প্রবাস ডেস্ক : ভারতে গত একমাসের বেশি সময় ধ'রে অভিবাসী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা নিয়ে প্রবল বিত'র্কের ঝড় দেখা গেছে। অব'র্ণনীয় ক'ষ্টের মধ্যে পড়ে শ্রমিকরা কখনো হেঁটে, কখনো বহু টাকার বিনিময়ে বাসে বা ট্রাকে সওয়ার হয়ে ঘরে ফেরার চেষ্টা করেছেন। পথে মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। শেষপর্যন্ত শ্রমিক স্পেশালে করে তাদের ফেরানো হচ্ছে।
সময়মত অভিবাসী শ্রমিকদের নিজ রাজ্যে না ফেরানোয় করোনার সং'ক্র'মণ বেড়েছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই অর্থনীতির চাকা সচল করতে লকডাউনের বি'ধিনিষে'ধ অনেকটাই শিথিল করা হয়েছে। দেশজুড়ে উৎপাদন শুরু করেছেন বিভিন্ন শিল্প মালিকরা। নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু এসব কাজই করেন অভিবাসী শ্রমিকরা। এদের অভাবে পুরোদমে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
যদিও ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় দাবি করেছে, দেশের সাড়ে আট কোটি আভিবাসী শ্রমিকের মধ্যে অনেকেই কর্মক্ষেত্রে থেকে গিয়েছেন। তবে কাজ না থাকায় নিজ রাজ্যে ফিরে গিয়েছেন এমন শ্রমিকদের সংখ্যা ৮০-৯০ লক্ষের কম নয়। কিন্তু এই কদিনের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে উল্টোস্রোতে। শিল্প কারখানায় উৎপাদন এবং নির্মাণ কাজ শুরু করতে অভিবাসী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে ফেরাতে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা বিমানের টিকিট, এসি ট্রেনের টিকিট, রিজার্ভ বাস পাঠিয়ে বিহার, ঝাড়খন্ড, উত্তর প্রদেশের শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা করতে শুরু করেছেন।
এমনকি দ্বিগুন বা তিনগুন মজুরি দেবারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আর তাই গ্রামে ফিরে যারা জোর গলায় বলেছিলেন আর যাই হোক ফিরে যাবেন না, তারাই এখন পেটের তাগিদে ফিরে চলেছেন পুরনো কর্মক্ষেত্রে। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় ফিরে আসা শ্রমিকরা করোনা ভয় উপেক্ষা করেই ফিরে যাচ্ছেন পুরনো জায়গায়। বাস ভর্তি করে কেউ যাচ্ছেন পাঞ্জাব, কেউ যাচ্ছেন দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায়।
বিহারের ১৫০ জন নির্মাণ শ্রমিককে কাজে ফেরাতে চেন্নাইয়ের তিনটি নির্মাণ সংস্থা একটি চার্টার্ড বিমানের ব্যবস্থা করেছে। পাঞ্জাবের কৃষকরা লকডাউনের আগের চেয়ে তিনগুন বেশি মজুরি দেবার শর্তে বিহারে বাস পাঠিয়েছেন। হরিয়ানা ও উত্তর ভারতের বিভিন্ন ছোট ব্যবসায়ীরা অভিবাসী শ্রমিকদের কাজে ফেরাতে কোথাও গাড়ি পাঠিয়ে তাদের নিয়ে এসেছেন, কোথাও পাঠানো হয়েছে বিমানের টিকিট। কেরালা সরকার ঘোষণা করেছে, অতিথি শ্রমিকদের দেওয়া হবে স্বাস্থ্য ও জীবন বীমা।
এছাড়াও এই সব শ্রমিকদের জন্য প্রতি জেলায় তৈরি করা হচ্ছে আপনা ঘর আবাসন প্রকল্প। মধ্য প্রদেশের শিল্প সংস্থাগুলি অফিসার নিয়োগ করেছে গ্রাম থেকে অভিবাসী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য। মুম্বাইয়ের বিভিন্ন নির্মাণ সংস্থার অফিসাররা ফোনে উপার্জনের নিরা'পত্তা ও সুর'ক্ষার প্রতিশ্রু'তি দিয়ে শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে উঠে পড়ে লেগেছে। এই সুযোগে শ্রমিক ঠিকাদারদের দর বেড়ে গিয়েছে। তারাই অনেক জায়গায় শ্রমিকদের ফিরিযে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করতে তৎপর হয়েছেন।