রবিবার, ২৬ জুলাই, ২০২০, ১২:২৭:৩০

মুকুল রায় কি বিজেপি ছেলে ফের মমতা ব্যানার্জী দলে ফিরছেন?

মুকুল রায় কি বিজেপি ছেলে ফের মমতা ব্যানার্জী দলে ফিরছেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভোট প্রস্তুতি বৈঠকের মধ্যেই দিল্লি ছেড়ে আচমকা কলকাতায় ফিরেছেন মুকুল রায়। আর সেই খবরকে কেন্দ্র করেই হইচই শুরু রাজ্য রাজনীতিতে। মুকুল রায় চোখের চিকিৎসার কথা জানালেও রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মতান্তরের খবরে রাজ্য বিজেপির অন্দরের অস্বস্তি স্পষ্ট বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। 

আর এরমধ্যেই বিস্ফোরক দাবি প্রকাশিত এক ইংরেজি ওয়েবসাইটে। যা অনুযায়ী, মার্চ থেকেই রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন একদা মমতা ব্যানার্জী পর তৃণমূলে দু'নম্বর মুকুল রায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতাকে উদ্ধৃত করে এমনই জানিয়েছে দ্য কুইন্ট।

ওই ওয়েবসাইটের দাবি, মার্চ থেকেই তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মুকুল রায় ও তার ছেলে শুভ্রাংশু। মমতা-ঘনিষ্ঠ এক নেতাকে উদ্ধৃত করে দ্য কুইন্ট জানিয়েছে, আলোচনা হলেও এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, এই বিষয় নিয়ে মুকুল রায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল ওই সংবাদমাধ্যম। বিজেপি নেতা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বিজেপিতেই রয়েছেন। পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনেও তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। তাই 'কোনও জল্পনার সুযোগ নেই।'

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কোন র'ণকৌ'শল নিয়ে এগোবে, তা স্থির করার জন্য দিল্লিতে সপ্তাহব্যাপী বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠক ডেকেছেন দলের সর্বভারতীয় সহকারী সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ এবং পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সেই মতো বুধবার বিজয়বর্গীয়র বাড়িতে আয়োজিত 'প্রস্তুতি' বৈঠকে যোগ দেন মুকুল রায়। 

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই বৈঠকেই তাল কে'টেছে। বিজেপি যত সহজে বাংলা জয়ের কথা ভাবছে, তত সহজ হবে না বাস্তব পরি'স্থিতি, সর্বসমক্ষে এই যুক্তি জানানোর জেরে প্রকাশ্যেই খা'রিজ করা হয় মুকুল রায়ের বক্তব্য। আর এরপরই বৃহস্পতিবার রাতে দিলীপ ঘোষের বাড়িতে আয়োজিত বৈঠকে যোগ দেননি জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়। শুক্রবার লখনউ হয়ে কলকাতা ফেরেন তিনি।

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, র'ণকৌ'শল বৈঠকে কেন্দ্রীয় এক নেতার পেশ করা দাবি নিয়ে আ'পত্তি তুলেছিলেন মুকুল রায়। ওই নেতার দাবি ছিল, বিধানসভা নির্বাচনে ১৯০ আসন পাচ্ছে বিজেপি। তবে আ'পত্তি জানিয়ে মুকুল রায় বলেন, খাতায়-কলমে বাংলা জয় সহজ মনে হলেও আসলে কাজটা বহুগুণ ক'ঠিন। এই পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাংলার বাস্তব চিত্রের কোনও মিল নেই। এই বক্তব্যই ভালো ভাবে নেননি রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা।

সপ্তাহব্যাপী বৈঠকের পরিবর্তে একদিন বৈঠক করেই যেভাবে মুকুল রায় কলকাতায় ফেরেন, তা নিয়ে জ'ল্পনা ছড়িয়েছে হু হু করে। তবে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুকুল রায় বলেন, ''চোখের সম'স্যা অনেকদিন ধ'রেই। যে ডাক্তার আমাকে দেখেন, তিনি সময় দিয়েছেন শুক্রবার। তাই কলকাতায় ফিরছি।''

এদিকে, সাউথ অ্যভিনিউয়ের ১৮১ নম্বরে মুকুল রায়ের দিল্লির বাসভবন থেকে সরে গিয়েছে বিজেপির যাবতীয় প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার। গেটের পাশে দেওয়াল জুড়ে এত দিন ছিল নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের ছবি-সম্বলিত প্ল্যাকার্ড। কিন্তু এখন খাঁ খাঁ করছে। বিজেপি নেতৃত্বের কাছে তার দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব অথবা রাজ্য বিজেপিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। যাতে ২০২১ সালের ভোটের লক্ষ্যে নিজের রাজনৈতিক কাজকর্ম নিজের মতো করে চালিয়ে যেতে পারেন তিনি। কিন্তু দেখা গেল, দিল্লিতে থেকেও পশ্চিমবঙ্গের ভোট-প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক এড়িয়ে শুক্রবার কলকাতায় ফিরে গেলেন তিনি। 

সূত্রের বক্তব্য, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মতান্তরের জেরেই কলকাতার উড়ান ধ'রলেন মুকুল। পাশাপাশি, এটাও মনে করা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে তার চাহিদামাফিক কোনও পদ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে আসায় তিনি কিছুটা হ'তা'শও। তবে সূত্রের মতে, বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তরে নেতৃত্বের সঙ্গে সার্বিক তি'ক্ততা বাড়লেও এবং তৃণমূলের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে যোগাযোগ রাখলেও নিজের ইচ্ছামাফিক দলত্যা'গ করে অন্য দলে যোগ দেওয়া মুকুলের পক্ষে সম্ভব নয়। তার ঘাড়ের উপরে ঝুলছে সিবিআই-এর খাঁ'ড়া।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে