রবিবার, ০৫ এপ্রিল, ২০২০, ০৯:১৮:১৪

যে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করে মৃ'ত্যুহার কমিয়ে করোনা মো'কাবেলায় সফলের পথে জার্মানি!

যে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করে মৃ'ত্যুহার কমিয়ে করোনা মো'কাবেলায় সফলের পথে জার্মানি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাসের সং'ক্রমণের শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। এর পরই আছে ইউরোপের দেশ স্পেন, ইতালি এবং জার্মানি। সং'ক্রমণের শীর্ষ চারে থাকলেও ইউরোপের অন্য দুই দেশের তুলনায় জার্মানিতে করোনায় প্রাণহা'নির সংখ্যা একেবারেই তলানিতে। কীভাবে প্রাণঘা'তী এই ভাইরাসে প্রাণহা'নিতে লাগাম টানতে সক্ষম হলো জার্মানি?

ইউরোপের একাধিক দেশে করোনাভাইরাসের ভ'য়ঙ্ক'র থা'বা অব্যাহত থাকলেও জার্মানিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো সং'ক্রমণ কমে এসেছে রোববারও। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আ'ক্রা'ন্তের সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় দেড়শ কম।

দেশটির সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা রবার্ট কোচ ইনস্টিটিউট বলছে, জার্মানিতে করোনা সং'ক্রমণ টানা তৃতীয়দিনের মতা কমেছে। দেশটিতে রোববার নতুন করে আরও ৫ হাজার ৯৩৬ জন করোনায় আ'ক্রা'ন্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আ'ক্রা'ন্তের সংখ্যা ৯১ হাজার ৭১৪ জনে পৌঁছেছে। এর আগে শনিবার দেশটিতে ৬ হাজার ৮২ জন করোনায় আ'ক্রা'ন্ত হয়েছিলেন। একদিনের ব্যবধানে আ'ক্রা'ন্তের সংখ্যা কমেছে ১৪৬।

আগের দিন শুক্রবার জার্মানিতে করোনায় আ'ক্রা'ন্ত হন ৬ হাজার ১৭৪ জন। তবে রোববার করোনায় আ'ক্রা'ন্ত হয়ে মা'রা গেছেন ১৮৪ জন। এ নিয়ে করোনায় প্রা'ণহা'নির সংখ্যা এক হাজার ৩৪২ জনে দাঁড়িয়েছে।

এখন পর্যন্ত ইউরোপে করোনা সং'ক্রমণের শীর্ষে থাকা ইতালি এবং স্পেনের পরই আছে জার্মানি। দেশটিতে করোনায় আ'ক্রা'ন্তের সংখ্যা প্রায় ৯২ হাজার হলেও মা'রা গেছেন মাত্র এক হাজার ৩৪২ জন। অপরদিকে স্পেন এবং ইতালিতে সং'ক্রমণের সংখ্যা জার্মানির চেয়ে সামান্য বেশি হলেও ইউরোপের এই দেশ দুটি করোনায় মৃ'ত্যুপু'রীতে পরিণত হয়েছে।

স্পেনে করোনায় আ'ক্রা'ন্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৯ জন। তাদের মধ্যে মা'রা গেছেন ১২ হাজার ৪১৮ জন। অন্যদিকে ইতালিতে আ'ক্রা'ন্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৩২ হলেও মৃ'ত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৩৬২। তবে সং'ক্রমণের শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র; দেশটিতে আ'ক্রা'ন্ত ৩ লাখ ১১ হাজার ৬৩৭ এবং মা'রা গেছেন ৮ হাজার ৪৫৪ জন।

জার্মানির আল্ম ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজির পরিচালক ডা. ডিয়েট্রিক রথেনবাচার বলেন, জার্মানিতে করোনায় মৃ'তের সংখ্যা কম হওয়ার কারণ এখানে গণহারে পরীক্ষা করা হচ্ছে। অন্যরা যখন লক্ষণ রয়েছে এমন মানুষের পরীক্ষা করছে; তখন জার্মানিতে ব্যাপক পরিসরে করোনার পরীক্ষা চলছে। আর এই একটি পদ্ধতি অবলম্বন করে করোনা মো'কাবেলায় সফলের পথে জার্মানি!

বিশ্বে করোনা সং'ক্রমণের শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় জার্মানির অবস্থান চতুর্থ। তারপরও দেশটিতে প্রাণহা'নির সংখ্যা অনেক কম। দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষ'জ্ঞরা বলছেন, অন্যান্য অনেক দেশে পরীক্ষা না করানোর কারণে দ্রুত বিস্তার ঘটছে; যেটি জার্মানিতে হচ্ছে না।

জার্মানিতে এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যেখানে ইতালিতে এই সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখের কিছু বেশি। এছাড়া স্পেনে ৩ লাখ ৫৫ হাজার। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক চিকিৎসক লিয়াম স্মিথ বলেন, করোনায় মৃ'ত্যুর হার একেক দেশে একেক রকম হওয়ার বেশ কিছু কারণ আছে। তবে অন্যতম কারণ হচ্ছে, কে কত বেশি পরীক্ষা করছে। বেশি পরীক্ষার কারণে সং'ক্রমিত ব্যক্তির মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়াতে পারছে না। জার্মানি জনসংখ্যার তুলনায় একেবারে শুরু থেকে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা করে আসছে। জার্মানির সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা রবার্ট কোচ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট লোথার উইলার বলেছেন, জার্মানির ল্যাবগুলোতে বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষের পরীক্ষা করার সক্ষমতা আছে।

চীনের উহানে গত ডিসেম্বরে করোনাভাইরাসের বিস্তার শুরু হওয়ার পর জার্মানিই প্রথম দেশ হিসেবে স্থানীয়ভাবে করোনা পরীক্ষার কিট তৈরি করে। অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশটির বেসরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা ও কোম্পানিগুলোকে এই কিট উৎপাদনের অনুমতি দেয়া হয়। তারা দেশটির জনসংখ্যার চিত্র মাথায় রেখে এই কিটের গণউৎপাদনে যায়। এমনকি দেশটির একটি মাত্র কোম্পানিই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ১৪ লাখের বেশি কিট সরবরাহ করে। যা পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা আ'ক্রা'ন্ত দেশগুলোতে পাঠিয়ে দেয়।

এছাড়া ইতালি এবং স্পেনের তুলনায় জার্মানিতে আইসিউ শয্যার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেশি আছে। যে কারণে দেশটির হাসপাতালগুলো রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে ভে'ঙে পড়েনি; যা ঘটেছে স্পেন এবং ইতালিতে। জার্মানির হাসপাতাল পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ডিকেজি বলছে, জার্মানিতে এক লাখ মানুষের জন্য ক্রিটিক্যাল কেয়ার শয্যা আছে ২৯.২ টি। অন্যদিকে, ইতালির এই সংখ্যা মাত্র সাড়ে ১২টি। যুক্তরাষ্ট্রে আছে ৩৪ দশমিক ২টি। কিন্তু জার্মানির এই শয্যাগুলোতে বর্তমানে রোগী আছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। এর অর্থ হচ্ছে করোনায় গু'রুতর অসুস্থ রোগীদের জন্য জার্মানির এই শয্যা পর্যাপ্ত। সূত্র-ইউএস নিউজ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে