শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২০, ১২:২১:২৯

শুধু আজারবাইজান নয়, বিশ্ব রাজনীতির লড়াইয়ে আর্মেনীয় ফ্রন্টে তুরস্কেরও জয়

শুধু আজারবাইজান নয়, বিশ্ব রাজনীতির লড়াইয়ে আর্মেনীয় ফ্রন্টে তুরস্কেরও জয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অন্যদিকে আজারবাইজানের পক্ষে ছিল তুরস্ক। তুরস্ক আজারবাইজানকে অস্ত্র ও লোকবল দিয়ে সহায়তা করেছে। বিস্ময়করভাবে আজারবাইজানের পক্ষে ইসরায়েলের নাম শোনা গেছে। যদিও ইসরায়েল দুই দেশের কাছেই অস্ত্র বিক্রি করে। সবকিছুকে ছাপিয়ে বড় চমক ছিল তুরস্কের সরবরাহ করা ড্রোন। এই ড্রোন ব্যবহার করে আজারবাইজান আর্মেনিয়াকে ঘায়েল করেছে। 

ফ্রান্সের নির্মিত ক্ষেপণাস্ত্র তুর্কি ড্রোনকে তাড়া করলেও এর কার্যকারিতার বিষয়টি নাগরনো কারাবাখের আর্মেনীয় নেতাও স্বীকার করেছেন। আজারবাইজান যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, তখনই রাশিয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে দৃশ্যপটে উপস্থিত হয়। তুরস্ক এই চুক্তিকে আজারবাইজানের বিজয় বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তবে এটা শুধু আজারবাইজানের বিজয়ই নয়, তুরস্কেরও বিজয়। তুরস্ক বেশ কয়েকটি ফ্রন্টে এখন লড়াই করছে। 

সিরিয়া, লিবিয়া ও ভূমধ্যসাগরে। ন্যাটোর সদস্য তুরস্ককে কোনোভাবেই বাগে আনতে পারছে না পশ্চিমারা। ইউরোপের নানা হুমকি–ধমকিকে উপক্ষো করেই ভূমধ্যসাগরে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানে জাহাজ পাঠিয়েছে। লিবিয়াতেও তুরস্ক সেনা পাঠিয়েছে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, বিভিন্ন যুদ্ধে তুরস্ক জড়িয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি। ২০২৩ সালে লুজার্নের চুক্তি শেষ হবে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত তুরস্ককে নানাভাবে চাপে রাখতে চাইবে ইউরোপীয় দেশগুলো। 

সম্ভব হলে তুরস্ক ক্ষমতার পটপরিবর্তনের উদ্যোগ নেবে। এই অবস্থায় এরদোয়ানের তুরস্ক আক্রমণাত্মক ভূমিকা অবলম্বন করছে। সিরিয়া ও ভূমধ্যসাগরে তুরস্ক খুবই আগ্রাসী ভূমিকা পালন করছে। তুরস্ক কখনোই সিরিয়ায় স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা মানবে না। শুধু কুর্দিস্তানই নয়, আশপাশেও পশ্চিমাদের উপস্থিতি তুরস্কের জন্য বিপজ্জনক হবে। তাই তুরস্ক শক্তির মহড়া দিচ্ছে। নাগরনো কারাবাখে সেই মহড়াই হয়ে গেল। তুরস্ক আক্রমণকেই সব থেকে ভালো রক্ষণকৌশল বলে মনে করছে।

এই কৌশলের অংশ হিসেবেই তুরস্ক নাগরনো কারাবাখ সংকটে সম্পৃক্ত হয়। এখানেই ফ্রান্সের সঙ্গে একটি ছায়াযুদ্ধ হয়ে গেল। ফ্রান্সের দিনকাল খুব ভালো যাচ্ছে না। দেশের অভ্যন্তরে নানা বিতর্ক, উগ্র দক্ষিণপন্থীদের ক্রমাগত উত্থান, সন্ত্রাসী হামলার কারণে হতাশাজনক এক সময় পার করছে। এ হতাশা কাটাতে ফ্রান্স আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে খুব হম্বিতম্বি শুরু করেছে। ফ্রান্স এখন ইসলামের সংকট খুঁজে বের করছে। একসময় ইউরোপীয়রা ইহুদিদের সংকট মনে করত। 

ইহুদি সংকট নিয়ে বীতশ্রদ্ধ ইউরোপ নিজেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে যায়। ইসলামের সংকট নিয়ে ইউরোপ কোথায় পৌঁছায়, বলা মুশকিল। তবে ফ্রান্স খুব করে চাইছে, যেকোনো প্রকারে তুরস্কের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হতে। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হয় হয় করে হচ্ছে না। ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের জাহাজ পাঠানোর প্রতিক্রিয়ার ফ্রান্স যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছিল। কিন্তু সেখানে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ হয়নি। এর আগে লিবিয়াতেও খুব বেশি কার্যকর হয়নি ফ্রান্সের নীতি ও কৌশল। ফ্রান্স যুদ্ধবাজ জেনারেল খলিফ হাফতার সমর্থন করছে। আর ওদিকে ভাড়াটে সৈন্য পাঠিয়ে সব তেলের খনি দখল করেছে রাশিয়া। এ ছাড়া তুরস্ক সৈন্য পাঠিয়ে লিবিয়ার জাতিসংঘ স্বীকৃত সরকার সহায়তা করছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে