শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০, ০৯:০২:৫৪

গত ১০ দিনে ট্রাম্পের সমর্থন ২২ শতাংশ কমেছে, জনপ্রিয়তায় এগিয়ে যাচ্ছেন বাইডেন

গত ১০ দিনে ট্রাম্পের সমর্থন ২২ শতাংশ কমেছে, জনপ্রিয়তায় এগিয়ে যাচ্ছেন বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনা সংক্রমণ এবং এ নিয়ে তার মন্তব্য ও কার্যকলাপে নির্বাচনী জনপ্রিয়তায় এগিয়ে যাচ্ছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন। ট্রাম্প কোয়ারেন্টাইনের কোনো নিয়ম না মেনে মাত্র তিন দিনের মাথায় নাটকীয়ভাবে হাসপাতাল থেকে ফিরে এসে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তার করোনা ঈশ্বরের আশীর্বাদ বলে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছেন।

এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রা'ন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার নির্বাচনী সমাবেশে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজ শনিবার ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের একটি জনসভা হওয়ার কথা। ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন আগ্রহের কথা জানান এ রিপাবলিকান প্রার্থী।

সিএনএন, রয়টার্সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্প তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে অন্তত ২০ শতাংশ মানুষের বিরাগভাজন হয়েছেন। শুক্রবার রয়টার্স প্রকাশিত এক জ'রিপে দেখা যায়, করোনা পরিস্থি'তি নিয়ে ট্রাম্পের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ ধারাবাহিকভাবে আস্থা হারাচ্ছে। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পরিচালিত ওই জরিপে দেখা যায়, ৫৯ শতাংশ নাগরিক করোনা মহামা'রি সামাল দিতে ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। মাত্র ৩৭ শতাংশ লোক তাকে সমর্থন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় এ ইস্যুতে গত ১০ দিনে তার সমর্থন অন্তত ২২ শতাংশ কমেছে।

এসব সত্ত্বেও রিপাবলিকান সমর্থকরা আগামী ৩ নভেম্বরের ভোটে ট্রাম্প বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদী। অন্যদিকে, বাইডেন তার প্রতিদ্বন্দ্বীর রোগমুক্তি কামনা এবং তার অসুস্থ অবস্থায় তার বিরু'দ্ধে নেতিবাচক প্রচার বন্ধ রেখে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।

ট্রাম্পের কট্টর সমর্থক রিপাবলিকান দলের নিউইয়র্কের কুইন্স অফিসের অন্যতম সংগঠক লিসা পার্ক বলেন, বর্তমান এবং আগামীর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রচ শক্তিশালী। তিনি আক্রা'ন্ত হয়েও মানুষের কথা বিবেচনা করে ফিরে এসেছেন হাসপাতাল থেকে। বাইডেন আক্রা'ন্ত হলে আর ফিরতে পারতেন না কোনো দিন।

ডেমোক্র্যাট সমর্থক নিকোলাস কোলম্যান বাইডেনের প্রশংসা করে বলেন, যে ব্যক্তি নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীর রোগমুক্তি কামনা করতে পারেন, তিনি কতটা মানবিক, তা আপনি নিজেই অনুধাবন করতে পারবেন। করোনা সময়ের প্রথম থেকে বাইডেন যে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন, তার ক্ষুদ্রাংশও ট্রাম্প দেখাতে পারেননি। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন বাইডেন। অনেক দিন ধরে সিনেটর ছিলেন, ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ নানা পদে। আমি মনে করি, দেশের এই ক্রান্তিকালে বাইডেনের মতো প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন।

বাংলাদেশি ট্রাম্প সমর্থক পারমিতা সেন বলেন, বর্ণবাদবিরোধী আ'ন্দোলনে বিপুলসংখ্যক মানুষ মাস্ক ব্যবহার না করায় দেশে করোনা সং'ক্রমণ বেড়েছে। ডেমোক্র্যাট অধ্যুষিত রাজ্যগুলোর গভর্নর ও মেয়রদের দায়িত্ব অবহেলার কারণেও করোনা দ্রুত ছড়িয়েছে। অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদান থেকে শুরু করে করোনা মো'কাবিলায় সম্ভাব্য সবকিছু করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আলাবামার ডিজিটাল জার্নালিজম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, দায়িত্বহীন আচরণের কারণে প্রেসিডেন্ট নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন; দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও প্রেসিডেন্ট যেভাবে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এসে শোভাযাত্রা করেছেন, হোয়াইট হাউসে ফিরে মাস্ক খুলে ফেলেছেন, করোনাকে ঈশ্বরের আশীর্বাদ বলছেন, এসব কাম্য ছিল না। প্রেসিডেন্ট তার শিবিরেরই অনেককে ঝুঁকিতে ফেলেছেন। জো বাইডেন তেমন ক্যারিশম্যাটিক কোনো প্রার্থী নন। এর পরও ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় তিনি অত্যন্ত দায়িত্বশীল।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে