বুধবার, ০৮ এপ্রিল, ২০২০, ০৩:৫৭:৩৬

কেন ভারত থেকে ম্যালেরিয়ার ওষুধ নিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র?

কেন ভারত থেকে ম্যালেরিয়ার ওষুধ নিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনাভাইরাস প্রতিরো'ধে ভারতের কাছে হাই'ড্রোক্সিক্লো'রোকু'ইন চেয়ে পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, ওষুধ না মিললে পরিণতি ভাল হবে না বলেও হুঁ'শিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। 

শুধু ট্রাম্পই নন, করোনার এই 'মি'রাকল' ওষুধের রফতানিতে ভারতকে নিষেধা'জ্ঞা তু'লে নিতে অনুরোধ করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারোও। কিন্তু কেন এত চাহিদা? করোনা প্রতিরো'ধে হাইড্রো'ক্সিক্লোরোকু'ইন কি আসলেই ‘গেম চে'ঞ্জার’? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

সং'ক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, সারা বিশ্বেই করোনা আক্রা'ন্ত দেশগুলিতে এই ওষুধ নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে। কোথাও ভাল কাজ দিচ্ছে, আবার কোথাও এই ওষুধ ডেকে আনছে অন্য রোগ। যে ওষুধ এখনও নির্দিষ্ট কোনও নিয়ম মেনে একই রকম ফল সারা বিশ্বে দেখাচ্ছে না, তাকে কীভাবে গেম চে'ঞ্জার বলা যেতে পারে? আসলে যুক্তরাষ্ট্রে হা'ইড্রো'ক্সিক্লোরো'কুইন কিছুটা ভাল কাজ দিয়েছে বলে, সেটার উপরেই মার্কিনিদের নির্ভরশীলতা বাড়ছে।

এই হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন কী?
ক্লোরোকুইন ফসফেট ম্যা'লেরিয়া সা'রানোর ওষুধ। সিঙ্কোনা গাছ থেকে এর মূল উপাদান পাওয়া যায়। ক্লোরোকুইনের হাইড্রোক্সিলেটেড সল্টকে বলে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন। ভারত সরকার একে প্রোফা'ইল্যা'ক্টিক বা রোগ প্রতিরো'ধে সাহায্যকারী ড্রা'গ হিসেবে ব্যবহার করার অনুমোদনও দিয়েছে। তবে এই ওষুধ যে সফল ভাবে কাজ করছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

ভারতে কি এটি প্রচুর উৎপন্ন হয়?
এই ওষুধ মূলত ম্যালেরিয়াপ্রবণ দেশগুলোতেই মেলে। ভারত ক্লোরোকুইন তৈরিতে বিশ্বের প্রথম সারিতে রয়েছে। এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্লোরোকুইন উৎপন্ন হয় এখানেই। এর আগে আফ্রিকায় প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেলেও ওরা এখন ক্লোরোকুইনে ‘রেজিস্ট্যান্ট’ হয়ে উঠেছে অর্থাৎ ক্লোরোকুইনের সঙ্গে ম্যালেরিয়ার জীবা'ণু ভাব করে নিয়েছে। তাই ক্লোরোকুইনে আর সে ভাবে কাজ হয় না সেখানে। বর্তমানে তাই আফ্রিকা সিঙ্কো'না চাষ অনেক কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ভারতে ছবিটা অন্য। এখানে সিঙ্কোনা চাষ ও ক্লোরোকুইনের উৎপাদন ও জোগান অনেক বেশি। কারণ ম্যালেরিয়াও অনেক বেশি। তাই সারা বিশ্বই ভারতের দিকে তা'কিয়ে এই হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের জন্য। ভারত ইতিমধ্যেই ১০ কোটি হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছে।

তবে চিকিৎসকদের এক শ্রেণি এই ওষুধটিকে মোটেও ‘নিরা'পদ’ বলে মেনে নিতে রাজি নন। তাদের মতে, এই ওষুধের প্রচুর পা'র্শ্বপ্রতিক্রি'য়া রয়েছে।

কী ধরনের পার্শ্ব'প্রতিক্রি'য়া?
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালা'র্জি অ্যান্ড ইনফে'কশাস ডি'জিযের কর্মকর্তা অ্যান্টনি ফৌচি একদমই এই ওষুধ সুস্থ মানুষকে দেওয়ার পক্ষপাতী নন। তিনি জানিয়ছেন, সং'শয় আছে আক্রা'ন্তদের ক্ষেত্রেও। 

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাস ঠে'কাতে কাজে লাগে জানা গেলেও যতক্ষণ না ক'নট্রো'লড ক্লি'নিকাল ট্রা'য়াল করা হচ্ছে, নিশ্চি'ত ভাবে বলা যাবে না এই ওষুধ কতটা কার্য'কর। বরং এর নানা রকমের পা'র্শ্বপ্রতিক্রি'য়া ভা'বাচ্ছে চিকিৎসকদের।

অনেক বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এই ওষুধের প্রয়ো'গ সব শরীরের জন্য নয়। হৃ'দরো'গীদের একটা শ্রেণির ক্ষেত্রে এই ওষুধ ‘কার্ডি'য়াক অ্যা'রিদমি'য়া’ নামের হৃ'দরোগ ডে'কে আনে। বেশ কিছু সমস্যা- যেমন সোরি'য়াসিস, পর'ফাই'রিয়া, লি'ভারের অসু'খ, অ্যা'লকো'হলিজ'ম ইত্যাদি থাকলে ওষুধের প্রতিক্রি'য়ায় বড় ক্ষ'তি হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত সবচেয়ে নিরাপদ ও প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় ম্যালেরিয়ার কুইনাইন নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, এদের পা'র্শ্বপ্রতিক্রি'য়া থাকার কারণেই হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনকে ‘নিরা'পদ’ হিসেবে মনে করে না সংস্থাটি।সূত্র: আনন্দবাজার।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে