বুধবার, ০৪ মার্চ, ২০২০, ১০:৪৬:৫৪

মৌসুন নুর তো মুসলমান ছিল, সে কেন জিতল না : প্রশ্ন মমতার

মৌসুন নুর তো মুসলমান ছিল, সে কেন জিতল না : প্রশ্ন মমতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একুশে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোট আসছে। তার আগে মালদহের ছোট সুজাপুরে দাঁড়িয়ে বুধবার অর্থবহ প্রশ্ন তুললেন মমতা ব্যানার্জী। দলের বুথ স্তরের কর্মী ও জেলার নেতাদের কাছে মমতার প্রশ্ন, 'মৌসুম নুর তো মুসলমান ছিল, ও কেন লোকসভা ভোটে জিতল না?' মমতার কথায়, 'যদি মনে করেন মুসলিমরাই এখানে সংখ্যাগুরু, তা হলে মৌসুম কেন জিতল না এটা আপনাদের জিজ্ঞেস করছি!'

প্রায় দশ বছর ধরে বাংলায় ক্ষ'মতায় রয়েছে তৃণমূল। তাও উত্তরবঙ্গের মালদহ শাসক দলের অধরা। পাঁচ বছর আগে বিধানসভা ভোটে একটাও আসনে জেতেনি তৃণমূল, আবার লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের তত্‍কালীন সাংসদ মৌসুম বেনজির নুরকে ভা'ঙিয়ে এনেও লাভের লাভ হয়নি। লোকসভা ভোটে মালদহের দু'টি আসনেই হে'রেছে রাজ্যের শা'সক দল। বাংলায় পুরভোট আসন্ন। তার থেকেও বড় ব্যাপার হল, বিধানসভা ভোটেরও বেশি দেরি নেই। তাই মালদহে ঘর গোছাতে বুধবার ছোট সুজাপুরে বুথ ভিত্তিক কর্মীদের সম্মেলন করেন মমতা। 

যে কারণে মুসলমানদের ওপর হা'মলা ঠেকায়নি দিল্লি পুলিশ

সেখানেই কর্মীদের উদ্দেশে এই প্রশ্ন তোলেন তিনি। সেই সঙ্গে বলেন, লোকসভা ভোটে এখানে কংগ্রেস একটা সিট নিল, আর একটা সিট নিল বিজেপি। দেখুন কী বোঝাপড়া! তার কথায়, আসলে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস—এরা আলাদা নয়, এরা এক। লোকসভা ভোটে সিপিএমের ভোট, কংগ্রেসের ভোট গিয়েছে বিজেপিতে। ওরা জগাই, মাধাই, গদাই…। মৌসুমের প্রসঙ্গে এখানেই থেমে থাকেননি মমতা। 

তিনি বলেন, 'লোকসভা ভোটের আগে মৌসুম একটা বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু যে লোকটা কোনওদিন কাজই করে না, সে জিতে গেল! আর যে মেয়েটা দৌড়ে দৌড়ে কাজ করতে পারত সে কিনা হেরে গেল।' প্রসঙ্গত, এখানে 'যে লোকটা' বলতে উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ তথা সাবেক সিপিএম বিধায়ক খগেন মুর্মুকে বোঝাতে চেয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। মমতা অবশ্য একইসঙ্গে বলেন, 'আমরা যদিও হিন্দু-মুসলমান, তফসিলি-আদিবাসী ফা'রাক করি না। আমাদের কাছে সবাই সমান।' 

মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে বিশ্বকে ধ্বংস করে দিতে পারে ৫ পরমাণু ডুবোজাহাজ!

প্রশ্ন হল, কেন মৌসুমের প্রসঙ্গ তুললেন মমতা, কেনই বা বোঝাতে চাইলেন বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যে সমঝোতা রয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভা ভোটে উত্তর মালদহ আসনে ধর্মীয় মে'রুকরণ হয়েছে। হিন্দু ভোট ও তফসিলি ভোট গিয়েছে বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মুর দিকে। কিন্তু সংখ্যাল'ঘু ভোটের বিভা'জন তৃণমূল ঠে'কাতে পারেনি। তা তৃণমূল প্রার্থী মৌসুম নুর ও তার ভাই তথা কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরীর মধ্যে ভা'গাভা'গি হয়েছে বলেই অনেকের ধারণা। 

এদিন মমতার কথা শুনে পর্যবেক্ষকরা তাই মনে করছেন, মমতা আসলে সংখ্যাল'ঘু ভোটের ভা'গাভা'গি রু'খতে চাইছেন। তিনি সং'খ্যাল'ঘুদের বোঝাতে চাইছেন, সিপিএম বা কংগ্রেসকে ভোট দিলে প্রকারান্তরে বিজেপির লাভ হবে। মমতার কথায়, 'খাল কেটে কুমির আনা হবে।' যদিও কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ও সিপিএমের ভোট তৃণমূলের দিকেও গিয়েছে। যেমন আরামবাগ আসনে মাত্র কমবেশি ১২০০ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী। সেখানে ভোটের পাটিগণিত দেখে বোঝা যাচ্ছে সিপিএমের সংখ্যাল'ঘু ভোট গিয়েছে তৃণমূলের দিকে।

দিল্লি হিং'সা থেকে নজর ঘোরাতে করোনা গু'জব ছড়াচ্ছে মোদি সরকার : মমতা 

তা যদি না যেত, তা হলে আরামবাগ আসনও বিজেপির কাছে ডাহা হা'র'ত তারা। এদিন মালদহের সভায় তৃণমূলনেত্রী কার্যত প'ষ্টাপ'ষ্টিই বলেন, জেলায় তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে ঝ'গড়াও নির্বাচনী ব্য'র্থতার বড় কারণ। পরস্পরের মধ্যে কোনও সদ্ভাব নেই। সেই কারণেই সভায় তিনি বলেন, এবার আর কোনও একজন নেতাকে গোটা দায়িত্ব দেওয়া হবে না। বরং দায়িত্ব ভা'গাভা'গি করে দেওয়া হবে। যেমন ইংরেজবাজার পুরসভায় কারও একার উপর আর দায়িত্ব দেননি মমতা। কৃষ্ণেন্দু-নিহার-বাবলার মধ্যে ওয়ার্ড ধ'রে ধ'রে ভা'গাভা'গি করে দিয়েছেন। সূত্র : দ্য ওয়াল

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে