শুক্রবার, ০৭ আগস্ট, ২০২০, ০১:২৮:১০

এরদোয়ানকে ‘সৌদির আসনে’ বসাতে চান ইমরান খান ও শি জিনপিং

এরদোয়ানকে ‘সৌদির আসনে’ বসাতে চান ইমরান খান ও শি জিনপিং

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসলামি বিশ্বের নেতৃত্বের ভূমিকা পাওয়ার জন্য গেল কয়েক বছর ধ'রে তী'ব্র ল'ড়াই করে যাচ্ছে তুরস্ক। আয়া সোফিয়াকে পুনরায় মসজিদে ফে'রানোর পরে আঙ্কারার ইউরোপীয় ইউনিয়নে অ'ন্তর্ভু'ক্ত হওয়ার আশা চু'রমা'র হয়ে গেছে। বরং আয়া সোফিয়াকে মসজিদে ফিরিয়ে তুরস্ক ইসলামপ'ন্থীদের দিকে আরো ঝুঁ'কছে।

তুরস্কের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আঙ্কারার পুরোনা মিত্র পাকিস্তান রয়েছে তার সঙ্গে। তুরস্কের পাশাপাশি বৈশ্বিক পরাশ'ক্তি চীনের সঙ্গেও ইসলামাবাদের রয়েছে শ'ক্তিশালী সম্পর্ক।১৯১৮ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত ভারতে চলামান খেলাফত আন্দোলনের মাধ্যমে তুরস্ক-পাকিস্তানের মধ্যে বর্তমান সম্পর্কের সূ'ত্রপা'ত হয়।আন্দোলনের লক্ষ্যে ছিল গ্রেট ব্রিটেনের আগ্রাসন থেকে অটোমান সামরাজ্যের অখ'ণ্ডতা এবং ইসলামি খেলাফত র'ক্ষা করা।
পাশাপাশি স্বাধীনতা যু'দ্ধে হিন্দু-মুসলমানকে ঐক্যব'দ্ধ করা। উভয়ের শ'ত্রু ইংরেজ বেনিয়াদের বিরু'দ্ধে।

২০০৩ সালে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইপ এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ বলেছিলেন, নর্দান আয়ারল্যান্ড বিষয়ে আঙ্কারা যে নীতি নির্ধারণ করবে, আমরা বলছি, পাকিস্তান তাতে সন্দে'হাতী'তভাবে সমর্থন দেবে। আমরা শতভাগ তুরস্ককে সমর্থন করবো। প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ ও ক্ষমতায় থাকাকালীন একই বাক্যের পুনরাবৃত্তি করেছিলেন যে সাইপ্রাস ই'স্যুতে তুরস্কের সং'গ্রামে আমরা পূর্ণ সমর্থন অব্যাহ'ত রাখবো।

২০০৩ সালে রিসেপ তাইপ এরদোয়ান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে পাকিস্তানের ভূমিকা অত্যন্ত ইতিবাচক। আমরা তাদের আন্তরিক সাধুবাদ জানাই। কাশ্মীর ই'স্যুতে পাকিস্তানকে পূর্ণ সমর্থন দেবে তুরস্ক। অবশ্যই সং'ক'টের দ্রু'ত সমাধান হওয়া জরুরি।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান কাশ্মীর ইস্যুতে সরাসরি পাকিস্তান এবং কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামীদের সমর্থন দেয়ায় ভারত-তুরস্ক সম্পর্কের অবন'তি হয়। এর মাধ্যমে ফিনান্সিয়াল অ্যা'কশ'ন টাস্ক ফো'র্সের সঙ্গে পাকিস্তানের চলা দ্ব'ন্দ্বে ইসলামাবাদকে সহায়তা করে আঙ্কারা।

ওই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বক্তব্যে কাশ্মীর ই'স্যুতে কারো পক্ষ নিয়ে কথা বলেননি। তিনি বলেন, তুরস্ক এবং তুর্কি জনগণ কাশ্মীরীদের প্রতি সং'হতি প্র'কাশ করছে। কাশ্মীরীরা নানা ধরনের নি'র্যাত'ন নি'পী'ড়নের শি'কার হচ্ছেন। কাশ্মীর রাজ্যের বর্তমান পরিস্থি'তিতে আমরা গভী'রভাবে উ'দ্বি'গ্ন। দিনে দিনে সেখানকার পরিস্থি'তি খা'রাপ হচ্ছে। কাশ্মীর সং'ক'ট নিরসনে কাশ্মীরী ভাই-বোনদের ইচ্ছা অ'নুযায়ী জাতিসংঘের রে'জ্যুলে'শনের ভিত্তিতে পাকিস্তান ও ভারতের আলোচনার পক্ষে তুরস্ক।

নানা সময়ে পাকিস্তান এবং তুরস্ক যৌথ সাম'রিক ম'হড়ায় অংশ নিয়েছে। ১৯৯০ এর শুরুতে পাকিস্তানের এফ-১৬ যু'দ্ধবিমানের আধুনিকায়ন হয় তুরস্কে। এরই ধারবাহিকতায় গেলো দু’বছরে চীনের পরই পাকিস্তান সেনাবাহি'নীকে সবেচেয়ে বেশি অ'স্ত্র সরবরাহ করেছে তুরস্ক। ২০১৮ সালে দেড়শ’ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে তুরস্ক থেকে ৩০টি টি-১২৯ তুর্কি হেলিকপ্টার ক্রয় করে পাকিস্তান।

২০১৯ সালে ১১ অক্টোবরে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্কের অ'পারে'শন ‘পিস স্প্রিং'’কে সমর্থন জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এটা কোনোভাবেই কাকতালীয় নয়। এর আগে কুর্দি ওয়ার্কার পার্টির বিরু'দ্ধে অভি'যানেও আঙ্কারাকে সমর্থন দেয় ইসলামাবাদ।

ফেতুল্লাহ গিলনের সমর্থককর্মীদের স'রিয়ে নেওয়ার পরও তুর্কি ভাষা ফাউন্ডেশনের অধীনে পাকিস্তানে তুর্কি ভাষার স্কুল ও কলেজে একটি প্রকল্প চা'লু আছে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে উর্দু ও দারিতে অনুবাদ হওয়া তুর্কি নাটকের ব্যা'পক চাহিদা রয়েছে। পরস্পরের নাগরিকরা একে অপরের দেশে ভ্রমণের মাধ্যমে নিজেদের পর্যটন শিল্পও সক্রি'য়ভাবে বি'কা'শিত করছে ইসলামাবাদ ও আঙ্কারা।

আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের মধ্যে মধ্য'স্থতারও চেষ্টা করেছে তুরস্ক। তুরস্কের আমন্ত্রণে ২০০৭ সালের ২৯ এপ্রিল আঙ্কারায় আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এবং প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের ফলাফলের ভিত্তিতে স'ন্ত্রা'সবাদ মো'কাবি'লাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌথ সহযোগিতা ঘো'ষণা করে আঙ্কারা। অভ্যন্তরীণ বিশ্বাস তৈরিতে একটি জয়ে'ন্ট গ্রু'পও তৈরি করা হয়।

একইসময়ে ইস্তাম্বুল প্রসেস নামে ২০১১ সালে তুরস্ক আরেকটি প্রচে'ষ্টা হাতে নেয়। কিন্তু এসব সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের মধ্যকার দীর্ঘদিনের সং'ক'ট নি'রসন এবং দু’পক্ষের সম্পর্ক জো'রদার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি।

চীনের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্কের কারণে, পাকিস্তান পূর্ব তুর্কিস্তান ইসলামী আন্দোলনের বি'দ্রো'হীদের স'ন্ত্রা'সবাদী হিসাবে অভিহি'ত করে। আর তুরস্ক নিয়মিত জিনজিয়ানের অশো'ভন নীতির জন্য চীনের স'মালো'চনা করে আসছে।চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করি'ডোর এবং বেইজিংয়ের সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক উন্নতির ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পরে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান উইঘুর ই'স্যুতে তার অবস্থান কিছুটা পরিবর্তন করেন।এসবের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক খা'রাপ হচ্ছে। অন্যদিকে সম্পর্ক জো'রদার হচ্ছে তুর্কি রুশ সম্পর্ক।

পরিশেষে বলা যায় চীন এবং পাকিস্তানের সহায়তায় সৌদি আরবকে স'রিয়ে ইসলামি  বিশ্বের নেতৃত্বের আসনে আরোহন করতে চান তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান।ইউরো এশিয়ান টাইমস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে