সোমবার, ০১ জুন, ২০২০, ০৯:৫৬:১৮

যা চলছে সৌদি সিংহাসনের অন্তরালে

যা চলছে সৌদি সিংহাসনের অন্তরালে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তার কার্যকলাপের জন্য বিশ্বব্যাপী আলোচিত। যুবরাজ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সিংহাসনের একচ্ছত্র ক্ষ'মতা ধরে রাখতে বে'পরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। ক্ষমতা পা'কাপো'ক্ত করতে শুরু করেন ধ'রপা'কড়। 

ইতোমধ্যে সৌদি সিংহাসনের অনেক উত্তরাধিকারীকে গ্রেফতার করেছেন তিনি। কিন্তু আসলে কী হচ্ছে সৌদি সিংহাসনের অন্তরালে? জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি লবি গ্রুপের প্রচেষ্টা এবং ইউরোপীয় আইনপ্রণেতাদের অনুরোধে সৌদি আরবের ওপর চা'প তৈরি হচ্ছে একজন প্রিন্সকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে। যিনি কোনও অ'ভিযো'গ ছাড়াই দুই বছর যাবত আ'টক আছেন। 

সৌদি প্রিন্সদের ওপর যে ধ'রপা'কড় চলছে তারই অংশ হিসেবে গ্রে'ফতার হয়েছেন প্রিন্স সালমান বিন আবদুল আজিজ। ২০১৮ সাল থেকে তিনি ও তার বাবা গ্রেফতার আছেন। সৌদি আরবের কার্যত শা'সক ও যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান তার সিংহাসন দ'খলের পথে কোনও কা'টাই রাখতে রাজি নয়। তাই সম্ভাব্য প্রতিদ্ব'ন্দ্বীই শুধু নয়, যাকেই তিনি ক্ষ'মতা দখলে চ্যালে'ঞ্জ ভাবছেন তাকেই কা'রারু'দ্ধ করছেন। 

যুবরাজের বি'প'জ্জ'নক এ খেলায় দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন কা'রারু'দ্ধ এক যুবরাজের সাবেক সহকারী ও ঊর্ধ্বতন এক গোয়ে'ন্দা কর্মকর্তা সাদ আলজাবেরি। কিন্তু তার দুই সন্তান ও ভাইকে ব'ন্দী করে রাখা হয়েছে। ধা'রণা করা হচ্ছে, বর্তমানে কানাডায় থাকা এ কর্মকর্তার কাছে রাষ্ট্রীয় অনেক গো'পন তথ্য আছে। 

যুবরাজের ধ'রপা'কড়ের অন্যতম টা'র্গেট প্রিন্স সালমান। প্যারিসে লেখাপড়া করা এ রাজপুত্র অনেকটাই রাজনীতিবিমুখ ছিলেন। তিনি দরিদ্র দেশগুলোতে অর্থায়নে ইতোমধ্যে খ্যাতি অর্জন করেছেন দানশীল হিসেবে। প্রিন্স সালমানের একজন সহকারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ''এটা শুধু অন্যায্য গ্রেফতারই নয়, প্রকাশ্য দিবালোকে অ'পহ'রণ, এটা বলপূর্বক গু'ম।''

কয়েকটি সূত্র এএফপিকে জানায়, একবছর তাকে কারারু'দ্ধ করে রাখার পর প্রিন্সকে একটি বি'চ্ছিন্ন বাড়িতে তার বাবার সঙ্গে সাক্ষাত করতে দেওয়া হয়, তারপর একটি গো'পন ব'ন্দী খানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে মার্চে। র'হস্যজনকভাবে ওই বাড়িতে গত সপ্তাহে আবারও তার বাবার সঙ্গে তাকে সাক্ষাত করানো হয়েছে। তাকে কেন গো'পন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এটি অস্পষ্ট। পরিবারের কাছে তিনি ফোন দিতে পারলেও সেটি মনিটরিং করে গোয়ে'ন্দা কর্মকর্তারা। 

তবে তাকে রিয়াদের পার্শ্ববর্তী জেলখানা থেকে বের করে আনা ই'ঙ্গিত দেয় এ প্রিন্সকে মুক্ত করতে আন্তর্জাতিক চা'পে রয়েছে সৌদি। যদিও এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক প্রতিনিধি দল রিয়াদ সফরে গেলে তারা প্রিন্স সালমানকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে সৌদি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়। এটি সৌদি-ইউরোপ সম্পর্কের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে এক চিঠিতে বলা হয়। 

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের একটি সূত্র থেকে এএফপি জানায়, গত মে মাসে ওয়াশিংটনভিত্তিক শীর্ষ লবি প্রতিষ্ঠান রবার্ট স্ট্রিক এর সনোরান পলিসি গ্রুপ প্রিন্স সালমানের মুক্তির ব্যাপারে কাজ করতে ২০ লাখ ডলারের চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কাজ করবে। স্ট্রিক এর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে বলে জানা যায়। 

চুক্তিটি করেছে প্রিন্স সালমানের সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হাশিম মোগল। প্রিন্সকে মুক্ত করার জন্য ২০ লাখ ডলার তিনি যোগাড় করেন। যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সিংহাসন দ'খলের এ ল'ড়াইয়ে বহু প্রিন্সই এখন কারাগারে আছে। গত মার্চ মাসে গ্রেফতার করা হয় সৌদি বাদশাহ সালমানের ভাই প্রিন্স আহমেদ এবং ভাতিজা প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফকে। ক্ষমতার উত্তরাধিকারী হওয়ার দাবিদার তারাও। কিন্তু তাদের ২০১৭ সালে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান তার ক্ষমতার প্রতিদ্ব'ন্দ্বীদের আপাতত সরিয়ে দিলেও করোনা সং'কট ও তেলের দ'রপ'তনকে ঘিরে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সং'কটে পড়েছে সৌদি আরব। সেই সঙ্গে যুবরাজের ইয়েমেন হা'মলার ব্য'র্থতা তো রয়েছেই। সেখানে প্রতিবছর বিপুল অংকের অর্থ ব্যয় হচ্ছে সামরিক বাহিনী ও অ'স্ত্রের পেছনে। ফলে সামনে কোনও প্রতিদ্ব'ন্দ্বী না থাকলেও যুবরাজের ক্ষমতায় আরোহণ কতটুকু সহজ হবে তা অর্থনৈতিক পরি'স্থিতি বলে দেবে। সূত্র: এএফপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে