বুধবার, ১০ জুন, ২০২০, ০৯:৫৯:০৫

দিল্লি দা'ঙ্গার চার্জ'শিট দাখিল, অভি'যুক্ত শুধু মুসলিমরাই

দিল্লি দা'ঙ্গার চার্জ'শিট দাখিল, অভি'যুক্ত শুধু মুসলিমরাই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংশো'ধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থক ও বিরো'ধীদের মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে যে সা'ম্প্রদা'য়িক দা'ঙ্গা হয় সেই ঘটনার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। তবে এতে অভি'যুক্ত করা হয়েছে কেবল মুসলিম বিক্ষো'ভকারীদের। সা'ম্প্রদায়িক বিদ্বে'ষ ছড়ানোর অভি'যোগে অভি'যুক্ত বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের নাম উল্লেখই করা হয়নি চার্জশিটে।

দিল্লি পুলিশের দেওয়া অভিযো'গপত্রে ওই সাম্প্র'দায়িক দা'ঙ্গার জন্য প্রধানত দা'য়ী করা হয়েছে সেই সব মুসলিম প্রতিবা'দকারীদের, যারা শহরের নানা প্রান্তে তখন দেশের নতুন নাগরিকত্ব আইনের বি'রু'দ্ধে তী'ব্র বিক্ষো'ভ দেখাচ্ছিলেন। দা'ঙ্গার ঘটনায় যেসব এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বা গ্রে'প্তার হয়েছে, তা থেকে পরিষ্কার, ওই বিক্ষো'ভে জড়িত মুসলিম নেতা বা ছাত্রছাত্রীদেরই এখন দো'ষী বলে চি'হ্নি'ত করা হচ্ছে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে দিল্লির উত্তর-পূর্ব প্রান্তে হিন্দু-মুসলিম দা'ঙ্গায় অন্তত ৫৩ জন নিহ'ত হয়েছিলেন, যাদের বেশির ভাগই ছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের। তার ঠিক আগে শহরে নাগরিকত্ব আইনের বি'রু'দ্ধে প্রতিবাদ চলছিল এবং পাশাপাশি বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরাও প্রতিবা'দকারীদের বি'রু'দ্ধে নানা উস'কানিমূলক বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছিলেন।

দিল্লি বিজেপির বিত'র্কিত নেতা কপিল মিশ্রা ২৩ ফেব্রুয়ারি শহরের মৌজপুর চকে পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েই হু'মকি দিয়েছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতে থাকা পর্যন্ত তারা চু'প থাকবেন কিন্তু তারপরও বিক্ষো'ভকারীরা রাস্তা খালি না-করে দিলে তারা জো'র করে তাদের তুলে দেবেন, পুলিশের কথাও শুনবেন না।

এর কিছুদিন আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এই প্রতিবা'দকারীদের উদ্দেশ্য করেই জনসভা থেকে স্লো'গান দেন- ''দেশের সঙ্গে যারা বেই'মানি করছে তাদের গু'লি করে মা'রা হবে।'' কিন্তু দিল্লি পুলিশের চার্জ'শিটে দা'ঙ্গা কিভাবে হল, তা নিয়ে যে দীর্ঘ ঘ'টনাপর'ম্পরা বর্ণনা করা হয়েছে তাতে এসব বক্তৃতার কোনো উল্লেখই নেই।

ত'দ'ন্ত হয়েছে সাম্প্র'দায়িকতার ভিত্তিতে : দিল্লির দা'ঙ্গাপী'ড়িতদের হয়ে অনেকগুলো মামলা ল'ড়ছেন মানবাধিকার আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেস। তিনি বলছিলেন, ''দা'ঙ্গার সময় পুলিশের বি'রু'দ্ধেই মা'রধ'র, অ'গ্নিসংযো'গ বা ভ'য় দেখানোর অন্তত আশি-নব্বইটা অভি'যোগ এসেছে, কিন্তু পুলিশ একটারও এফআইআর নিতে রাজি হয়নি।''

তিনি আরো বলেন, ''ভি'ক্টিমদের বয়ানের ভিত্তিতে নয়, পুলিশ তদ'ন্তটা সা'জিয়েছে তাদের বানানো গল্প আর সাম্প্র'দায়িকতার ভিত্তিতে। অথচ আমরা সবাই জানি দা'ঙ্গার মূলে ছিল বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের ঘৃ'ণা ছড়ানো ভা'ষণ।'' 

সাংবাদিক-অ্যাক্টি'ভিস্ট সারা নাকভিও বিবিসিকে বলছিলেন, ''বেশির ভাগ টিভি চ্যানেলের ন্যারেটিভে যেভাবে নাগরিকত্ব আইনের বি'রু'দ্ধে প্রতি'বাদকারীদের দেশদ্রো'হী সাজানো হয়েছে, দিল্লি পুলিশও ঠিক সেই লাইনেই তদ'ন্ত করেছে। মনে রাখতে হবে ওই প্রতি'বাদ ছিল নাগরিকদের সমানাধিকারের দাবিতে একটা সিভিল রাইটস মুভমেন্ট। আর দিল্লি পুলিশের চার্জ'শিট পড়লে মনে হচ্ছে মুসলিমরা এতই চালাক আর ক্ষ'মতাশালী যে তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর দা'ঙ্গা চালিয়েছে।''

দিল্লিতে শাহীনবাগ, জামিয়া মিলিয়া বা জাফরাবাদের মতো যারা নাগরিকত্ব আইনের বি'রু'দ্ধে বিক্ষো'ভ দেখাচ্ছিলেন, দিল্লি পুলিশ দা'ঙ্গায় তাদের ভূমিকা বি'শদে বর্ণনা করেছে – এবং এরা প্রায় সবাই মুসলিম। এর আগে দা'ঙ্গার মূল পরিক'ল্পনাকারী হিসেবে আম আদমি পার্টির বহি'ষ্কৃত কাউন্সিলর তাহির হোসেনকেও তারা শনা'ক্ত করেছে।

কেন চার্জ'শিটে বিজেপি নেতাদের নাম নেই: চার্জ'শিটের কোথাও বিজেপি নেতাদের নাম ঘুণা'ক্ষরেও আসেনি। দিল্লি পুলিশের সাবেক একজন কমিশনার, নীরজ কুমার অবশ্য মনে করেন, ''কপিল মিশ্রার বি'রু'দ্ধে যেহেতু সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাটের করা মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, তাই চা'র্জশিটে তার বক্তৃতার কাঁ'টাছেড়া করা সম্ভব হয়নি।'

তিনি আরো মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ''দিল্লি পুলিশ কখনওই বলেনি তার বি'রু'দ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না - দা'ঙ্গায় সবগুলো মামলার সঙ্গে তার বক্তৃতার সম্পর্কও ছিল না।'' চূড়া'ন্ত চার্জ'শিট জমা দেওয়ার জন্য দিল্লি পুলিশ যে ৯০ দিনের সময় পেয়েছে তার অবশ্য এখনো কিছুটা বাকি আছে। কিন্তু এ পর্যন্ত যে ৭০টি চার্জশিট পেশ করা হয়েছে তা থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে, বিজেপি নেতারা দা'ঙ্গায় উস'কানির অভিযোগ থেকে শেষ পর্যন্ত রেহাই পেয়েই যাবেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে