আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অনন্য ভারত। একদিকে যখন দেখা যায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সামান্য কোনও বিষয়ে সংঘ'র্ষে বেঁ'ধে যায়, তেমনই আবার এই দেশেরই বুকে দেখা যায় হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। হরিয়ানার জিন্দ গ্রামের এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, মানব ধর্মের উপর কোনও ধর্ম নেই। মানুষের প্রতি মানুষের কর্তব্যই সর্বশ্রেষ্ঠ।
সোমবার সকালে জিন্দ গ্রামের এক ১৩ বছরের বালিকার মৃ'ত্যুতে সমস্যায় পড়েন তার পরিবারের মানুষ। তাঁদের কবরস্থানে জল জমে থাকায় শেষকৃ'ত্যের কাজে বাধা পড়ছিল। এমন সংক'টের মু'হূর্তে এগিয়ে এল এক হিন্দু প্রতিবেশি। তাঁরাই কবর দেওয়ার জন্যে জমির ব্যবস্থা করে দিলেন। তবে এমন সমস্যা এই প্রথম নয়। গুলকানি গ্রামের বহু মুসলিম পরিবার দীর্ঘদিন ধ'রে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আসছেন।
তাঁদের অভি'যোগ, গত ১০ বছর ধ'রে আত্মীয়দের কবর দিতে গেলে বি'পাকে পড়তে হয় মুসলিম গ্রামবাসীদের। বার বার অভি'যোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। কোনও পদক্ষেপই করেননি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অথবা জেলা প্রশাসন। মেয়ের মৃ'ত্যুর পর দুপুর পর্যন্ত তার দেহ ক'বর দিতে না পেরে অথৈ জলে পড়েছিল ওই মুসলিম পরিবারটি। অবশেষে তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি। তাঁর উদ্যোগেই শেষকৃ'ত্য সম্পন্ন হল বালিকার।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে মৃত বালিকার বাবা জোগিন্দর বলেন, ‘জেলা প্রশাসন আমাদের চাহিদা মেটাতে অক্ষম। কবরস্থান হিসেবে পরিষ্কার জায়গার দাবি বহুবার করেছি, কিন্তু কেউই আমাদের কথায় কান দেননি। আজ এক হিন্দু পরিবার এগিয়ে এসে কবরস্থানের কাছে একটুকরো জমি দিয়েছে আমাদের। উনি পেশায় কৃষক। টানেলের জল পেলে ওঁকে জমি চাষ করতে হয়। তবুও তিনি এগিয়ে এসে আমাকে সাহায্য করেছেন। বহু দিনের এই সমস্যা মেটাতে প্রশাসন ব্যর্থ হলেও আমাদের প্রতিবেশি পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু এবার আমরা এই সমস্যার পাকাপাকি সমাধান চাই।’
গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান জয়দীপ সিং জানিয়েছেন, ‘গ্রামে মোট ১৬টি জাতের মানুষের বাস। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশেই থাকেন। অবিরাম বৃষ্টির কারণেই কবরস্থানে জল জমেছে। এই জল বের করার জন্যে আমি দু’জনকে কাজে নিয়োগ করেছি। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব যাতে গ্রামের মুসলিম বন্ধুদের ভবিষ্যতে এই নিয়ে কোনও সমস্যা না হয়।’-এই সময়