সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৯:৪৮:৩৭

কাশ্মীরে বেসামরিক মানুষ হত্যা, ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা অভিযুক্ত

কাশ্মীরে বেসামরিক মানুষ হত্যা, ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা অভিযুক্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরে নিহত তিন শ্রমিকের মৃতদেহের ওপর অস্ত্র রেখে তাদেরকে সশস্ত্র যোদ্ধা বা সন্ত্রাসী হিসেবে দেখানোর অভিযোগে রোববার একজন সেনা কর্মকর্তা ও তার দু'সহযোগীকে অভিযুক্ত করেছে ভারত। জুলাইয়ে ওই তিন শ্রমিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভারতশাসিত কাশ্মীরে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। 

ভারতীয় পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় হত্যা, ষড়যন্ত্র ও অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে ক্যাপ্টেন ভুপেন্দ্র সিংকে। বর্তমানে তিনি সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আটক রয়েছেন। ঘটনার সময় বেসামরিক দু'জন 'সোর্স' তার সঙ্গে ছিলেন। তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। রোববার দিনশেষে পুলিশি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মৃতদেহগুলোর পরিচয় মুছে ফেলার পর ওই কর্মকর্তা ও তার দুই সহযোগী অবৈধ উপায়ে অস্ত্র সংগ্রহ করে তা ওই মৃতদেহের ওপর রেখে দেয়।

এর মাধ্যমে তাদেরকে তারা সন্ত্রাসী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে। সেপ্টেম্বরে ভারতের সেনাবাহিনী স্বীকার করে তাদের সেনারা বিতর্কিত আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্টের (এএফএসপিএ) অধীনে অতিরিক্ত ক্ষমতা ভোগ করছে। এই ক্ষমতাবলে তারা বেসামরিক ব্যক্তিদের হত্যা করে দায়মুক্তি ভোগ করে। কাশ্মীরে ওই ঘটনার পর প্রথমেই সেনাবাহিনী বলেছিল, দক্ষিণ কাশ্মীরের আমশিপোরা গ্রামে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ওই তিন ব্যক্তি। এ সময় সেখানে তিনটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর দ্রুততার সঙ্গে প্রত্যন্ত সীমান্ত এলাকায় তাদের মৃতদেহ মাটিচাপা দেয়া হয়।

এ ঘটনার এক মাস পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নিহতদের ছবি দেখে পাহাড়ি রাজৌরি এলাকায় বসবাস করা তাদের পরিবার তাদের শনাক্ত করে। এ সময় পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা কাশ্মীরে আপেল তোলার কাজ করতে গিয়েছিলেন। তারা শ্রমিক। তারা সন্ত্রাসী নন। যে তিনজনকে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত বলা হয়, তার মধ্যে ছিলেন ইবরার আহমেদ। তিনি জাভেদ আহমেদের (৩৫) ছোট ভাই। 

জাভেদ আহমেদ বলেছেন, ওই ঘটনার পর তার পরিবারে শান্তি হারিয়ে গেছে। ন্যায়বিচার চেয়ে তারা ঘুমহীন দিনরাত্রি পাড় করছেন। তিনি জম্মুর রাজৌরে বসবাস করেন। সেখান থেকে তিনি বলেছেন, নিহতদের মধ্যে আমার এক ভাই ছিল। অন্য দু'জন কাজিন। ন্যায়বিচার পাবো কিনা আমরা তা জানি না। পুরো কাহিনীও আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। এই বর্বর কর্মকাণ্ডের পিছনের প্রতিটি সত্য আমাদেরকে জানাতে হবে।

ওদিকে ঘটনার পর ভারতীয় সেনাবাহিনী আলাদাভাবে তদন্ত করে। কাশ্মীরে রয়েছে তাদের ৫ লাখেরও বেশি সদস্য ও পুলিশ। তারা বলেছে, ওই হত্যাকাণ্ডের পরেই তারা বন্দুকযুদ্ধের বিষয়টি জানতে পেরেছে। এই হত্যাকান্ড স্বাভাবিক নিয়মের লঙ্ঘন। গত সপ্তাহে সেনাবাহিনী বলেছে, তারা তথ্যপ্রমাণ রেকর্ড করেছে। মামলা গুছিয়ে আনা হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র : আল জাজিরা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে