মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৮:২০:১৬

কানাডায় নির্বাসিত পাকিস্তানি নারী মানবাধিকারকর্মীর মরদেহ উদ্ধার

কানাডায় নির্বাসিত পাকিস্তানি নারী মানবাধিকারকর্মীর মরদেহ উদ্ধার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডার টরেন্টোতে নির্বাসিত পাকিস্তানি অধিকারকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৩৭ বছর বয়সী কারিমা বালুচের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় সংঘাতপূর্ণ বেলুচিস্তানের বাসিন্দা তিনি। সরকার এবং দেশটির সেনাবাহিনীর কট্টর সমালোচক ছিলেন তিনি। 

রোববার তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর টরেন্টোর পুলিশ একটি সাধারণ ডায়েরি করে। পরে কারিমার বন্ধুরা জানান, তার মরদেহ পাওয়া গেছে। ২০১৬ সালে বিবিসি'র বার্ষিক প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় ছিলেন তিনি। শনিবার টরেন্টো পুলিশ টুইটারে জানায়, ওইদিন তাকে পশ্চিমাঞ্চলীয় কোয়ে কুইন্সের বে স্ট্রিটে সবশেষ দেখা গিয়েছে। পরে আবার জানানো হয়, তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে বিস্তারিত জানানো হয়নি।

কারিমার বন্ধু এবং সহকর্মীরা জানান, পুলিশের টুইটের পরই তার মরদেহের খোঁজ মেলে। কিভাবে তিনি মারা গেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। কারিমার বোন মঙ্গলবার বিবিসি উর্দুকে জানান, তার মৃত্যু শুধু পরিবারের জন্য মর্মান্তিক নয়, পুরো বেলুচ আন্দোলনের জন্য দুঃসংবাদ। 

মাহগানজ বেলুচ বলেন, কারিমা কখনোই বিদেশে যেতে চাননি। কিন্তু দেশে থেকে তার কার্যক্রম পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে বেলুচিস্তান প্রদেশ বিচ্ছিন্নতাবাদীর আখড়া। কারিমা ২০০৬ সালে বেলুচ স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের (বিএসও) প্রথম নারী নেত্রী ছিলেন। বর্তমানে সংগঠনটির বেশিরভাগ কর্মী গা ঢাকা দিয়ে আছেন। ২০১৩ সালে পাকিস্তান সরকার সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করে।

কারিমার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে মামলা হওয়ার পর ২০১৫ সালে তিনি কানাডা পাড়ি জমান। সেখানে তিনি আরেক মানবাধিকারকর্মী হামাল বেলুচকে বিয়ে করেন। নির্বাসিত থাকা অবস্থায় কানাডা এবং ইউরোপে মানবাধিকার নিয়ে সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সোচ্চার ছিলেন তিনি। বেলুচিস্তানের তুরবাত এলাকায় নিখোঁজ আত্মীয়ের সন্ধানের দাবিতে আন্দোলন করে প্রথম অধিকারকর্মী হিসেবে আলোচনায় আসেন তিনি।

বেলুচিস্তানের অধিকারকর্মীরা জানান, সাম্প্রতিক বছরে তাদের কয়েক হাজার কর্মী নিখোঁজ হয়েছে। অঞ্চলটির স্বায়ত্বশাসনের জন্য লড়াই করছিলেন তারা। নিখোঁজের জন্য পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দায়ী করা হয়। তবে আন্দোলনে বলপ্রয়োগ এবং নিখোঁজের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাক সেনাবাহিনী।

কারিমার পরিবারের কয়েকজন সদস্য বেলুচ প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর ধরে জড়িত। আন্দোলনে জড়িত থাকায় তার এক মামা এবং এক চাচাকে অপহরণ করা হয়। পরে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। কারিমার মৃত্যুতে ৪০ দিনের শোক ঘোষণা করেছে বেলুচিস্তান ন্যাশনাল মুভমেন্ট (বিএনএম)।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া অফিস এক টুইট বার্তায় জানায়, টরেন্টোতে অধিকারকর্মী কারিমা বেলুচের মৃত্যুতে কানাডা গভীরভাবে শোকাহত। মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত এবং কার্যকরী তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানায় অ্যামনেস্টি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে