শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২১, ০৪:২৭:২৪

শুরুতেই পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বড় আঘাত

শুরুতেই পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বড় আঘাত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি নতুন প্রেসিডেন্টের প্রশাসন দক্ষিণ এশিয়ায় তার দীর্ঘমেয়াদী মিত্র তৈরির জন্য একটি করে নতুন 'উইশ-লিস্ট' তৈরি করে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের দিকে দৃষ্টি পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। কিন্তু এই সম্পর্কে কূটনৈতিক বৃত্তে প্রথম দফায়ই বড় আঘাত লেগেছে। 

এরই মধ্যে জো বাইডেন প্রশাসন ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রথম দফায় সম্পর্কের চুলচেরা বিশ্লেষ শুরু হয়েছে। পক্ষ-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক চলছে। বলা হয়েছে, সেই সম্পর্ক এরই মধ্যে হোঁচট খেয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানে ২০০২ সালে মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লকে শিরচ্ছেদ করেছিল আহমেদ ওমর সাঈদ শেখ। এ ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে তাকে চিহ্নিত করা হয়।

সিন্ধু হাই কোর্ট তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট তাকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে প্রথম দফায়ই ধাক্কা খেলো পাকিস্তান। ফলে আদালতের এমন নির্দেশে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউজ। এই রায়কে সর্বত্র সন্ত্রাসের শিকার ভিটকটিমদের বিরুদ্ধে বলে অভিহিত করেছে হোয়াইট হাউজ। 

প্রেস সেক্রেটারি জেন পসাকি সাংবাদিকদের বলেছেন, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকার সাংবাদিক ডানিয়েল পার্লকে অপহরণের পর নৃশংসভাবে হত্যাকারীদের বেকসুর খালাস দেয়ার পাকিস্তানি সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র ক্ষুব্ধ। ডানিয়েল পার্লকে অপহরণ ও হত্যা সচেতন বিশ্ববাসীকে ২০০২ সালে হতবাক করেছে। এ সিদ্ধান্তের আইনগত পর্যালোচনার দিকে পাকিস্তানকে চাপ দিয়ে সেক্রেটারি জেন পসাকি আরো বলেন, আমরা আগে দেখেছি পাকিস্তান ডানিয়েল পার্লের ঘাতকদের জবাবদিহিতার আওতায় এনেছিল। 

কিন্তু এখন আমরা দেখছি, বর্তমানে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কর্তৃপক্ষের কাছে আটক আছে আহমেদ ওমর সাঈদ শেখ। পাকিস্তান সরকারের কাছে আমরা এ সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক পর্যালোচনা দাবি করছি। তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও সাংবাদিক ডানিয়েল পার্লকে নৃশংস হত্যায় সাঈদ শেখের বিচারে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িত করার অনুমোদন দেয়া উচিত।

এর আগে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত এটর্নি জেনারেল জেফ্রে রোজেন একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। তারপর এটাই ডানিয়েল পার্লের হত্যার বিষয়ে হোয়াইট হাউজের কড়া প্রতিক্রিয়া। জেফ্রে রোজেন বলেছিলেন, বিচারের জন্য ওমর শেখকে হেফাজতে নিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ডানিয়েল পার্লকে পাকিস্তান সরকারের আটকাবস্থায় রাখার আবেদনের বিপরীতে রায় দেয় সিন্ধু হাই কোর্ট। এরপরেই ওই মন্তব্য করেন জেফ্রে রোজেন।

সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে বেশ কিছু আপিল পায়। ফলে সম্প্রতি ডানিয়েল পার্ল হত্যা মামলাটি নতুন একটি মাত্রা পায়। এসব আপিল করেছিলেন সিন্ধু সরকারের পক্ষে প্রকিসিউটার জেনারেল ড. ফয়েজ উল্লাহ, নিহত সাংবাদিকের পিতামাতা রুথ পার্ল ও জুদেয়া পার্ল-এর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী ফয়সাল সিদ্দিকী। অন্যদিকে এ মামলার প্রধান আসামী সাঈদ শেখ আপিল করেছিলেন আইনজীবী মেহমুদ এ. শেখের মাধ্যমে।

আপিলে সিন্ধু হাই কোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। এতে মার্কিন সাংবাদিক অপহরণ ও হত্যায় অভিযুক্ত সাঈদ শেখকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়া হয়। এ রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি মুশির আলমের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারকের প্যানেল। এই মামলায় আরো তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছিল পাকিস্তানের আদালত। কিন্তু পরে তাদেরকেও বেকসুর খালাস দিয়েছে সিন্ধু হাইকোর্ট। 

তাদেরকেও মুক্ত করে দেয়ার কথা। ফলে ডানিয়েল পার্লের পরিবার আইনজীবীর মাধ্যমে এই মামলার বিচারকে পুরোপুরি এক প্রহসন বলে আখ্যায়িত করেছে। একই সঙ্গে এসব খুনিদের মুক্ত করে দেয়ায় পাকিস্তান ও অন্যান্য স্থানের সাংবাদিকরা বিপদে পড়বেন বলে মন্তব্য করা হয়েছে। সূত্র : ডেইলি টাইমস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে