সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৪:৪৪

'একটু সাহায্য করুন', ছেলের জীবনের ভিক্ষা চাইছেন অসহায় মা

'একটু সাহায্য করুন', ছেলের জীবনের ভিক্ষা চাইছেন অসহায় মা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১৫ বছরের একটা বাচ্চা ছেলের ছবি হাতে, রোজ স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে আশেপাশের দোকানে, সিগন্যালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক অসহায় মা। হাত জোড় করে বলছেন একটু সাহায্যের জন্য, যাতে তার ছেলেটি বেঁচে যায়। কিন্তু কেউ তার কথা বিশ্বাস করছে না। প্রতি সন্ধ্যায় একরাশ হ'তা'শা তিনি ফিরে যাচ্ছেন সেই হাসপাতালে, যেখানে ভর্তি আছে তার ছেলে— অয়ন।   

গত চার বছর ধ'রে অয়ন মায়লোডিসপলেসিয়া নামে এক বি'রল রো'গে আ'ক্রা'ন্ত। এটি এমন একটি রো'গ, যার ফলে শরীরের অ'স্থি-ম'জ্জা যথেষ্ট পরিমাণে কার্যকরী র'ক্তকো'ষ তৈরি করতে পারে না। সঙ্গে অয়ন ফ্যানকনি অ্যানেমিয়াতেও আ'ক্রা'ন্ত, যেটি অ'স্থি-ম'জ্জার কা'র্যক্ষ'মতা ন'ষ্ট করে। এই পরি'স্থিতিতে অয়নের মা ঝুমা একা লড়ে যাচ্ছেন তার ছেলের প্রাণ বাঁচানোর জন্য। 

কারণ, কিছুদিন আগে ঝুমার স্বামী ঝুমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। স্ত্রী এবং সন্তানের যত্ন নিতে গিয়ে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। ঝুমা জানালেন, "আমরা অনেক দিন ধ'রে ওর জন্য অপেক্ষা করেছি। কিন্তু উনি ফিরে আসেননি।" সেই মুহূর্তেই মা'নসিক এবং আর্থিক সমস্ত রকমভাবে ভে'ঙ্গে পড়েছিলেন ঝুমা। আর সেদিন থেকেই তিনি পণ করেছিলেন যে, ছেলের যত্নের কোনওরকম ত্রু'টি করবেন না। 

কোনও মতে একটা ছোট চাকরি যোগাড় করে, তিনি ছেলের চিকিৎসা শুরু করেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অয়নের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। অবস্থা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছয়, যে ওষুধগুলি পুরোপুরি কাজ করা ব'ন্ধ করে দেয়। শরীরে প্লে'টলেটের পরিমাণ হ্রা'স পেতে থাকে। শরীর ফ্যাকাশে হয়ে যায়।

আরও পড়ুন : হ'ত্যার আসামি ছেলেকে গ্রেপ্তার করে বাবাকে রক্ত দিলেন এসআই বদিউল

কাঁদতে কাঁদতে ঝুমা জানান, "কয়েক বছর আগেও আমার ছেলে ক্লাসের টপার ছিল। খেলাধুলাতেও ভাল ছিল ও। কিন্তু এখন ও প্রচ'ণ্ড য'ন্ত্র'ণায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাত'রাচ্ছে। আমি ওকে সান্ত্বনাটুকুও দিতে পারছি না।" চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অয়নের বাঁচার একমাত্র আশা একমাত্র বোন ম্যারো ট্র্যা'ন্সপ্ল্যা'ন্টই। তার জন্য প্রায় ১৯.৩৪ লক্ষ টাকা চাই। ঝুমার পক্ষে সম্ভবই নয় এত টাকার ব্যবস্থা করা।

ঝুমা কান্নাভেজা গলায় জানিয়েছেন, "আমার কোনও রকম সঞ্চয় নেই। বিক্রি করার মতো কোনও কিছু নেই। আমার আত্মীয়রা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কেউ আমাকে ঋণ দেওয়ার জন্যও প্রস্তুত নয়। আমি জানি না, কী ভাবে এই বড় অঙ্কের টাকা যোগাড় করব। আমার ছেলেই আমার জীবন। ওকে হা'রালে আমার কাছে নিজের বলে আর কিছু থাকবে না।" সূত্র : আনন্দবাজার

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে