সোমবার, ০২ মার্চ, ২০২০, ০৭:৫৭:৩৫

দিল্লি হিং'সায় বাবা নেই, আছে শুধু একটা আধপোড়া পা, সেটাই কবর দিতে অপেক্ষায় মেয়ে

দিল্লি হিং'সায় বাবা নেই, আছে শুধু একটা আধপোড়া পা, সেটাই কবর দিতে অপেক্ষায় মেয়ে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হাসপাতালের বাইরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন এক মহিলা। গালে লেগে থাকা কান্নার দা'গ স্পষ্ট। চোখে শূন্য দৃষ্টি। দিল্লি হিং'সায় নিজের বাবাকে হা'রিয়েছেন এই মহিলা। এখন অপেক্ষা করছেন দেহটা ফেরত পাওয়ার। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফেরত দেবে কেবল দ'গ্ধ একটা কাটা পা। বাকি শরীরটা ঝলসে গিয়েছে। উ'দ্ধা'রই করা সম্ভব হয়নি। 

পায়ের অংশের পরিচিতির জন্য স্যাম্পেল নিয়ে চলছে ডিএনএ টেস্ট। সেসব মিটলে তবেই বাবার শরীরের দেহাংশই ফেরত পাবেন মেয়ে। তারপর কবর দেবেন। উত্তর-পূর্ব দিল্লির শিব-বিহারের বাসিন্দা মোহাম্মদ আনোয়ার। মেয়ে গুলশান থাকতেন হাপুর জেলার পিলাকাওয়াতে। স্বামী নাসিরুদ্দিন আর দুই সন্তানকে নিয়ে বেশ অভাবের সংসার গুলশানের। বছর খানেক আগে অ্যা'সিড হা'মলায় চোখ হারিয়েছেন স্বামী। সম্বল বলতে ছিলেন বাবা আনোয়ারই। কিন্তু তার পরিণতি যে এমন ম'র্মা'ন্তিক হবে দুঃ'স্বপ্নেও সেটা ভাবেননি গুলশান। 

সিএএ বিরো'ধী এবং সমর্থকদের সং'ঘর্ষের জে'রে উত্তর-পূর্ব দিল্লের বিস্তীর্ণ এলাকা ত'ছন'ছ হয়ে গিয়েছে। শিব-বিহার তার মধ্যে অন্যতম। এখানকারই বাসিন্দা ছিলেন মোহাম্মদ আনোয়ার। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শেষবার মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। গুলশানের কথায়, 'বাবা বারবার বলছিল চারদিকে খুব অশান্তি হচ্ছে। আমি জিজ্ঞাস করেছিলাম তোমার উপর হামলা হয়নি তো। বাবা বলেছিল নাহ। তবে ওরা আমাদের ঘিরে রেখেছে। আমি আ'টকে পড়েছি। তারপরেই ফোন কেটে যায়।' 

মেয়ের সঙ্গে কথা বলার খানিকক্ষণের মধ্যেই জ্ব'লে পুড়ে খাক হয়ে যান আনোয়ার। দিনটা ছিল ২৫ ফেব্রুয়ারি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আচ'মকাই আনোয়ারের বাড়িতে আ'গুন জ্বা'লিয়ে দেয় তা'ণ্ডবকারীরা। তার আগে বাড়ির ভিতর দু'বার গু'লি করে চালায় আনোয়ারের উপর। তারপর ছুঁড়ে ফেলে দেয় আ'গুনের মধ্যে। স্থানীয়রাই এসে উ'দ্ধা'র করতে যান আনোয়ারকে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আধপোড়া পায়ের অংশ ছাড়া রা কিছুই খুঁজে পাননি স্থানীয়রা।

সেদিনের পর থেকেই গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে চ'ক্ক'র কা'টছেন গুলশান। কবে বাবার দেহাংশ ফেরত পেয়ে কবর দিতে পারবেন সেই আশাতেই রোজ বসে থাকেন হাসপাতালে বাইরে। ঘটনার দিন এলাকায় ছিলেন গুলশানের কাকা সেলিমও। স্থানীয়দের কথায়, 'ওরা সেলিমকেও খুঁ'জছিল। বারবার বলছিল এর আরেক ভাই কোথায়? সেলিম কোথায়? এখানে আরেকজন থাকে, সে কোথায়?' সেদিন কোনওমতে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন সেলিম। 

তবে যাওয়ার আগে দেখেছিলেন বড় ভাইকে আ'গুনে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে তা'ণ্ডবকারীরা। সাহায্য করতে যাওয়ার আগেই নিজের চোখের সামনে পুড়ে খাক হতে দেখেছিলেন সবকিছু। সেলিমকে না পেয়ে তার বাড়িও জ্বা'লিয়ে দেয়। আনোয়াররে ম'র্মা'ন্তিক প'রিণ'তির কথা প্রতিবেশীরাই জানান গুলশানকে। বাবাকে হা'রিয়ে দি'শাহা'রা হয়ে পড়েছেন মেয়ে। শূন্য চোখে তাকিয়ে এখন বি'ড়বি'ড় করে খালি বলছেন, 'বাবাকে শান্তি মতো কবর দিতে চাই। মানুষটা অনেক কষ্ট পেয়েছে। এবার একটু শান্তিতে ঘুমাক।' সূত্র : দ্য ওয়াল

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে