শুক্রবার, ০১ মে, ২০২০, ০৭:০২:১৪

নারীর ''সে'ক্স হরমোন'' কমাতে পারে করোনার ঝুঁ'কি!

নারীর ''সে'ক্স হরমোন'' কমাতে পারে করোনার ঝুঁ'কি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সারা বিশ্ব কাঁ'পছে এক ক্ষুদ্র ভাইরাসে। এই মা'রণ ভাইরাসে নারীদের থেকে পুরুষরাই বেশি আ'ক্রা'ন্ত হচ্ছেন, এমন তথ্য ওঠে এসেছে নানা গবেষণায়। পুরুষদের সং'ক্র'মিত হওয়ার হার কেন বেশি, সে নিয়ে নানারকম মতামত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেই প্রসঙ্গে ওঠে এসেছে স্ত্রী যৌ'ন হরমোনের বিষয়টিও।

ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন; এই দুই স্ত্রী যৌ'ন হ'রমোনের কারণেই কি নারীরা পুরুষদের থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি সুর'ক্ষিত? নি'শ্চিত না হলেও মার্কিন বিজ্ঞানীদের গবেষণায় অনেকবারই ওঠে এসেছে এই তথ্য। নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রা'ন্ত পুরুষদের শরীরে স্ত্রী হরমোন ঢুকিয়ে পরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা। ইস্ট্রোজেন ও প্রোজস্টেরনের প্রভাবে করো'নার সং'ক্র'মণ কমতে পারে বলেই দাবি করা হচ্ছে। 

নারীদের শরীরের রো'গ প্রতিরো'ধ ক্ষমতা পুরুষদের থেকে বেশি এমন দাবি আগেই করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।  মার্কিন ও ব্রিটিশ গবেষকদের দাবি পুরুষরা কেন বেশি সং'ক্র'মিত হচ্ছেন তার জন্য দুটো কারণ থাকতে পারে। দুই কারণে প্রথমটি হলো, দেহকো'ষের রিসেপটর প্রোটিন যার সঙ্গে ভাইরাসের স্পাইক গ্লাইকোপ্রোটিন জোট বাঁধে।

এই রিসেপটর প্রোটিন 'অ্যাঞ্জিওটেনসিন-কনভার্টিং এনজাইম ২' তথা এসিই-টু বেশিরভাগ অঙ্গের কোষের থাকেই। বিজ্ঞানীরা আগেই বলেছিলেন, সার্স-কভ-২ ভাইরাস মানব শরীরে ঢোকার জন্য নাক, মুখ আর গলার রাস্তাকেই ব্যবহার করে। কারণ এখানেই থাকে তাদের পছন্দের গবলেট ও সিলিয়েটড কোষ। এই কোষের রিসেপটর প্রোটিনের সঙ্গে জুটি বেঁধে সরাসরি কোষে ঢুকে যায় তারা। 

তারপর হানা দেয় ফুসফুসে ও শরীরের বাকি অঙ্গকে। ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন হলো তাদের চাবি আর মানব শরীরের এই রিসেপটর প্রোটিন হলো তাদের প্রবেশের রাস্তা। এই দুই মিলে গেলেই তারা ঝপ করে কোষে ঢুকে পড়তে পারে। গবেষকরা দাবি করছেন, পুরুষদের শরীরে এই রিসেপটর প্রোটিনের সংখ্যা নারীদের থেকে বেশি থাকতে পারে। সেই কারণেই পুরুষের শরীরে ভাইরাসের সং'ক্র'মণের হারও অধিক।

দ্বিতীয় কারণটি হলো, যৌন হ'রমোন। 'দ্য জার্নাল অব ইমিউনোবায়োলজি'তেও বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন ল্যাবরেটরিতে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করেও এই বিষয়টা কিছুটা হলেও নি'শ্চিত হওয়া গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে স্ত্রী যৌ'ন হরমোন ইস্ট্রোজেন এই এসিই-টু রিসেপটর প্রোটিনের ওপর প্রভাব খাটাতে পারে। ওয়াশিংটনের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির গবেষক ক্যাথরিন স্যান্ডবার্গ বলেছেন, ''দেহকোষের রিসেপটর প্রোটিনের ওপর প্রভাব থাকতে পারে ইস্ট্রোজেনের। এই রিসেপটর প্রোটিন পুরুষ ও স্ত্রীয়ের শরীরে ভিন্ন রকমভাবে কাজ করে।''

সেটা কিভাবে? ক্যাথরিন বলছেন, পরীক্ষা করে দেখা গেছে ইস্ট্রোজেন কিডনিতে এসিই-২ রিসেপটর প্রোটিনের কাজ করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এই প্রোটিনের প্রকাশ যদি কমে তাহলেই ভাইরাস আর এই রিসেপটরকে চি'হ্নিত করতে পারবে না। ফলে কোষে ঢোকার রাস্তাটাই খুঁ'জে পাবে না। কিডনি ছাড়াও অন্যান্য অঙ্গের কোষে স্ত্রী যৌ'ন হরমোন কিভাবে রিসেপটর প্রোটিনের ওপর কাজ করছে সেটাই পরীক্ষা করে দেখছেন গবেষকরা।

স্ত্রী যৌন হরমোনের ট্রায়াল কিভাবে হচ্ছে পুরুষদের ওপর : 'জার্নাল অব আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন' জানিয়েছে নিইইয়র্কের প্রতি এক লক্ষ জনের মধ্যে ৩৯ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে কভিড সং'ক্র'মণে, পুরুষদের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা ৭১ জনের বেশি। অন্যদিকে, ইতালিতে ১৫৯১ স'ঙ্ক'টাপন্ন রোগীদের মধ্যে দেখা গেছে ৮২ শতাংশই পুরুষ।

নিউইয়র্কের স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটির গবেষক ডক্টর শ্যারন ন্যাচম্যান জানিয়েছেন, ১১০ জন কভিড পজিটিভ রোগীর ওপরে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তাদের সকলেরই হয় নিউমোনিয়া, বা জ্বর, নয়তো তী'ব্র শ্বাসের সম'স্যা রয়েছে। এই রোগীদের অধিকাংশই পুরুষ। বয়স ১৮ বছর থেকে ৬০ বছরের উপরে। গবেষক শ্যারন বলছেন, রোগীদের দুটি দলে ভাগ করা হয়েছে। 

শ্যারন বলছেন, একটি দলের রোগীদের শরীরে প্রথম এক সপ্তাহ ইস্ট্রোজেন প্যাচ লাগিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পরে পাঁচদিনের কোর্সে প্রতিদিন প্রোজেস্টেরনের দুটি ডোজ দেওয়া হয় তাদের। এই ট্রায়ালের পর্যবেক্ষণ চলছে। ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন কিভাবে রোগীদের শরীরে কাজ করবে সেটা সঠিক তথ্য পাওয়ার পরেই জানা যাবে। সূত্র: দ্য ওয়াল, নিউইয়র্ক টাইমস। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে