাকলে মাঝে মাঝে দুপুর বেলা খেতে আসতে পারতো না সৈয়দ।
তাই সে ফোন করে বলতো, 'খা লে সাজিয়া। বাবু ভুখা হ্যায়।' (খেয়ে নে সাজিয়া, বাবু ক্ষু'ধা'র্ত) সাজিয়ার হাতে এখনও ওই চুরিগুলো পরা। কিন্তু রইলেন না স্বামী। আর কোনো ফোন করে বলবে না ‘খা লে সাজিয়া’। দা'ঙ্গা কে'ড়ে নিয়েছে স্বামী সৈয়দের প্রাণ। মা হতে চলা তরুণী সাজিয়ার যখনই জ্ঞা'ন ফেরে তখনই সে আ'ক্ষেপ করছে আর বলছে ''গর্ভের বাচ্চাটা কোনো দিনও তার বাবাকে দেখতে পাবে না!''
শেষবারের মতো সৈয়দকে দেখতে বুলন্দশহরের গ্রামের বাড়িতে অপেক্ষায় সাজিয়া ও তার পরিবার। সাজিয়ার এ শেষ আ'কা'ঙ্ক্ষাও কি পূরণ হবে? সাজিয়া ও তার পরিবার ফিরে পাবে তো সৈয়দের মৃ'তদেহ?